কতটা নিরাপদ করোনা টিকা? আতঙ্কের আবহেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে কী বলছে সিরাম-ভারত বায়োটেক?
কতটা নিরাপদ করোনা টিকা? আতঙ্কের আবহেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে কী বলছে সিরাম-ভারত বায়োটেক?
গত শনিবার থেকে গোটা ভারত জুড়ে শুরু হয়েছে কোভিড টিকাকরণ। আশা-আশঙ্কার দোলাচলের মধ্যেই বুধবার পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ নাগরিকের টিকাকরণ হলেও একধিক রাজ্যে বড়সড় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এমনকী মৃত্যুর ঘটনায় বিতর্ক শুরু হয়েছে দেশ জুড়ে। প্রথম পর্বে দেশের সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দেওয়ার কথা থাকলেও আতঙ্কের আবহেই টিকা নিতে পিছু হটছেন অনেকে। অন্যদিকে কোভ্যাক্সিন-এর তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলা সত্ত্বেও তা কিভাবে জরুরীভিত্তিতে টিকাকরণের ছাড়পত্র পেল, সে বিষয়ে উঠছে নানাবিধ প্রশ্ন। এদিকে টিকাকরণ পরবর্তী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতেও একগুচ্ছ বিধিনিষেধ প্রকাশ করেছে দুই সংস্থাই।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে একাধিক সিদ্ধান্ত দুই সংস্থারই
স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত গোটা দেশে প্রায় ৫৮০টি অমূলক ঘটনা ঘটেছে। প্রথম পর্যায়ে ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় যে যথেষ্ট সমস্যায় পড়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা, তা স্পষ্ট গণমাধ্যমের তথ্যেই। আর তাই ভারত বায়োটেক-আইসিএমআরের 'কোভ্যাক্সিন' ও সিরাম ইনস্টিটিউট-অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার 'কোভিশিল্ড' সম্বন্ধে জন ভয় দূর করতে একাধিক তথ্য প্রকাশ করেছে দুই সংস্থাই। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে দেওয়া হয়েছে নতুন বিধিনিষেধও।
কারা নিতে পারবেন না 'কোভ্যাক্সিন' ?
অন্তঃসত্ত্বা মহিলা বা সবেমাত্র মা হয়েছেন, এমন নাগরিকদের কোভ্যাক্সিন নিতে স্পষ্ট নিষেধ করেছে ভারত বায়োটেক। তাছাড়া দু'ডোজের কোভ্যাক্সিন-এর সঙ্গে অন্যান্য ভ্যাকসিন নিলেও বিরূপ প্রভাব সম্পর্কেও সতর্ক করা হয়েছে। কোনোরকম অ্যালার্জি, জ্বর, রক্তপাতের সম্ভাবনা থাকলে অথবা, অন্যান্য কোনো রোগ থাকলে বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে এমন কোনো ওষুধ খেলে কোভ্যাক্সিন নেওয়ার ক্ষেত্রে সাফ 'না' করেছে ভারত বায়োটেক।
কোভ্যাক্সিন-র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে কী বলছে ভারত বায়োটেক
কোভ্যাক্সিন প্রয়োগে কিরকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, তার তালিকা প্রকাশ করেছে ভারত বায়োটেক। তালিকা অনুযায়ী, টিকাকরণের স্থানে যন্ত্রণা, চুলকানি, লাল হয়ে ফোলা বা হাতের দৌর্বল্য, শরীরে যন্ত্রণা, মাথাব্যথা, জ্বর, বমিভাব ও চামড়ায় চাকা চাকা দাগ হতে পারে। এছাড়াও শ্বাসকষ্ট, মুখ-জিভ ফোলা, দ্রুত হৃদস্পন্দন, সারা গায়ে লাল দাগ বা স্নায়ুদৌর্বল্যতার মত অ্যালার্জির সম্ভাবনাও প্রবল বলে মত বায়োটেকের।
কারা নিতে পারবেন না কোভিশিল্ড ?
কোভিশিল্ড টিকা প্রয়োগের পূর্বে যে ভ্যাকসিন সংস্থার গাইডলাইন মিলিয়ে নেওয়া বাধ্যতামূলক, স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে তা স্পষ্ট করেছে সিরাম ইনস্টিটিউট। গাইডলাইন অনুযায়ী, কোনোরকমের অ্যালার্জি, জ্বর, রক্তপাতের সমস্যা থাকলে অথবা অন্তঃসত্ত্বাকালীন বা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কথা ভাবলে এই টিকা নেওয়া যাবে না। তাছাড়াও শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে বা অন্য কোনো কোভিড ভ্যাকসিন নিলে কোভিশিল্ড গ্রহণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। সূত্রের মতে, ০.৫ মিলিলিটারের দ্বিতায় ডোজ নেওয়ার পরেই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে গ্রহীতার।
কোভিশিল্ড-এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে কী বলছে সিরাম ?
অন্যান্য প্রতিষেধকের ন্যায় কোভিশিল্ড গ্রহণেও কিছু স্বাভাবিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে বলে জানাচ্ছে সিরাম ইনস্টিটিউট। নয়া বিধি অনুযায়ী, টিকাকরণের স্থানে যন্ত্রণা, চুলকানি, লাল হয়ে ফোলা বা হাতের দৌর্বল্য, শরীরে যন্ত্রণা, মাথাব্যথা, জ্বর, বমিভাব ও চামড়ায় চাকা চাকা দাগ দেখা যেতে পারে। তাছাড়া শ্বাসকষ্ট, মুখ ও জিভ ফোলা, দ্রুত হৃদস্পন্দন, প্রচন্ড ঘাম হওয়া বা মানসিক অবসাদের মত লক্ষণও দেখা যায় বলে জানাচ্ছে সিরাম ইনস্টিটিউট।
ভিলেন করোনা ভাইরাস! চুপিসারেই দেশে প্রত্যাবর্তন অস্ট্রেলিয়া বধের নায়কদের!