করোনাভাইরাসের প্রভাব, সস্তা হল ভারতীয় বাসমতী চাল
করোনাভাইরাসের প্রভাব, সস্তা হল ভারতীয় বাসমতী চাল
করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে ভারতীয় বাসমতী চালের চালান বন্ধ করে দিয়েছে ইরান। এর ফলে চলতি আর্থিক বছরে ১৮–২০ শতাংশ রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে।
ভারতীয় বাসমতী চালের আমদানি সবচেয়ে বেশি হয় ইরান ও পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে ও চালানের ৩০ শতাংশ দিয়ে থাকে। এমনিতেই আমেরিকা–ইরানের ঠান্ডা যুদ্ধের কারণে ভারত থেকে চাল রপ্তানি সমস্যার মুখে রয়েছে, তার ওপর ইরানে করোনাভাইরাসের প্রকোপে মৃত্যুর জন্য এই সমস্যা আরও বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতীয় বাসমতীর অন্যতম শীর্ষ আন্তর্জাতিক গন্তব্য হল পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলি। ২০১৯–২০ আর্থিক বছরে ১১৭ মিলিয়ন টনেরও (এমটি) বেশি ধান উৎপাদন হয়েছে কিন্তু সেই তুলনায় রপ্তানি না হওয়ায় ভারতীয় রপ্তানিকাররা বড় ক্ষতির দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। ২০১৯–২০ সালের উৎপাদন পাঁচ বছরের গড় উৎপাদনের ১০৭.৮০ এমটির তুলনায় প্রায় ৯.৬৭ এমটি বেশি ছিল।
চাল রপ্তানি হ্রাস বিভিন্ন কারণে
২০১০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে চাল রপ্তানির বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার (সিএজিআর) প্রায় ১৪ শতাংশ কমে গিয়েছে, যার মূল কারণ হল নেতিবাচক ভূ-রাজনীতি, কড়া বাণিজ্যের নিয়ম এবং সরকারের উচ্চ সর্বনিম্ন সমর্থন মূল্য (এমএসপি)। বাজারে বাসমতি চালের দাম কমে যাওয়ার কারণই হল নেতিবাচক বাজারের গতিশীলতা। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ আইসিইএক্সে বিক্রির ক্ষেত্রে শীর্ষ পুসা বাসমতী জাতের (পিবি১১২১) চালের মূল্য করোনাভাইরাসের কারণে প্রতি কুইন্টাল ৩,০৩০ টাকা হয়ে গিয়েছে। তবে বাজারে ধারাবাহিকভাবে ধানের মূল্যের পতন লক্ষ্য করা গিয়েছে।
চাল রপ্তানিকারকদের মাথায় হাত
এরই মধ্যে আবার করোনাভাইরাসের প্রভাবের ফলে ইরান ভারতীয় বাসমতী চালের চালান বন্ধ করে দিয়েছে। যা চলতি আর্থিক বছরে রপ্তানিতে ১৮-২০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। কেডিয়া উপদেষ্টার ডিরেক্টর অজয় কেডিয়া জানিয়েছেন, ভারতীয় বাসমতী চালের কদর একমাত্র পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলি দিতে জানে। তারা ৩০ শতাংশের বেশি চালান দেয়। কোহিনুর ফুডসের যৌথ ম্যানেজিং ডিরেক্টর গুরনাম অরোরা বলেন, ‘রপ্তানিকারদের কাছে করোনাভাইরাস খুব বড় চিন্তার কারণ। ইরানেও এখন এই ধরনের ঘটনা ঘটায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এর প্রভাব ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ভ্রমণে পড়তে শুরু করেছে।' তিনি আরও জানান যে চাল রপ্তানিকারকরা ৪-৬ সপ্তাহ অপেক্ষা করে দেখতে চান যে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, কোহিনুর ফুডস চাল রপ্তানির জন্য শীর্ষে রয়েছে। অন্যদিকে মুম্বইয়ের চাল ব্যবসায়ী দেবেন্দ্র বোরা এই চাল ব্যবসার কোনও ইতিবাচক দিক দেখতে না পেয়ে খুবই হতাশ হয়ে পড়েছেন। তিনি জানিয়েছেন এর থেকে উদ্ধারের কোনও রাস্তা চোখে পড়ছে না। তিনি বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বিভিন্ন কারণের জন্য চাল রপ্তানির বাজার দিন দিন পতনের দিকে যাচ্ছে। আগামা ১-২ মাসে এই পরিস্থিতি শুধরাবে আমরা শুধু সেই আশাই করতে পারি।' তিনি এর আগে কেন্দ্রকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে ব্রাজিলের কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি করা উচিত, যা ধান ও গমের এক বৃহৎ ভোক্তা ছিল, যা ভারতীয় রপ্তানিকারদের আংশিকভাবে ক্ষতির পরিমাণ মেটাতে পারত।
পশ্চিম এশিয়ায় ধান রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে
২০১৮-১৯ সালের আর্থিক বছরে ইরানে চাল রপ্তানি, বিশেষ করে বাসমতী চালের মূল্য ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল। দেশটিতে ভারতীয় ধানের চালানের ওপর ২৫ শতাংশ রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড ফিন্যান্স সংস্থা ড্রিপ ক্যাপিটালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে ধান রপ্তানি পশ্চিম এশিয়ায় বড় পতনের সঙ্গে বিশ্বজুড়ে হ্রাস পেয়েছে।
দিল্লিতে ভোটে জিততে না পেরেই হিংসা ছড়িয়েছে বিজেপি, আক্রমণ শরদ পাওয়ারের