ব্রিটিশ ভিতকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন এই বাঙালি বিপ্লবীরা! স্বাধীনতা দিবসে উল্টে দেখা যাক ইতিহাসের পাতা
ইতিহাসে বাঙালিরা বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিয়েছেন। তবে স্বাধীনতা সংগ্রামের ক্ষেত্রে মনে হয় সকল জাতিকে ছাপিয়ে গিয়েছে বাঙালিদের বলিদান ও অবদান। সুভাষ চন্দ্র বোস থেকে মাস্টারদা সূর্য সেন, ব্রিটিশ ভিতকে নাড়িয়ে দিয়েছেন বাঙালিরা। স্বাধীনতা দিবসে সেরকমই বাঙালী বীরদের স্মরণ করছে ওয়ান ইন্ডিয়া।
ক্ষুদিরাম বসু
দেশকে স্বাধীন করতে তখন হাজার হাজার তরুণের দল ঝাঁপিয়ে পড়েছে ব্রিটিশদের উপর। ঠিক তখনই বাংলা দেখেছে এক ১৮ বছরের তরতাজা প্রাণের নির্ভিক রূপ। বাংলা দেখেছে ক্ষুদিরাম বসুকে। গোটা ভারত দেখেছে স্বাধীনতার লড়াইয়ে এক যুবকের আত্মবলিদান। ১৯০৮ সাল, ৩০ এপ্রিলের রাত। রাত সাড়ে আটটার সময় সেদিন বিহারের মজফফরপুরের ইওরোপিয়ান ক্লাবে জমে উঠেছিল ব্রিটিশ পুলিশ অফিসারদের উল্লাসের আসর। আর সেখানে ক্ষুদিরাম বোমা হামলা চালান। ব্রিটিশদের কাছে পৌঁছয় স্পষ্ট বার্তা। আর ফলস্পরূপ ১১ অগাস্ট ১৯০৮ সাল, ব্রিটিশ শাসকের ফাঁসির আদেশে দেশের জন্য আত্মবলিদান করেন ক্ষুদিরাম বসু।
বিনয়-বাদল-দীনেশ
১৯৩০ সালের ৯ই ডিসেম্বর। রাইটার্স বিল্ডিং দেখে বারান্দা ব্যাটেল। বারোটায় রাইটার্স বিল্ডিং পৌছলেন তিন বিপ্লবী। তিনজনেই ইউরোপীয় পোষাক পরা সাহেব। পিওনের হাতে ধরিয়ে দিলেন নতুন ভিজিটিং কার্ড "মিঃ বি,এন, দে" অনুমতি মিলল ভেতরে যাওয়ার। সাহেব সিম্পসন তখন টেবিলে ঝুকে পড়ে কাগজ দেখছেন। তিনজন ভিতরে ঢুকতেই মুখ তুলে চাইলেন সাহেব। "ফায়ার" চিৎকার করে উঠলেন বিনয়। গুলি চালালেন তাঁরা। এরপর দীর্ঘক্ষণ লড়াই চলে রাইটার্স বিল্ডিংয়ের বারান্দায়। নিজেদের রিভলভার দিয়ে নিজেদেরকে গুলি করে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন বিনয় এবং দীনেশ। ১৪ ডিসেম্বর হাসপাতালে মারা যান বিনয়। দীনেশ বেঁচে ওঠেন। তাঁকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ফাঁসির নির্দেশ দেয় ইংরেজ সরকার। দীনেশের ফাঁসি হয়ে ৭ জুলাই, ১৯৩১ সালে, মাত্র ২০ বছর বয়সে।
মাতঙ্গিনী হাজরা
১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যে সকল নারী বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে বাংলার বীরাঙ্গনা মাতঙ্গিনী হাজরা অন্যতম। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলন ও ১৯৩০ সালের আইন অমান্য আন্দোলনেও অংশ নিয়েছইলেন তিনি। লবণ আইন ভঙ্গ করে ৬ মাস কারাদণ্ড ভোগ করেছিলেন তিনি।
বীণা দাস
বীণা দাস ১৯১১ সালে ২৪ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩২ সালে বীণা দাস তার জীবনের সবচাইতে দু:সাহসিক কাজ করার জন্য মনস্থির করে ফেলেন। তিনি সিদ্ধান্ত নেন বাংলার ব্রিটিশ গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে গুলি করে হত্যা করার। ১৯৩২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েল সমাবর্তন অনুষ্ঠান। প্রধান অতিথি বাংলার গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসন। সেখানে স্ট্যানলিকে লক্ষ্য করে গুলি চালান বীণা। তবে বেঁচে যান স্ট্যানলি। পরে বীণা দাসের ৯ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত।
মাস্টারদা সূর্যসেন
তরুণ বাঙালী বিপ্লবীদের কথা স্মরণ করলে প্রথমেই যাদের নাম আসে তিনিই হলেন মাস্টারদা সূর্যসেন। বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রামে ব্রিটিশাসনামলে একটি বিপ্লবী দল গড়ে তুলেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে এই বিপ্লই দলই চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লু্ণ্ঠনের মাধ্যমে গোটা দেশে একটা নতুন জাগরণ তোলে। যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মাস্টারদা।
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু
ব্রিটিশ সাম্রাজ্য পদানত করে রেখেছিল ভারতকে। নিজভূমে পরবাসী হয়েছিল ভারতবাসীরা। নিজেদের যেটা ইচ্ছা তা করার অধিকার হারিয়েছিল তাঁরা। ব্রিটিশ শাসনে জীবনযাপনই হয়ে উঠেছিল দুর্বিসহ। এই অবস্থায় দেশবাসীর মধ্যে স্বাধীনতা অর্জনের ইচ্ছা বাড়িয়ে তুলেছিলেন বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী। তার মধ্যে নেতাজি অন্যতম। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন অল ইন্ডিয়া ফরোয়ার্ড ব্লক। এবং দেশের কিছু অংশে স্বাধীনতা এনে প্রভিশানাল সরকার তৈরির মতো দৃপ্ত পদক্ষেপও দেখিয়েছিলেন তিনি। তিনি সকলের প্রণম্য নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু।
নেপালে চিনা দখলদারির ষড়যন্ত্র ফাঁস করে মৃত্যু সাংবাদিকের! নদীর ধারে মিলল দেহ
{quiz_283}