বিহারে একাধিক নদী বইছে বিপদসীমার ওপর দিয়ে, ভারী বৃষ্টিতে জারি বন্যা সতর্কতা
বিহারে একাধিক নদী বইছে বিপদসীমার ওপর দিয়ে, ভারী বৃষ্টিতে জারি বন্যা সতর্কতা
বিহারের বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশঃ খারাপের দিকে এগোচ্ছে। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকার। সোমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ ও জেলা শাসকদের বন্যা পরিস্থিতি সম্ভাবনার সতর্কতা জারি করার নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্যে নেপাল সীমান্ত ও গন্ডক নদী অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রাজ্যে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।
বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত
রাজ্যের বিভিন্ন জেলা সহ পশ্চিম চম্পারন, পূর্ব চম্পারন, গোপালগঞ্জ, মুজাফ্ফরপুর, বৈশালি ও সারনে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে, যার জন্য বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সরকারিভাবে জানা গিয়েছে যে নেপাল ও গন্ডক নদী এলাকায় ভারী বৃষ্টির কারণে গন্ডক নদীর জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ ও জেলা শাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন যে গন্ডক নদী সংলগ্ন নীচু এলাকার মানুষদের সরিয়ে নিয়ে এসে তাঁদের উঁচু ও নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হোক।
উদ্ধার ও জাতীয় বিপর্যয় বিভাগ
নীতীশ কুমার সব সরকারি আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন যে উদ্ধার কাজ ও ত্রাণ রিচালনার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর অধীনস্ত কর্মকর্তাদের সহায়তার জন্য বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি (এসওপি) অনুযায়ী তাদের জন্য সমস্ত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। তিনি স্পষ্ট করে জানান যে কোনও কনটেইনমেন্ট জোন থেকে সরিয়ে নেওয়া লোকদের জন্য আলাদা ত্রাণ কেন্দ্র স্থাপন করে রাখা হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের থেকে আলাদা করে রাখা হবে কনটেইনমেন্ট জোনের বাসিন্দাদের। তিনি আধিকারিকদের নিশ্চিত করতে বলেন যে যেন ত্রাণ শিবিরে সকলে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখে ও মাস্ক পরে থাকে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, যেসব অঞ্চল থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে সেখানকার গবাদি পশুদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যবস্থা করা উচিত।
প্রস্তুত রয়েছে উদ্ধারকারী দল
জাতীয় ও রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলার টিম, যাদের বিভিন্ন রাজ্যে মোতায়েন করা হয়েছে, তারা এখন সজাগ রয়েছে। যাতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত মিললেই তাঁরা যে কোনও পরিস্থিতিতে গিয়ে উদ্ধার কাজ করতে পারবে। বাঁধ সুরক্ষার জন্য জল সম্পদ বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদেরও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। যদিও একটি বুলেটিনে জল সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয় যে বাঁধগুলি সবই সুরক্ষিত রয়েছে। যদিও এই বুলেটিনে কোনও হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়নি।
বিহারের বেশ কিছু নদী বইছে বিপদসীমার ওপরে
বাগমতি, কমলা, মহানন্দা নদী বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এর মধ্যে সীতামারহি জেলার ঢেঙ্গা, সোনাখান, দুব্বধর, কাটাউঞ্জায়, মুজফ্ফরপুরের বেইনবাদে ও দ্বারভাঙ্গা জেলার হায়াঘাটে বাগমতি নদী বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। মধুবনীর জয়নগর ও ঝাঁঝরপুর রেল ব্রিজ এই দুই এলাকায় কমলাবালান নদী বিপদসীমার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে সমস্তিপুর জেলার রোসেরা রেল ব্রিজের ওপর দিয়ে বুড়ি গন্ডক নদী বিপদসীমার ওপরে রয়েছে। কৃষ্ণগঞ্জের তায়াবপুর ও পূর্ণিয়ার ধানগড়াঘাটে মহানন্দা নদী বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। দ্বারভাঙ্গা জেলার কামতাউল ও একমিঘাট অঞ্চলে ক্ষিরোই নদী বইছে বিপদ সীমার ওপর দিয়ে।
গঙ্গার জল বিপদসীমার নীচে
জল সম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, পাটনার গান্ধী ঘাট ও দিঘা বাদে গঙ্গার জল বিপদসীমার নীচে রয়েছে। ভারী বৃষ্টির কারণে বিহারের রাজঝানী পাটনায় বিভিন্ন নীচু এলাকা ও রাস্তাগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বেগুসরাই, বধ, কাটিহার ও পূর্ণিয়াতেও একই চিত্র দেখা গিয়েছে।
২১ জুলাই পালনে করোনা সংক্রমণ বাড়াবেন না দিদিমণি! ভার্চুয়াল সভা বাতিলের পরামর্শ অধীরের