নরবলি দেবীকে তুষ্ট করতে! একবিংশ শতাব্দীতেও মধ্যযুগীয় কুসংস্কারের বলি হল শিশু
একবিংশ শতাব্দীতে এসেও মধ্যযুগীয় নৃশংসতা ছড়িয়ে রয়েছে দেশের আনাচে-কানাচে। তাই তো দুর্গাপুজোর উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশেও দেবীকে ‘তুষ্ট’ করতে দেওয়া হচ্ছে বলি।
আজও অন্ধবিশ্বাসের বলি হচ্ছেন মানুষ। একবিংশ শতাব্দীতে এসেও মধ্যযুগীয় নৃশংসতা ছড়িয়ে রয়েছে দেশের আনাচে-কানাচে। তাই তো দুর্গাপুজোর উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশেও দেবীকে 'তুষ্ট' করতে দেওয়া হচ্ছে বলি। তাও যে সে বলি নয়, একেবারে নরবলির ঘটনা! ওড়িশার বোলাঙ্গির সিন্ধেকেলা গ্রামে ঘটল নৃশংসতা। বলি দেওয়া হল এক ন'বছরের শিশুকে।
অশুভ শক্তির বিনাশ করে শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠার জন্য মাতৃ আরাধনায় মেতে ওঠেন মানুষ। এই উৎসবের আঙ্গিকে সকলের মঙ্গল কামনা করাই উদ্দেশ্য। কিন্তু এই উৎসবেই যখন প্রাণের আহুতি দেওয়া হয়, তা মধ্যযুগীয় নৃশংসতারই নিদর্শন বলে গণ্য হয়। আজও মানুষ কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে নরবলি দিতে পারে, তা এককথায় অবিশ্বাস্য, অবাস্তবও।
অথচ সেই ধরনেরই এক ঘটনা ঘটে গেল ওড়িশায়। অন্ধবিশ্বাসের বলি হল ন-বছরের শিশু। একবিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞান যখন এত এগিয়ে গিয়েছে, তখনও কুসংস্কার থেকে সরে আসেনি এখানকার মানুষ। সিন্ধেকেলায় এক নদীর তীরে শিশুর মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধারের পরই এই ধারণার জন্ম নিয়েছিল। খুনের কিনারা হতেই স্পষ্ট হয়ে গেল অন্ধবিশ্বাসের কাহিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম ঘনশ্যাম রানা। তদন্তে নেমে তাঁরা বুঝতে পারেন, এই শিশুকে বলি দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িয়ে রয়েছেন তার আত্মীয়-স্বজনেরা। মৃত ঘনশ্যামের আত্মীয় কুঞ্জা রানা ও সম্ভাবন রানাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা বলি দেওয়ার ঘটনা স্বীকারও করেছে। ধৃতরা 'কালা জাদু'তে বিশ্বাসী।
[আরও পড়ুন:অমৃতসরে ট্রেনের ধাক্কায় আহতদের মূল্যবান সামগ্রী ডাকাতি, বাদ গেল না মৃত ব্যক্তিরাও]
সেই কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে দেবী দুর্গাকে তুষ্ট করতে তারা নরবলি দেয়। ঘনশ্যামকে বলি দিয়ে মায়ের তরণে সমর্পণ করা হয়। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, ১৩ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ ছিল ঘনশ্যাম। তিনদিন পর তাঁর দেহ বাড়ি থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে নদীর ধার থেকে উদ্ধার করা হয়।
[আরও পড়ুন: চিতায় তোলার পরই নড়ে উঠল মড়া! 'মিরাকেল' ঘটতে পারে, কিন্তু তারপর যা হল... ]
এবারই প্রথম নয়, এক বছর আগেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। এই এলাকাতেই নরবলি দেওয়া হয়েছিল এক কিশোরকে। সেই ঘটনায় এক তন্ত্রসাধককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপরও থামেনি এই কুসংস্কার। আবারও একইরকম ঘটনার সাক্ষী থাকল ওড়িশা। এবার ন-বছরের এক শিশুকে বলি দেওয়া হল।