১৬ ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠক ভারত–চিনের, দেপসাং–গোগরা থেকে সেনা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত
১৬ ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠক ভারত–চিনের
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সমস্যা মেটাতে এবং সেনা প্রত্যাহার নিয়ে শনিবার দশ দফার বৈঠক সারল ভারত ও চিন উভয় পক্ষ। দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার এই বৈঠক রবিবার ভোর ২টোর সময় শেষ হয়। তবে বৈঠক যে ইতিবাচক হয়েছে, সেই ইঙ্গিত মিলেছে সেনাদের পক্ষ থেকে।
শনিবারের একটানা ১৬ ঘণ্টার এই বৈঠক আয়োজন করা হয়েছিল চুশুল সেক্টরের নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে মলডোতে। এই বৈঠকের আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল দেপসাং ভ্যালি, গোগরা হাইটস, হট স্প্রিং সহ একাধিক জায়গা থেকে সেনা প্রত্যাহার করা নিয়ে। গত বছরই প্যাংগং হ্রদ নিয়ে ভারত–চিনের মধ্যে বহুদিন যাবৎ বিবাদ চলছে। যার প্রভাব দু’দেশের ওপরই পড়েছে। তবে দুই দেশের মধ্যে কয়েক দফা আলোচনা–বৈঠক সারার পর সম্প্রতি সেনা প্রত্যাহার করা শুরু করে দিয়েছে উভয় দেশই।
ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, প্যাংগংয়ে শেষ পর্যায়ের সেনা প্রত্যাহার প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে পিপল’স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) তাদের বিপুল সংখ্যাক সেনা, ট্যাঙ্ক সহ সবকিছু সরিয়ে নিয়েছে। প্যাংগং হ্রদের উত্তর ও দক্ষিণ তীরবর্তী অঞ্চলের সমস্ত অস্ত্র ও সেনাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে হ্রদ লাগোয়া আট নম্বর ফিঙ্গার পয়েন্টের কাছে। তবে এই সবকিছুর ওপর কড়া নজর রয়েছে ভারতীয় সেনার। প্যাংগংয়ের পর অন্যান্য জায়গা থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে শনিবার দুই দেশের বৈঠকে ইতিবাচক ইঙ্গিত মিলেছে।
চিনের সঙ্গে সাম্প্রতিকতম আলোচনায় ভারত জোর দিয়ে জানিয়েছে যে হট স্প্রিং, গোগরা এবং দেপসাং ভ্যালি থেকেও সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক। গতবছরই লাদাখে দীর্ঘ ৯ মাস ধরে ভারত–চিনের মধ্যে অশান্তি অব্যাহত ছিল। শনিবার ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে এই বৈঠকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল পিজিকে মেনন, যিনি লে–এর ১৪ কর্পসের কম্যান্ডার। চিনের পক্ষ থেকে বৈঠকে ছিলেন পিএলএ–এর মেজর জেনারেল লিউ লিন।
১১ ফেব্রুয়ারি সংসদে দাঁড়িয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছিলেন, 'পূর্ব লাদাখের প্যাংগং লেকের উত্তর ও দক্ষিণ তীর থেকে সেনা সরানো নিয়ে চিনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির দিকে এগোচ্ছে ভারত৷ এই চুক্তির পরেই সুসংবদ্ধ ও স্বীকৃত ভাবে ভারত-চিন পরবর্তী সেনা প্রত্যাহারের পথে যাবে ৷ আমি এই কক্ষের সকলকে এই ব্যাপারে আশ্বস্ত করতে চাই যে, এই আলোচনায় ভারত কিছু হারায়নি ৷ ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে উত্তর এবং দক্ষিণ তীরবর্তী অঞ্চলে উভয় পক্ষের দ্বারা নির্মিত যে কোনও কাঠামোই সরানো হবে এবং ভূমিগুলি পুনরুদ্ধার করা হবে ৷ বিষয়টি পারস্পরিক ভাবে ঘটবে।’