নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিরোধ সর্বত্র, উপায় না দেখে এখন নয়া আইন নিয়ে পরামর্শ চাইছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
দেশ জুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের প্রতিবাদে ভাটা পড়ার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এরই মাঝে দেশব্যাপী এই নয়া বিধি প্রয়োগের ব্যাপারে আবারও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে দেখা গেল কেন্দ্র সরকারকে। শুক্রবার সরকার জানায় এই আইনের সমস্ত নিয়মগুলিই বহাল থাকছে। পাশাপাশি এই আইন বলবৎ করার আগে এর গঠন কাঠামোকে আরও জোরদার করার জন্য সাধারণ মানুষের কাছে পরামর্শ চাইলো বিজেপি শাসিত কেন্দ্র সরকার।

নাগরিকত্ব সংকট প্রসঙ্গে টুইট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের
এই প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, "আমরা বিভিন্ন উপায়ে নাগরিকত্ব আইন সম্পর্কে মানুষের মন থেকে সন্দেহ দূর করার চেষ্টা করছি। সিএএ বিধি সম্পর্কে যে কোনও ব্যক্তির কোনও মতামত বা পরামর্শ থাকলে তাও সাদরে গ্রহণ করবে সরকার।" এরপরই বিরোধী শিবিরের একাংশের পাল্টা দাবি চাপের মুখেই পড়েই এখন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সুর নরম করছে বিজেপি।
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র এই প্রসঙ্গে একটি টুইট বার্তায় বলেন, "ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য কোনও মানুষেরই ১৯৭১ পূর্ববর্তী সময়ের তার বা তার পূর্বপুরুষদের পরিচয় পত্র, জন্ম সনদ বা আনুষঙ্গিক কোনও নথি উপস্থাপনের প্রয়োজন নেই।"

২০০৪-এর নাগরিকত্ব সংশোধন আইন কি বলছে জেনে নিন
অন্যদিকে নাগরিকত্ব আইন ২০০৪-এর সংশোধনী অনুসারে, ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে যারা ভারতে জন্মগ্রহণ করেছেন বা যাদের বাবা-মা ওই বছরের আগে এই দেশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তারা প্রত্যেকেই ভারতীয় নাগরিক হিসাবে বিবেচিত হবেন।
সিএএ এবং এনআরসির সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দিতে গিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই কর্মকর্তা বলেন, "১৯৮৭ সালের আগে ভারতে জন্ম নেওয়া বা যাদের বাবা-মা ১৯৮৭ সালের আগে ভারতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তারা সকলেই ভারতের নাগরিক। এই মুহূর্তে তাদের সিএএ বা সম্ভাব্য দেশব্যাপী এনআরসি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও দরকার নেই।"

অসম এনআরসি সঙ্গে দেশব্যাপী এনআরসির পার্থক্য
এই প্রসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন যে অসম এনআরসি আলাদা, কারণ অসম সরকার ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের পূর্ববর্তী সময়সীমা ধার্য করে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "অসমের নাগরিক পঞ্জীর তৈরির প্রক্রিয়া ও ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য উল্লেখিত সময়সীমা আলাদা হওয়ায় আমরা মানুষকে বারবার অসম এনআরসির সাথে সিএএর তুলনা না করার জন্য আবেদন করছি।" যদিও একইসাথে তিনি আরও মনে করিয়ে দেন দেশব্যাপী জাতীয় নাগরিকপঞ্জী তৈরির প্রক্রিয়া নয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের আওতাতেই হবে।

অসম এনআরসি বাতিলের দাবি হেমন্ত বিশ্ব শর্মার
এদিকে কয়েক দিন আগেই অসমের হেমন্ত বিশ্ব শর্মার মতো বিজেপি নেতারা সর্বভারতীয় এনআরসি-র জন্য একটি প্রাথমিক কাট-অফ তারিখ বা একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে তাকে বলতে দেখা যায়, "আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অসম এনআরসি বাতিল করার জন্য অনুরোধ করেছি। আমাদের মনে হয় অসমকেও সর্বভারতীয় এনআরসির অংশ করা উচিত। কাট অফ ১৯৭১ বা ১৯৬৬ যে কোনও সময় হতে পারে। কিন্তু গোটা দেশের জন্য যেনও সেটা একই হয়।"