মত প্রকাশের স্বাধীনতা চান এই আইএএস শাহ ফায়জল, কাড়লেন মোদী সরকারের ঘুম
শাহ ফয়জল। ভারতীয় ব্যুরোক্র্যাট মহলে এই নাম এখন বিতর্কের চরমে। ২০১০ সালের আইএএস-এ-তে প্রথম স্থান দখল করেছিলেন শাহ।
শাহ ফয়জল। ভারতীয় ব্যুরোক্র্যাট মহলে এই নাম এখন বিতর্কের চরমে। ২০১০ সালের আইএএস-এ-তে প্রথম স্থান দখল করেছিলেন শাহ। বর্তমানে জম্মু ও কাশ্মীরের পাওয়ার ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টটর পদে কর্মরত। এহেন শাহ তাঁর একাধিক টুইটে মোদী সরকারের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন।
বিতর্কের সূত্রপাত কাঠুয়া গণধর্ষণকাণ্ড নিয়ে। ২২ এপ্রিল একটি টুইটে ভারতের পরিস্থিতিকে 'রেপিস্তান' বলে বর্ণনা করেন। শাহ-র দাবি এটা একটা 'সার্কাস্টিক' মন্তব্য। কিন্তু, মোদী সরকার এই যুক্তি মানতে নারাজ। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে রাজ্যপাল এন এ ভোরা শাহর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করিয়েছেন। জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট বা গ্যাড শাহ-কে দোষী সাব্যস্ত করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে একজন ব্যুরোক্র্যাটের সততাভঙ্গ ও কর্তব্য পালনে নিষ্ঠার অভাবের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলেও জানিয়েছে গ্যাড।
Patriarchy+Population+Illiteracy+Alcohol+Porn+Technology+Anarchy = Rapistan!
— Shah Faesal (@shahfaesal) April 22, 2018
গ্যাড জানিয়েছে শাহ ফয়জল যা করেছেন তাতে অল ইন্ডিয়া সার্ভিসেস-এর কনডাক্ট রুলসের ১৯৬৮, অল ইন্ডিয়া সার্ভিসেস-এর ডিসিপ্লিন এবং অ্যাপিল রুলস ১৯৬৯-কে লঙ্ঘন করেছে।
এই মুহূর্তে আমেরিকায় রয়েছেন শাহ ফয়জল। সেখানে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে মিড কেরিয়ার মাস্টার্স করছেন। সেখান থেকেই বিভাগীয় তদন্তকে অবৈধ এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
শাহ ফয়জলের মতে, 'আমরা শুধু কলম পেষাইকারী নই যে তাঁরা কোনও ধরনের বিতর্ক বা সামাজিক সমস্যা নিয়ে মুখ খুলতে পারবো না। সরকার যেভাবে আমাদের মুখ খোলায় কঠোরতা নিয়েছে তাতে আমাদের বক্তব্য ভুলভাবে ব্যাখ্যা হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।'
এই আইএএস-এর মতে সরকারি কর্মীদেরও যে মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে পারে তা বোঝার সময় এসে গিয়েছে। এদিকে, শাহ-র বিরুদ্ধে মোদী সরকারের পদক্ষেপে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লা মোদী সরকারের মনোভাবে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।
Looks like DOPT is determined to chase @shahfaesal out of the civil services. The last line of this page is shocking & unacceptable where they question Faesal’s “integrity & honesty”. How is a sarcastic tweet dishonest? How does it make him corrupt? https://t.co/6MdUBvC71p
— Omar Abdullah (@OmarAbdullah) July 10, 2018
You have no problem when officers from Rajasthan & elsewhere defy “set norms of governance & conduct” yet Faesal’s tweet about rape bothers you. Somehow this doesn’t surprise me at all! https://t.co/gPheXHxDQt
— Omar Abdullah (@OmarAbdullah) July 11, 2018
স্টুডেন্ট অ্যাক্টিভিস্ট শীলা রশিদও এই নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।
Rally to defend rapists and lynching convicts, but act against those who critique rape culture. Sure, Faesal's tweet may have been in poor taste, but lack of aesthetics doesn't warrant a gag order when the bigger problem of rape stares us in the eye!!https://t.co/6v26SbATZh
— Shehla Rashid (@Shehla_Rashid) July 10, 2018
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সার্ভিস রুলস অনুযায়ী যতক্ষণ একজন অফিসার সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হওয়া বক্তব্যকে ব্যক্তিগত মত বলে দাবি করছেন ততক্ষণ পর্যন্ত এই নিয়ে কোনও বিধিনিষেধ নেই।
শাহ ফয়জলকে নিয়ে এই প্রথম বিতর্ক হচ্ছে এমনটা নয়। এর আগেও বহুবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিকবার নানা পোস্ট করেও বিতর্ক তৈরি করেছেন তিনি। যদিও, শাহ ফয়জল-কে আইডল করে এখন জম্মু ও কাশ্মীরে অসংখ্য শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা আইএএস-এর পরীক্ষায় বসছেন। আগে সাধারণত জম্মু ও কাশ্মীরের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে চিকিৎসক বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার প্রতিযোগিতা দেখা যেত। শাহ ফয়জলের হাত ধরে সেই ছবিটার বদল ঘটেছে। জম্মু ও কাশ্মীর নয় তাঁর মতধারাকে সারা দেশ ও কেন্দ্রীয় সরকার সম্মান দিক এটাই এখন চাইছেন শাহ ফয়জল।