কীভাবে শিনা বোরাকে খুন করেছে, ছেলে মিখাইলকেও মারতে চেয়েছিল ইন্দ্রাণী, চাঞ্চল্যকর বয়ান ড্রাইভারের
২০১২ সালের মার্চে ইন্দ্রাণী বিদেশ থেকে স্কাইপে ভিডিও চ্যাট করে শ্যামবর রাই জানায়, সে নিজের মেয়ে শিনা ও ছেলে মিখাইলকে খুন করতে চায়।
নিজের মেয়ে শিনা বোরাকে খুন করার অভিযোগে জেলবন্দি ইন্দ্রাণী মুখার্জী। এই ঘটনায় আর কোনও রহস্য জানতে বাকী নেই বলে যখন ভাবা হয়েছিল, ঠিক সেইসময়ই চাঞ্চল্যকর বয়ান দিল ইন্দ্রাণীর একসময়ের গাড়ির চালক তথা এই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত শ্যামবর রাই। জানাল কীভাবে নিজের মেয়ে শিনাকে খুন করেছিল ইন্দ্রাণী।
গতবছরের জুন মাসে শ্যামবর রাই এই ঘটনায় রাজসাক্ষী হয়েছে। শুক্রবার আদালতে শুনানিতে সে জানিয়েছে, ২০১২ সালের মার্চে ইন্দ্রাণী বিদেশ থেকে স্কাইপে ভিডিও চ্যাট করে জানায়, সে নিজের মেয়ে শিনা ও ছেলে মিখাইলকে খুন করতে চায়। দুজনেই তার প্রথম স্বামীর সন্তান। অথচ দুনিয়া জানত মিখাইল ও শিনা হলেন ইন্দ্রাণীর ভাই-বোন।
শ্যামবরের সঙ্গে পূর্ব পরিকল্পনা মতোই ২০১২ সালের এপ্রিলে লোনাভালা ও মুম্বইয়ে দেহ ফেলার জায়গা দেখে রাখতে বলে ইন্দ্রাণী। দেশে ফিরে ইন্দ্রাণী জানায়, আগামি দুই দিনের মধ্যে মেয়ে শিনা ও ছেলে মিখাইলকে মেরে ফেলবে সে।
সেইমতো খান্ডালার কাছে একটি নির্জন জায়গা ইন্দ্রাণী বেছে নেয়। সেখানে মিখাইলকে মেরে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। পরে খাপোলিতে আর একটি জায়গা শিনার জন্য পছন্দ করে ইন্দ্রাণী। পরে স্বামী পিটার মুখার্জীকেও ইন্দ্রাণী জায়গার বিবরণ দেয় বলে আদালতে জানিয়েছে শ্যামবর রাই।
২০১২ সালের ২৪ এপ্রিল শিনাকে ডেকে পাঠিয়ে বান্দ্রা-পালি হিল এলাকায় ফ্ল্যাট দেখানোর কথা বলে ইন্দ্রাণী। সেইমতো শিনা ইন্দ্রাণীর গাড়ি করে রওনা দেয়। সঙ্গে ছিল ইন্দ্রাণী, তার প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খান্না ও ড্রাইভার শ্যামবর রাই। কিছুটা যাওয়ার পরই ওষুধ মেশানো জল শিনাকে খাইয়ে দেয় ইন্দ্রাণী। এবং চোখ বন্ধ করে থাকা শিনার চুলের মুঠি চেপে ধরে সঞ্জীব।
শ্যামবর আদালতে জানিয়েছে, ইন্দ্রাণী শিনার উপরে চেপে বসে। শ্যামবরকে বলা হয় শিনার মুখ চেপে ধরতে। ইন্দ্রাণী গলা টিঁপে ধরে জোরে। কিছুক্ষণ ছটফট করার পরে আর সাড় ছিল না শিনার। সেই অবস্থায় দেহ নিয়ে আসা হয় বাড়িতে। ব্যাগে পুরে গ্যারাজে রেখে দেওয়া হয়।
মিখাইলকেও সেদিনই খুন করতে চেয়েছিল ইন্দ্রাণী। তবে সে জানায়, অনেক মদ্যপান করলেও মিখাইল ঠিক রয়েছে। শ্যামবর জানায়, দুজনের দেহ একসঙ্গে নিয়ে যাওয়া সমস্যা হবে। তাই মিখাইলের ব্যাপারটা পরে ঠিক করা হোক। সেইমতো পরের দিন মৃত শিনার ঠোঁটে লিপস্টিক পরিয়ে চুল বেঁধে গাড়িতে বসিয়ে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানেই রায়গড় জেলার জঙ্গলে শিনার দেহ রেখে তাতে পেট্রোল ছিটিয়ে দেয় সঞ্জীব খান্না ও তাতে দেশলাই মেরে আগুন জ্বালিয়ে নিজের মেয়ের দেহ পুড়িয়ে দেয় ইন্দ্রাণী।