নীতীশের রাজনৈতিক মূলধনে টান, দানা বাঁধতে শুরু করেছে বিদায়ের জল্পনা
আসন্ন নির্বাচনে যদি নীতীশ কুমার ভালো ফল না করেন, তবে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে? এনিয়ে কানাঘুষো ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক আঙিনায়। অনেকেরই মত, এবারের মতো নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে পারলেও ২০২৪ সালেই রাজনীতিকে বিদায় জানাতে পারেন তিনি। এহেন পরিস্থিতিতে যদি আসন্ন নির্বাচনে নীতীশ জিততে না পারেন তবে আরও আগে সরে দাঁড়াতে পারেন তিনি।
১৫ বছর ধরে তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকেছেন
বিগত ১৫ বছর ধরে তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকেছেন। শুধু মাঝে ২০১৪ সালে ৯ মাসের জন্য তিনি রাজনৈতিক মত পার্থক্যের জেরে সরে দাঁড়িয়েছিলেন ক্ষমতা থেকে। তখন মুখ্যমন্ত্রিত্ব সামলেছিলেন জিতেন রাম মাঁঝি। এদিকে ২০১৮ সালে তিনি আইন সভায় মনোনীত হন। তাঁর ৬ বছরের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালে।
ষষ্ঠ বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার লক্ষ্যে নির্বাচনী ময়দানে
এর আগে ২০০০, ২০০৫, ২০১০ এবং ২০১৫ সালে দুই বার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথগ্রহণ করেছেন নীতীশ। এবছর নীতীশ ষষ্ঠ বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার লক্ষ্যে নির্বাচনী ময়দানে নামবেন। বিগত তিন-চার দশক ধরে বিহারের রাজনীতিতে একজন প্রথম শ্রেণীর ব্যক্তিত্ব হয়ে থাকার পর হঠাতই যেন নিজের রাজনৈতিক মূলধনে টান পড়তে দেখছেন নীতীশ কুমার। তার একটা মূল কারণ অবশ্য এবছরের নির্বাচনে তরুণ প্রজন্মের আবির্ভাব।
লালু জমানা ভুলে গিয়েছেন নীতীশ
টানা প্রায় ১৫ বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকার পর এখন তিনি আরজেডির তরুণ তুর্কি তথা লালু পুত্র তেজস্বী যাদবের চ্যেলেঞ্জের সামনে। লালু প্রসাদকে ছাড়াও আরজেডি বিগত দিনে বিহারের ২০ শতাংশ ভোট পেতে সক্ষম হয়েছে। তবে বিহারে অনেক ভোটার ছিলেন যাঁরা নীতীশকে ভোট দিয়েছেন লালুর ফিরে আসার ভয়ে। তবে সেই প্রজন্মের ভোটারের পাশাপাশি এবার নতুন প্রজন্মের ভোটাররা এসেছেন, যাঁরা লালু জমানার সঙ্গে কোনও যোগ খুঁজে পান না। তাঁরা বদল চাইছেন।
নীতীশের হারানো জমি কার দখলে?
এদিকে নীতীশের হারানো জমিতে অনেকটাই নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে তাদেরই জোট সঙ্গী বিজেপি। এবারের নির্বাচনে সমান সমান আসনে লড়লেও বিজেপি নীতীশকে সিনিয়র পার্টনার হিসাবে ধরে নিয়েছে। স্পষ্ট জানিয়েও দেওয়া হয়েছে যে আসন যে যত পাক, মুখ্যমন্ত্রী হবেন নীতীশ। তবে এই নির্বাচনে যদি বিজেপি ভালো ফল করে, তবে কি পরবর্তী নির্বাচনেও এতটা দিল দরদিয়া থাকবে তারা?
আগমন ঘটেছে পরবর্তী প্রজন্মের
বিহারে ২০০৫ সালে নীতীশ কুমার যেবার প্রথমবার লালু প্রসাদকে হারিয়ে গদিতে বসেছিলেন, সেবার লালুর বদলে তিনি ছিলেন বিকল্প মুখ। এরপর ১৫ বছরে গঙ্গা দিয়ে গড়িয়েছে অনেক জল। এর মাঝেই এক সময়ের চির প্রতিদ্বন্দ্বী আরজেডির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন নীতীশ। পরে ফের মোদী বিরোধিতা ছেড়ে বিজেপির সঙ্গ নিতে বাধ্য হয়েছিলেন নীতীশ। তবে এবারের নির্বাচনে আগমন ঘটেছে পরবর্তী প্রজন্মের নেতাদের।
বিহারে নয়া চাল এলজেপির, বিজেপি-জেডিইউকে মাত দিতে পুরনো ঘুঁটির খোঁজে চিরাগ