বিহারে মহাজোটের মধ্যে রসায়ন তৈরী হয়নি, এগিয়ে থাকবে বিজেপি জোটই; মত বিশেষজ্ঞের
চলতি লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিজেপিকে হারাতে উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে বিরোধীরা ভাল ফল করতে মরিয়া।
চলতি লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিজেপিকে হারাতে উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে বিরোধীরা ভাল ফল করতে মরিয়া। এই দু'টি রাজ্য থেকে মোট ১২০জন সাংসদ পার্লামেন্টে যান এবং উত্তর ভারতের এই দুই প্রদেশে দুই যুযুধান পক্ষই ভালো ফলের আশায় রয়েছে। বিশেষ করে, গত সাধারণ নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ার পরে বিরোধীরা জোটের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে। যদিও এই জোট রাজনীতিতে ফাঁকফোকর নেই বলা যাবে না, কিন্তু তবুও বিরোধীদের আশা বিজেপি-বিরোধী ভোটগুলি একত্রে এসে তাদের জেতাবে।
উত্তরপ্রদেশে দুই প্রধান আঞ্চলিক দল সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি রাষ্ট্রীয় লোক দলকে সঙ্গে করে মঞ্চ বেঁধেছে। কংগ্রেসকে অবশ্য তারা নেয়নি। অপরদিকে বিহারে বিজেপি, জনতা দল (ইউনাইটেড) ও লোক জনশক্তি পার্টির জোটের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে রাষ্ট্রীয় জনতা দল, কংগ্রেস, রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টি, হিন্দুস্তানি আওয়ামী মোর্চা এবং বিকাশশীল ইনসান পার্টি।
'জোটের সঙ্গীদের মধ্যে রসায়ন তৈরী হয়নি সেভাবে'
অঙ্কের নিরিখে দেখলে মহাজোট বিজেপির এনডিএ জোটের চেয়ে এগিয়ে থাকবে বিহারে কিন্তু ঘটনা হচ্ছে, মোর্চা বা ইনসান পার্টির মতো দলকে মহাজোট বেশি টিকিট দিয়েছে যাতে বিহারের পিছড়ে বর্গের সমর্থন তারা পায় নির্বাচনে কিন্তু বিহারের রাজনীতির অন্যতম বড় বিশেষজ্ঞ শৈবাল গুপ্তর মতে, মহাজোটের এই প্রচেষ্টা এমন অনেক লোককে টিকিট পাইয়ে দিয়েছে যাদের সামাজিক পরিচিত খুব ইতিবাচক নয় আর এর ফলে জোটসঙ্গীদের মধ্যে রসায়ন সেইভাবে তৈরী হয়নি। শেষ ফলাফলে তাই এই ব্যাপারটি প্রভাবিত করতে পারে মহাজোটের সম্ভাবনাকে বলে তাঁর অভিমত।
উত্তরপ্রদেশে জোট গড়তে যে সময়টা দেওয়া হয়েছে, বিহারে দেওয়া হয়নি
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে শৈবালবাবু জানান যে উত্তরপ্রদেশে যে রাজনৈতিক পরীক্ষানিরীক্ষা অখিলেশ যাদব এবং মায়াবতীর অনেকদিন ধরে করছিলেন, বিহারে সেই সময়টা দেওয়া হয়নি আর তাই মহাজোটের মঞ্চটি তৈরী হয়েছে তাড়াহুড়ো করে।
পাশাপাশি, মহাজোটে বামপন্থী দলগুলিকে সামিল না করাটাও এনডিএ-কে সুবিধা করে দেবে বলে তাঁর মনে হচ্ছে।
বিহারে এনডিএ জোটসঙ্গীরা বরাবরই নির্ঝঞ্ঝাটে কাজ করেছে
এনডিএ-র সম্পর্কে শৈবালবাবু বলেন যে বিহারে বিজেপির জোটটি যথেষ্ট মজবুত এবং যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী নীতীশকুমার নিজেকে বিজেপির ধ্বজাধারী হিসেবে দেখাননি; গেরুয়া বাহিনীর বন্দেমাতরম স্লোগান চলাকালীন চুপচাপ বসে থেকেছেন; তাই তাঁর নিজস্ব ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বিহারে এর আগেও বিজেপি এবং জেডিইউ একসঙ্গে ক্ষমতায় থেকেছে দীর্ঘদিন এবং তাদের মধ্যে কোনও সমস্যা হয়নি ২০১৩ সাল পর্যন্ত যখন নীতিশ মোদী বিরোধিতা করে বেরিয়ে যান জোট থেকে, তাই বর্ষীয়ান সমাজবিজ্ঞানী শৈবাল গুপ্ত মনে করছেন তাদের ঘর এই লড়াইতে অনেক গোছানো।
শৈবালবাবু তাঁর সাক্ষাৎকারে এও জানান যে লালুপ্রসাদের অনুপস্থিতি মহাজোটের পক্ষে এক বড় ধাক্কা। লালুর জনসংযোগের ধরনটিকে এখনও নাগালে আনতে পারেননি তাঁর উত্তরসূরিরা আর তাই সব মিলিয়ে বিহারে এবারে এগিয়ে এনডিএ-ই বলে ধারণা সবল গুপ্তর।