প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম করোনা পরীক্ষা হচ্ছে ভারতে, উদ্বেগ প্রকাশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম করোনা পরীক্ষা হচ্ছে ভারতে, উদ্বেগ প্রকাশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
করোনা আক্রমণে ইতিমধ্যে জেরবার বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশগুলি। আক্রান্তের নিরিখে তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা ভারতে লকডাউন পালন হলেও করোনা পরীক্ষা যে ঠিকভাবে হচ্ছে না, মঙ্গলবার তা স্পষ্টই জানালেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(হু)-এর এক উচ্চপদস্থ অধিকারিক। তাঁর মতে, যেসকল দেশ করোনাকে বাগে আনতে পেরেছে তারা নিজদেশে সঠিকভাবে করোনা পরীক্ষা সংঘটিত করতে সক্ষম হয়েছে বলে মত তার।
বিশ্বজুড়ে সম্ভাবনাময় ১৫০টি সম্ভাব্য করোনা ভ্যাকসিন
হু-এর উচ্চপদস্থ বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে, বিশ্বজুড়ে ২৮টি সম্ভাব্য করোনা প্রতিষেধক প্রাথমিক ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, যার মধ্যে ৫টি প্রতিষেধক পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপ পার করেছে এবং প্রায় ১৫০টি ভ্যাকসিন এখনও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অপেক্ষায়। ডঃ সৌম্যার মতে, "জার্মানি, তাইওয়ান, জাপান, এমনকি ব্রিটেনও করোনা পরীক্ষার নিরিখে ভারতের থেকে এগিয়ে। ভারতের জাতীয় স্বাস্থ্যদপ্তরের উচিত এখনই প্রতি লক্ষ মানুষ পিছু পরীক্ষার হার খতিয়ে দেখা।" তাঁর মতে, অসংলগ্ন পরীক্ষা ছাড়া করোনার বিরুদ্ধে লড়াই আর চোখ বেঁধে আগুনের সাথে লড়ার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
দরকার সঠিক সরকারি পর্যবেক্ষণ
ডঃ সৌম্যার মতে, যদি করোনা পরীক্ষার ৫%-এর আশেপাশে পজেটিভের সংখ্যা ঘোরাফেরা করে, তবে বুঝতে হবে ঠিক করে পরীক্ষা হচ্ছে না। তাঁর মতে, অক্সিজেন সরবরাহ, শয্যাসংখ্যা ও সঠিক পরিকাঠামোযুক্ত করোনা হাসপাতালের দিকে এইমুহূর্তে নজর দেওয়া উচিত সরকারের। ডঃ স্বামীনাথন আরও বলেছেন, "আমরা জানি করোনাকে ক্ষনিকের জন্য আটকে রাখার উপায় লকডাউন। এটা মাথায় রাখতে হবে যে করোনা সম্পূর্ণ নতুন এক প্রকারের ভাইরাস, তাই সরকারের মূল উদ্দেশ্য লকডাউনের মাধ্যমে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় সময় চেয়ে নেওয়া।" তিনি আরও জানান, লকডাউনে মানুষ যদি ধৈর্য্য ধরে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখেন, সেক্ষেত্রে তা আখেরে সমাজের উন্নতির পরিপূরক হবে।
সকলের কাছে প্রতিষেধক পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে হু
হু-এর এক আধিকারিকের জানান, হু-এর গাইডলাইন অনুযায়ী কোনো সম্ভাব্য প্রতিষেধকের সফলতার হার ৭০% হলেই সেটিকে গ্রাহ্য করা হবে। এদিকে ডঃ সৌম্যা জানিয়েছেন, বিশ্বের সকল দেশের মধ্যে ভবিষ্যতে করোনা প্রতিষেধকের সমবণ্টনের লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে কোভেক্স কর্মসূচি। ডঃ সৌম্যার মতে, ২০২১ শেষের আগের হু-এর গবেষকরা প্রায় ২০০কোটি মানুষের কাছে সঠিক করোনা ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন।
দরকার সকল দেশের সঠিক সহযোগিতা
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি ভিডিও বার্তায় ডঃ সৌম্যা জানিয়েছেন, করোনা প্রতিষেধক আবিষ্কারের পর ১৯৪টি দেশ যদি এগিয়ে এসে একযোগে ভ্যাকসিনের সমবণ্টনের উদ্যোগ না নেয়, তবে রাজনৈতিক জট বাড়বে। অন্যদিকে ইতিমধ্যেই ভারতীয় সংস্থা ভারত বায়োটেকের পরীক্ষামূলক ঔষধি 'কোভ্যাক্সিন'-এর ট্রায়ালের জন্য সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও)-এর কাছে আবেদন করেছেন সংস্থার পরিচালনা অধিকর্তা কৃষ্ণা ইল্লা।
করোনা ভাইরাস নয়, বিশ্বে ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে কিছু পুরনো মারণ রোগ