রাজস্থানে পঞ্চায়েত প্রধান পদে নির্বাচিত হলেন পাকিস্তান থেকে আসা শরণার্থী
জন্ম পাকিস্তানে। ভারতীয় নাগরিকত্ব পেয়েছেন মাত্র চার মাস আগে। এরই মধ্যে হয়ে গেলেন জনপ্রতিনিধি। এই কাজ করে দেখালেন রাজস্থানে বসবাসকারী নীতা কানওয়ার। রাজস্থানের টঙ্ক জেলার নাতওয়াদা গ্রামপঞ্চায়েত নির্বাচনে পঞ্চায়েত প্রধান পদে নির্বাচন লড়ে নিজের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সোনু দেবীকে ৩৬২ ভোটে হারালেন নীতা। নির্বাচনে মোট ২৪৯৪টি ভোট পড়েছিল, যার মধ্যে নীতার ঝুলিতে আসে ১০৭৩টি ভোট।
১৮ বছর আগে এদেশে আসা
পাকিস্তান থেকে কোনও ভাবে পালিয়ে এসেছিলেন তিনি। শরণার্থী হয়ে ভারতে আসার পর এবার তিনি স্বপ্ন দেখছেন নীতা। এই বিষয়ে নীতা বলেন, 'আমি ১৮ বছর আগে এসেছিলাম ভারতে। তবে মাত্র ৪ মাস আগে আমি ভারতীয় নাগরিকত্ব পাই।' তিনি আরও বলেন, 'আমার শ্বশুর পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন দীর্ঘদিন। এখন তিনি আমাকে রাজনৈতিক বিষয়ে পথ দেখাচ্ছেন।'
২০১৯-এর সেপ্টম্বরে ভারতীয় নাগরিক হন
৩৬ বছর বয়সী নীতা ২০০৫ সালে আজমেরের সোফিয়া কলেজ থেকে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। এরপর ২০১১ সালে পুণ্য প্রতাপ করণের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। এরপর গতবছরের সেপ্টেম্বর মাসে শেষ পর্যন্ত ভারতীয় নাগরিকত্ব পান নীতা।
মহিলাদের জন্যে কাজ করবেন নীতা
পঞ্চায়েত প্রধান হিসাবে নির্বাচিত নীতা বলেন, 'আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমাকে পঞ্চায়েত প্রধান হিসাবে নির্বাচিত করার জন্যে আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আমি মহিলাদের স্বশক্তিকরণের জন্যে কাজ করতে চাই। পাশাপাশি শিক্ষার প্রসারের জন্যেও আমি কাজ করতে চাই। মহিলাদের এগিয়ে নিজে যেতে ও তাদের উন্নতির জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করব। আমি শিক্ষার পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যবস্থায় উন্নতি ও হাসপাতাল গড়ে তোলার বিষয়ে নজর দেব। আমি নিশ্চিত করব যাতে মহিলারা তাদের মজুরি সঠিক সময়ে এবং সঠিক পরিমাণে পায়। এতেই আমাদের গ্রামের উন্নতি সম্ভব হবে।'
'মহিলাদের বসবাসের জন্যে ভারত অনেক ভালো'
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের তুলনা টানতে গিয়ে নীতা ১৮ বছরের পুরোনো স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, 'ভারতে মহিলাদের বসবাসের জন্যে যা পরিস্থিতি তা পাকিস্তান থেকে কয়েক গুণ ভালো। শিক্ষার ক্ষেত্রেও পাকিস্তানের থেকে ভআরত অনেক এগিয়ে। আমি যবে থেকে এদেশে এসেছি আমি অনেক মানুষের সাহায্য পেয়ে এসেছি।'
সিএএ নিয়ে রাজস্থানে শরণার্থীদের উল্লাস
এর আগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পর উল্লাস দেখা যায় যোধপুর ও রাজস্থানের বিভিন্ন জায়গায় থাকা পাকিস্তানী হিন্দু শরণার্থীদের মধ্যে। গত বেশ কয়েক বছর ধরে রাজস্থানে থাকা এই শরণার্থীরা খুব কষ্টে থাকতেন। নাগরিকত্ব না থাকার কারণে তাঁরা সাধারণ কোনও সুযোগ সুবিধা পেতেন না। তবে এখন নতুন এই নাগরিকত্ব আইন পাশ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের জীবনে নতুন আার আলো জ্বলেছে।