জিএসটি বাবদ বকেয়া টাকা সুদূর ভবিষ্যতে দিতে পারবে না কেন্দ্র! এর জেরে কী প্রভাব পড়বে রাজ্যগুলির উপর?
রাজ্যগুলিকে জিএসটির বকেয়া টাকা দেওয়ার বিষয়ে শেষ পর্যন্ত মুখ খুলল কেন্দ্র। কেন্দ্রের বক্তব্য, কর আদায় না হওয়ায় রাজ্যগুলিকে জিএসটির ভাগ দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই কেন্দ্রীয় সরকার। সংসদের অর্থ বিষয়ক কমিটির বৈঠকে এমনই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থসচিব অজয়ভূষণ পাণ্ডে।
চিন্তায় পড়েছে রাজ্যগুলি
অর্থসচিবের এই মন্তব্য়ে স্বাভাবিকভাবেই চিন্তায় পড়বে রাজ্য়গুলি। এদিকে দীর্ঘ কয়েকমাসের টানা লকডাউনে থমকে যায় গোটা দেশ। বন্ধ প্রায় সমস্ত শিল্প তালুকই। স্তব্ধ বেশিরভাগ উৎপাদন ক্ষেত্রগুলিই। আর যার জেরে থমকেছে অর্থনীতির চাকাও। আর এর জেরে দেশের পণ্য ও পরিষেবা কর জিএসটি সংগ্রহেও ভাটা দেখা দিয়েছে।
করোনা আবহে বিপুল ক্ষতির মুখে রাজ্যগুলি
কেরলের গ্রস স্টেট ডমেস্টি প্রোডাক্ট পূর্বাভাসের তুলনায় ২০ শতাংশ কম হবে। মার্চ মাসের জিএসটি আয়ও যদি রাজ্যগুলিকে দেওয়া হত তাহলে তার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারত। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি সব রাজ্যেরই অবস্থা খারাপ। তাছাড়া সব এমপি ল্যাডের টাকাও কনসোলি়ডেটেড ফান্ডে পাঠানো হচ্ছে। সাদাৎণত একটি রাজ্যের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ আয় এই জিএসটি থেকেই হয়। তাই এই টাকা আটকে পড়ায় বেকায়দায় পড়েছে রাজ্যগুলি।
টাকা ধার নিতেও অনে বিধি মানতে হচ্ছে
বিজেপি শাসিত কর্নাটকের মতো রাজ্যের আয়ও জিএসটি আটকে পড়ায় ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এদিকে এই পরিস্থিতিতে রাজ্যগুলির জন্য টাকা ধার নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বিধি আছে। রাজ্যের রাজস্ব ঘাটতি ৫ শতাংশের নিচে থাকলে তবেই তারা ধার নিতে পারবে। তাছাড়া আয়ের ৩.৫ শতাংশ পরিমাণের বেশি ধার নিতে হলে কেন্দ্রকে কৈফিয়ত দিতে হবে।
চুপ রয়েছেন মোদী
কয়েকদিন আগেই কলকাতা সহ দেশের তিনটি শহরে আইসিএমআর-এর ল্য়াব উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভার্চুয়াল সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে প্রাপ্য টাকা মেটানোর কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। কেন্দ্রের কাছে পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া ৫৩,০০০ কোটি টাকা মিটিয়ে দেওয়ার দাবি তোলেন মমতা। তবে বকেয়া মেটানো নিয়ে সেদিন কিছু বলেননি প্রধানমন্ত্রী মোদী।
কী কারণে এই পরিস্থিতি?
এদিকে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, আদায় কমার কারণ দু'টি। করোনা ভাইরাসের হানা ও কর জমা ও রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে ছাড়। তবে গত তিন মাস ধারাবাহিক ভাবে সংগ্রহ বাড়ায় কেন্দ্র আশাবাদী। এই প্রেক্ষিতেই বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানোর ফলে ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিলের রিটার্নের একাংশও জমা পড়েছে জুনে। জমা পড়েছে মে-র বহু রিটার্ন।
জিএসটি আদায়ের হিসাব
এর আগে নতুন অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের জিএসটি সংগ্রহের হিসেবে দেখা যায়, এপ্রিল থেকে জুনে জিএসটি সংগ্রহ কমেছে এক বছর আগের তুলনায় ৫৯ শতাংশ। তবে জুনে ৯০,৯১৭ কোটি টাকা সংগ্রহ হওয়াকেই অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ হিসেবে দেখতে চাইছে কেন্দ্র। এই অঙ্কও আগের বছরের জুনের তুলনায় ৯ শতাংশ কম। এপ্রিল এবং মে মাসে ৩২,২৯৪ কোটি এবং ৬২,০০৯ কোটি আদায় হয়। জুনে পশ্চিমবঙ্গের জিএসটি সংগ্রহও ১১ শতাংশ কমেছে।