করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কীভাবে আছড়ে পড়ল ভারতের বুকে, কেন মোকাবিলায় ব্যর্থ
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কীভাবে আছড়ে পড়ল ভারতের বুকে, কেন মোকাবিলায় ব্যর্থ
২০২০-র মার্চে করোনার প্রথম ঢেউ আছড়ে পড়েছিল। তারপর ২০২১-এর মার্চের গোড়ার দিকে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন ঘোষণা করেছিলেন, ভারতে কোভিড-১৯ মহামারীরক প্রকোপ কমে গিয়েছে। কিন্তু সেই ঘোষণার অদ্যাবধি পরেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ল দেশের বুকে। কার্যত অসহায় আত্মসমর্পণ হতে হল দেশকে।
দ্বিতীয় তরঙ্গ আছড়ে পড়েছে দেশে
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় বিশ্বের কাছে উদাহরণ নিজেকে তুলে ধরেছেন। এমনই প্রশংসায় মুখর হয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। জানুয়ারির পর থেকে ভারত তার বহুমুখী 'ভ্যাকসিন কূটনীতি'-র অংশ হিসাবে বিদেশে ডোজ পাঠানো শুরু করেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় তরঙ্গ আছড়ে পড়ার পর প্রকট হল দেশের মানুষই ভ্যাকসিন পাচ্ছে না।
মার্চে করোনার প্রকোপ কম, এপ্রিলে শীর্ষে
প্রথম করোনার ঢেউ আছড়ে পড়ার পর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে দেশে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছিল। দৈনিক সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছিল ৯৩ হাজার। তারপর সংক্রমণ ক্রমাগত হ্রাস পেয়ে আসছিল। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ভারতে প্রতিদিন গড়ে ১১ হাজার সংক্রমণ হচ্ছিল। সাত দিনব্যাপী এই রোগ থেকে প্রতিদিনের মৃত্যুর গড় হারও কমে গিয়েছিল ১০০-র নিচে।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে নির্বাচন
ফেব্রুয়ারির শেষে ভারতের নির্বাচন কমিশন পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ঘোষণা করে। যেখানে ১৮৬ মিলিয়ন মানুষ ৮৪৪টি আসনে ভোট দিয়ে সরকার গঠন করবেন। ২৭ মার্চ থেকে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে নির্বাচন শুরু হয়। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ আট দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অন্য চার রাজ্যের নির্বাচন শেষ হয়ে গেলেও বাংলায় এখনও তিন দফা নির্বাচন বাকি।
নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ভারত বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচ
এই নির্বাচনে কোনও সুরক্ষা প্রোটোকল এবং সামাজিক দূরত্ব ছাড়াই পুরোদমে প্রচার যেমন চালানো হচ্ছে, তেমনই করোনার প্রকোপ কমে গিয়েছে মনে করে মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ক্রিকেট বোর্ড গুজরাটের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ভারত এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে দুটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা দেখার ব্যবস্থা করে। ১ লক্ষ ৩০ হাজারের বেশি ক্রিকেট অনুরাগীর এই অনুমতি মেলে।
করোনা দ্বিতীয় তরঙ্গ বিপজ্জনক আকারে আছড়ে পড়েছে
এমন নানা কারণে এক মাসেরও কম সময়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ে ভারতে। করোনার সেকেন্ড স্ট্রেন লন্ডন থেকে ভারতে প্রবেশ করতে পারে বলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় তরঙ্গ বিপজ্জনক আকারে আছড়ে পড়েছে এবং এর ফলে শহরগুলি নতুনভাবে লকডাউনের মুখোমুখি হচ্ছে।
করোনার প্রতি অবহেলা, জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা
এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে দেশে প্রতিদিন গড়ে আড়াই লক্ষেরও বেশি সংক্রমণ হচ্ছে। রবিবার ভারতে ২ লক্ষ ৬১ হাজারেরও বেশি সংক্রমণ হয়। এই সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছে এবং ১৬০০-র বেশি মারা গিয়েছেন। উভয়ই একক দিনের রেকর্ড। ভারত এখন জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থার কবলে পড়েছে। করোনার প্রতি অবহেলাই এ জন্য দায়ী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে জরুরি বৈঠক