ঝাড়খণ্ড নির্বাচনের কতটা প্রভাব এনডিএ ও বিহারের উপর?
ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে চলা ঝাড়খণ্ড নির্বাচন যেন ২০২০ সালের বিহার বিধানসভা নির্বেচনের সেমিফাইনাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে চলা ঝাড়খণ্ড নির্বাচন যেন ২০২০ সালের বিহার বিধানসভা নির্বেচনের সেমিফাইনাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবং বিজেপির জন্যে এই সেমিফআইনাল মোটেও ভালো ইঙ্গিত বয়ে নিয়ে আসছে না। ঝাড়খণ্ডের নির্বাচনে ইতিমধ্যেই এনডিএ ভেঙে গিয়েছে। বিহারে বিজেপির শরিকরা ঝাড়খণ্ড নির্বাচনে সঙ্গ ছেড়েছে পদ্ম শিবিরের।
ঝাড়খণ্ডে বিজেপির একমাত্র জোটসঙ্গী আজসু
ঝাড়খণ্ডে এই মুহূর্তে বিজেপির একমাত্র শরিক হিসাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়ন (আজসু)। ঝাড়খণ্ডের ভোট ময়দানে আজসু ছাড়া বিজেপির সঙ্গ একে একে ছেড়ে দিয়েছে রামবিলাস পাসওয়ানের এলজেপি ও নীতীশ কুমারের জেডিইউ। এদিকে সঙ্গ না ছাড়লেও ঝাড়খণ্ডের ৮১টির মধ্যে ২৭টি আসনে বিজেপির বিপরীতে প্রার্থী দিয়েছে আজসু। প্রসঙ্গত, ২০০০ সাল থেকে বিজেপির সঙ্গে শরিক থেকেছে আজসু।
জোটসঙ্গী হলেও একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী
২৭টি আসনে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিলেও বিজেপি আজসু প্রধান সুদেশ মাহাতোর বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয়নি। একই রকম ভাবে জামশেদপুর পূর্ব আসনে রঘুবর দাসের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয়নি আজসু। ২০১৪ সালে আজসু ৮টি আসন জিতেছিল। এবার বিজেপি আজসুকে ১২টির বেশি আসন ছাড়তে রাজি হয়নি। তাই আজসু ও বিজেপিকে একে অপরের বিপরীতে প্রার্থী দিতে দেখা গেল।
বিজেপির মাথা ব্যথার কারণ প্রাক্তন মন্ত্রী
এদিকে বিজেপির আজসুর থেকে বড় মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেই রাজ্যের বিজেপি মন্ত্রী সরয়ু রায়। প্রাক্তন এই মন্ত্রীকে এইবার প্রার্থী করেনি বিজেপি। এরপর বিদ্রোহী এই নেতা বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বন্ধু হিসাবে পরিচিত সরয়ু রায়ের পিছনে রয়েছে নীতীশের সমর্থন। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৭ সালে সরয়ু রায়ের লেখা বই প্রকাশে নীতীশ কুমারকে ডাকায় দলের মধ্যেই সমালোচিত হয়েছইলেন সরয়ু। এবার সেই নেতা বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এনডিএ শরিকের সাহায্যে দাঁড়ানোয় চিন্তার ভাঁজ বিজেপি নেতৃত্বের কপালে।
নীতীশের বন্ধু সরয়ু
পাশাপাশি বিজেপি সরকারের অংশ থাকা সত্ত্বেও সেই সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন সরয়ু রায়। প্রসঙ্গত, এই সরয়ু রায়ই বিহারে লালুর বিরুদ্ধে পশু খাদ্য কেলেঙ্কারির খোলাশা করেন। এদিকে নীতীশ ছাড়াও ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ও বিজেপির শরিক আজসুও সরয়ু রায়কে নিজেদের সমর্থন জানিয়েছে।
জাতীয় দল হওয়ার লক্ষ্য জেডিইউ-র
এর আগে জেডিইউ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিল যে বিজেপির সঙ্গে তাদের শরিকি সমপর্ক শুধু মাত্র জাতীয় স্তরে থাকবে। রাজ্যস্তরের সব নির্বাচন জেডিইউ একা লড়বে বলে জানিয়ে দিয়েছিল। সেই মতোই এখনও পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডে বিজেপির বিরুদ্ধে ২৫টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে জেডিইউ। এর আগে ২০১৪ সালে ১১টি আসনে প্রার্থী দিয়েও কোনও আসনেই জেতেনি জেডিইউ।
দিল্লি ও কাশ্মীরেও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে জেডিইউ
২০২০ সালের মধ্যে জাতীয় দল হিসাবে মান্যতা পেতে এমনিতেই মরিয়া জেডিইউ। এর মাঝেই ঝাড়খণ্ডে দলের কর্মীরা মনে করেন যে বিজেপির সঙ্গে ডোট গড়ায় লোকশান হয়েছে জেডিইউ-র। ঝাড়খণ্ড ছাড়াও দিল্লি এবং জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচনে লড়বে বলে জানিয়ে দিয়েছে জেডিইউ।