অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে চুশুলের ভারত-চিন সেনার বৈঠক, লাদাখ ইস্যুতে কী বলছে বিদেশমন্ত্রক
ভারত-চিনের মধ্যকার সেনা স্তরের বৈঠক শীঘ্রই অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। এই কথাটি মেনে নিয়েছে দুই দেশই। শুধু তাই নয়, সেনা স্তরের বৈঠক থেকেই সুরাহা বেরিয়ে আসবে বলে আশা ব্যক্ত করা হয়েছে দুই দেশের তরফে। এবং দুই দেশের সেনার আলোচনার বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে এবং পজিটিভ ভাবে দেখা উচিত। বিদেশমন্ত্রকের তরফে বুধবার একটি বিবৃতি জারি করে একথা বলা হয়।
সেনা পর্যায়ের বৈঠকের পর্যালোচনা
এদিন সেনা পর্যায়ের বৈঠকের আলোচনার কাটা ছেড়া করে ভারত এবং চিন। এরপর দুই পক্ষই সঠিক পথে অগ্রসর হতে সক্ষম হয়েছে বলে জানানো হচ্ছে। প্রসঙ্গত, বুধবার ভারত-চিন কূটনৈতিক স্তরের বৈঠকেই সেনা কমান্ডারদের আলোচনার থেকে উঠে আসা সারমর্মকে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে রেখে তার পর্যালোচনা হয়।
চুশুল-মল্ডোতে সেনার বৈঠক
লাদাখে গত মাসে কমান্ডার পর্যায়ের যে বৈঠকটি চুশুল-মল্ডোতে হয়েছিল, সেটি লেফটেন্যান্ট জেনেরাল পর্যায়ের ষষ্ঠ বৈঠক দুই দেশের মধ্যে। এর আগে জুন মাসের ৬, ২২ ও ৩০ তারিখ এবং জুলাইয়ের ১৪ ও অগস্টের ২ তারিখ এই পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। তবে সেখানে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে বারবার আলোচনা হলেও কোনও সুরাহা বেরিয়ে আসেনি। এরই মাঝএ বারবার সীমান্তে উত্তেজনার পারদ চড়েছে।
সীমান্তে অনুষ্ঠিত বৈঠকের গুরুত্ব
শেষ যে কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে ভারত ও চিন বসেছিল, তাতে উপস্থিত ছিলেন বিদেশ মন্ত্রকে চিন বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব নবীন শ্রীবাস্তব। এছাড়া ছিলেন সেনার ১৪ নম্বর কর্পসের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনেরাল হরিন্দর সিং এবং লেফটেন্যান্ট জেনেরাল পি জি কে মেনন ছিলেন সেই বৈঠকে। দুই উচ্চপদস্থ সেনা আধিকারিককে বৈঠকে বসিয়ে ভারত বুঝিয়ে দেয় যে তারা এই বৈঠকগুলিকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে। তাছাড়া প্রথমবার সেনা পর্যায়ের কোনও বৈঠকে দিল্লির কোনও আমলা উপস্থিত ছিলেন পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য। এটাই ছিল ওই বৈঠকের বিশেষত্ব।
পূর্ণাঙ্গ সুরাহা বেরিয়ে আসেনি
এর আগে মস্কোতে এশিয়ার দুই বৃহৎ শক্তির বিদেশ মন্ত্রীদের বৈঠকে হয়েছিল। মস্কোর সেই বৈঠকে দুই দেশের নেওয়া সংকল্পের ভিত্তিতে ৫টি পয়েন্টের যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল গত ১০ সেপ্টেম্বর। তার ভিত্তিতে গতমাসে সেনার বৈঠকে আলোচনাযর ঐকমত্য তৈরি হয়। এটাই ওই বৈঠকের গুরুত্ব। তবে দুর্ভাগ্যবসত সেই বৈঠকে পূর্ণাঙ্গ সুরাহা বেরিয়ে না আসায় ফের বৈঠকে বসার কথা বলা হয়েছিল, যার দিনক্ষণ নির্ধারিত হবে শীঘ্রই।
সেনা পর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমেই শান্তি ফিরবে
হিমালয় অঞ্চলে সেনা জওয়ানদের পাঠানো, সেনা সরঞ্জাম ও লজিস্টিক পাঠানোর মতো অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মধ্যেই ভারত ও চিনের মধ্যে সমঝোতা সংক্রান্ত আলোচনা চলছে। এই মুহূর্তে এলএসি বরাবর এলাকাগুলিতে উভয় পক্ষই বিপুল সেনা মোতায়েন করে রেখেছে। অভূতপূর্ব গতিতে পরিকাঠামো ও লজিস্টিক সংক্রান্ত উন্নয়নের কাজ করা হচ্ছে। তবে তাও বিদেশমন্ত্রকের আশা যে দুই দেশের সেনাই একে অপরের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই শান্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে।