১ বছরে ৯ রাজ্যে ২৭ মৃত্যু, আলোর নিচে অন্ধকারের ছায়াটা ক্রমেই বড় হচ্ছে
ভারতে ৯ টি রাজ্যে গত ১ বছরে ২৭ টি গণহিংসায় মৃত্যুর ঘটে।
গত ৪ বছরের সাফল্য নিয়ে রঙিন পুস্তিকা বের করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। নিশ্চিতভাবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে আশাতীত সাফল্য পেয়েছে মোদী সরকার। কিন্তু সেই সাফল্যার আলোর নিচে অন্ধকারের ছায়াটাও নেহাত কম বড় নয়। এই সময়ে দেশের সমাজে তৈরি হয়েছে সন্দেহের বাতাবরণ। যে সন্দেহে ছাড়খাড় হয়ে যাচ্ছে দেশের সমাজ। আইনের তোয়াক্কা না করে সন্দেহের বশে পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে নিরাপরাধ মানুষদের। ৪ বছর অবধি যেতে হবে না, গত একবছরের হিসেবটাই গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো। গত ১ বছরে ৯টি রাজ্যে গণ-হিংসায় নিহত হয়েছেন ২৭ জন!
এই ৯ রাজ্যের মধ্যে রয়েছে কর্ণাটক বা তামিলনাড়ুর মতো দক্ষিণের রাজ্য, ছত্তিশগড়, ঝাড়খন্ড বা পশ্চিমবঙ্গের মতো পূর্বের রাজ্য, মহারাষ্ট্রের মতো পশ্চিমের রাজ্য আবার অসম ত্রিপুরার মতো উত্তর-পূর্বের রাজ্যও। অর্থাৎ এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে এই অসহিষ্ণুতার বীজ।
বেশিরভাগ ঘটনার ক্ষেত্রেই একটি ভিডিও পাওয়া যাচ্ছে, যাকে ভাইরাল করা হচ্ছে। সিসিটিভির সেই ফুটেজটি 'রোশনী' নামে পাকিস্তানের একটি এনজিও-র বিশেষ প্রচারাভিযানের অংশ। সেই অংশটিকে ব্যবহার করেই শিশু অপহরণকারীর গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সঙ্গে আসছে একটি লিখিত বার্তা। যাতে বলা হচ্ছে এই ভিডিও এই এলাকার পাশের কোনও শহরের ঘটনা। শিশু অপহরণকারীদের একটি দল এলাকায় ঘোরাফেরা করছে। আর তার থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়াচ্ছে আতঙ্ক।
শুধু এই ভিডিওই নয়। সারা দেশেই একের পর এক এই ধরণের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সব ক্ষেত্রেই বয়ান এক, এলাকায় ঢুকে পড়েছে একদল ছেলেধরা। পাশের গ্রাম বা শহরে তারা কয়েকজন শিশুকে তুলে নিয়ে গেছে পাচার করবে বলে। তাই সাবধানে থাকুন। কোথাও কোথাও পুলিশের নামও ব্যবহার করা হচ্ছে বার্তাগুলিকে বৈধতা দিতে। বয়ানটা একই রেখে পাল্টে দেওয়া হচ্ছে এলাকা বা শহরের নাম।
সাধারণত সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে এই গুজব ছড়ানো হচ্ছে। যে কারণে সরকারের পক্ষ থেকে হোয়াট্সঅ্যাপকে বলা হয়েছে ব্যবস্থা নিতে। গুজব ছড়ানোর কালপ্রিটদেরও পাকড়াও করার চেষ্টা চলছে সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু এখনও সরকারের উপর মহল থেকে কিন্তু কোনও বার্তা দেওয়া হয়নি। প্রত্যেক রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী 'মন কি বাত' সম্প্রচার করেন। সেখানেও এখনো তিনি এই বাড়তে থাকা সমস্যা নিয়ে কোনওরকম উদ্বেগ প্রকাশ করেননি। সমাজতত্ত্ববিদরা কিন্তু বলছেন এই অসহিষ্ণুতার, এই সন্দেহের পরিবেশ থাকলে, মোদীর স্বপ্নের নতুন ভারত গঠনও সম্ভব হবে না।