ফের পেঁয়াজ সমস্যায় বাংলাদেশ, রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ভারতের
আলু–টম্যাটোর দাম আকাশচুম্বী হওয়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন যে হয়ত পেঁয়াজের দামও বাড়তে পারে। কিন্তু বর্তমানে পেঁয়াজের মূল্য অত্যাধিক ও কম দামের মাঝে স্থিতিশীল হয়ে রয়েছে। দিল্লির বাজারে এক কেজি পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা। অগাস্টে গোটা ভারতে পেঁয়াজের পাইকারি ও খুচরো মূল্য গত বছরের তুলনায় যথাক্রমে ৩৪.৫ শতাংশ ও ৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন ফের সরকার তাড়াহুড়ো করে পেঁয়াজের রপ্তানি নিষিদ্ধ করল? যেখানে প্রয়োজনীয় পণ্য আইন সংশোধন করে পেঁযাজকে নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করার নীতিতে কৃষকরা আরও ভাল দাম আদায় করতে পারতেন।

পেঁয়াজর বৃহত্তর বাজার ভারত
দেশীয় পেঁয়াজের দাম যেখানে স্থিতিশীল, সেখানে পেঁয়াজের বহিরাগত চাহিদা বেড়ে যাওয়ার ফলেই রপ্তানির ওপর এই নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। হেঁশেলের মূল উপাদান পেঁয়াজের বৃহত্তর বাজার ভারত থেকে এপ্রিল-জুন মাসের সময়ে ১৪৭.৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ১.৯ লক্ষ মেট্রিক টন পেঁয়াজ রপ্তানি হয় বাংলাদেশে। সামগ্রিকভাবে পেঁয়াজ রপ্তানি একই সময়ে ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৬.৮ লক্ষে দাঁড়িয়েছিল।

বাংলাদেশে রপ্তানি বন্ধ
দেশীয় চাহিদা পূরণের জন্য বাংলাদের অত্যন্ত নির্ভরশীল ভারতের পেঁয়াজের ওপর। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর যখন ভারত পেঁয়াজের রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে, সেই সময় বাংলাদেশে পেঁয়াজের মূল্য বেড়ে যায় এবং এই ইস্যুটি দুই প্রতিবেশি দেশের মধ্যে বিরোধের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আগের সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবং এ বছরও পেঁয়াজের রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে দেয় এবং হিমঘরে সংরক্ষিত পেঁয়াজ দিয়েই আপাতত কাজ চালানো হচ্ছে।

শেখ হাসিনার কটাক্ষ
পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ হওয়ার পর গত বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে এসে বলেছিলেন, ‘পেঁয়াজ নিয়ে একটু সমস্যায় রয়েছি আমরা। আমি জানি না কেন আপনি পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করলেন। যদি একটু নোটিস দিতেন তবে আমরা অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ নিতে পারতাম। হঠাৎ করে পেঁয়াজ বন্ধ করে দেওয়ায় আমাদর সমস্যা দেখা দিয়েছে।' হাসিনা মজার ছলেই সেই সময় জানিয়েছিলেন যে তিনি তাঁর রান্নাঘরে রান্নার সময় পেঁয়াজ ব্যবহার করছেন না। প্রতি বছর পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা যেন বার্ষিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের আসল কারণ অজানা
গত বছর মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় নির্বাচনের আগে পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল, তা হ্রাস করার জন্য সরকার দেশব্যাপী পেঁয়াজ মজুত করে রাখার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ বছর মধ্যপ্রদেশ ও বিহারে নির্বাচন রয়েছে, আর সে কারণেই হয়ত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা বড় ভূমিকা পালন করবে। কিছু রাজ্যে বন্যার কারণে পেঁয়াজ সরবরাহ ঠিকভাবে না হওয়ার জন্য দিল্লিতে পেঁয়াজের মূল্য ছুঁয়েছে প্রতি কেজি ৮০ টাকা। গত বছরের ডিসেম্বরে দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে পেঁয়াজের দাম হয়েছিল প্রতি কেজি ১৬০ টাকা। তবে বাংলাদেশ সহ সব দেশেই ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করা হয়েছে। পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের সঠিক কারণ সরকারের পক্ষ থেকে না বলা হলেও, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ে যে টানাপোড়েল চলছে, হয়ত সেটাই এই সিদ্ধান্তের প্রধান কারণ হতে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।

রাজ-পুত্র ইউভান এবার নবাব-পুত্র তৈমুরকে ছাপিয়ে যেতে চলেছে! তৈরি হল ফ্যানক্লাব