জ্যোতিরাদিত্যর ধাঁচেই কি সচিন লিখছেন রাজনীতির 'স্ক্রিপ্ট'! দুই 'ভালো বন্ধুর' রাজনৈতিক ঘরানা একনজরে
গুণী মানুষের কদর কংগ্রেসে নেই। সচিন পাইলট বনাম অশোক গেহলট সংঘাতের পারদ চড়তেই এমনই বার্তা দিয়েছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। উল্লেখ্য, মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়ার রাজবংশের সন্তান জ্যোতিরাদিত্যও এককালে একই ঘটনাবলীর শিকার হয়েছেন, যা দিনের পর দিন রাজস্থানে সচিন পাইলট ভোগ করেছেন। প্রসঙ্গত, দুই তরুণ তুর্কীর রাজনৈতিক জীবন কার্যত একই সাথে শুরু, পিতৃহীন দুই রাজনীতি বিদের কংগ্রেসের সফরকালের ঘরানাও কার্যত এক। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে বীতশ্রদ্ধ হয়ে , দুই নেতা কংগ্রেস-কেরিয়ারের শেষলগ্নে বেছে নিয়েছেন দুই ভিন্ন ঘরানা।

পাইলটের রাজনৈতিক উড়ান
কংগ্রেস শিবিরের দাবি, কংগ্রেস ছেড়ে যদি সচিন পাইলট বেরিয়ে যান (যা কার্যত নিশ্চিত) তাহলে রাজস্থানের তরুণ তুর্কীর রাজনৈতিক কেরিয়ার বলে কিছু থাকবে না। কারণ বিজেপির সঙ্গে হাত মেলালে ফের একঘরে হবেন সচিন। যদিও বিজেপির রাস্তায় না হেঁটে সচিন পাইলট নিজের আলাদা দল তৈরি করতে চলেছেন। এর রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

আদৌ কি পারবেন সচিন?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, দেশে যোগ্য বিরোধী পক্ষ না থাকায় নরেন্দ্র মোদীর ফেসভ্যালু দিয়ে বিজেপি তড়তড় করে এগিয়ে যাচ্ছে। যা রাহুল গান্ধীর করার কথা ছিল তা রাহুল করতে পারেননি। আর এই জায়গা থেকেই কংগ্রেসে অবদমিত নেতাদের প্রাসঙ্গিকতা শুরু হয়। সেক্ষেত্রে সচিন পাইলট দেশের রাজনীতিতে অন্যতম নাম হতে পারেন বলে অনেকেরই দাবি। যা শোনা যাচ্ছে, তাতে খবর, সচিন বিজেপিতে যোগ না দিয়ে প্রগতিশীল কংগ্রেস নামের একটি নতুন দল গড়তে চলেছেন।

সিন্ধিয়া ও পাইলট রাজনীতি
একজন মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে একঘরে হয়েছিলেন, অন্যজন রাজস্থানে। জ্যোতিরাদিত্য ও সচিন পাইলট দুজনেই একইভাবে কংগ্রেসের বর্ষীয়ান বনাম তরুণ নেতাদের ইগোর দ্বন্দ্বের শিকার। যার খানিকটা দায় হাইকমান্ডের। আর হাইকমান্ডের ওপর ক্ষোভের জেরে দল ছেড়ে বিজেপিতে পা রাখেন গোয়ালিয়ার রাজবংশের সন্তান। কিন্তু রাজস্থানের রুক্ষ মরুপ্রান্তরের নেতা সেরাস্তায় যাননি। তিনি বিজেপির দেশ জোড়া প্রবল দাপটের মধ্যেও নিজের দল গড়ার সাহজ দেখিয়েছেন। আর এই জায়গা থেকেই দুই 'ভালো বন্ধু' জ্যোতিরাদিত্য ও সচিনের রাজনৈতিক অঙ্কের পার্থক্য স্পষ্ট হচ্ছে।

পিতৃবিয়োগ, কংগ্রেস ও পাইলট-সিন্ধিয়া
দুই নেতার বাবারাই কংগ্রেসের এককালের তাবড় নাম ছিলেন। মাধবরাও সিন্ধিয়া ও রাজেশ পাইলট দুজনেই কংগ্রেসের মধ্যে আপোশহীন রাজনীতি করেন। কালচক্রে দুই নেতারই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। এরপর রাজনীতির ভার কাঁধে তোলেন দুই পরিবারের দুই সন্তান। জ্যোতিরাদিত্য যেখানে সাফ কথায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বিজেপির আশ্রয় নিয়েছেন, সেখানে সচিন পাইলটের রাজনীতির অঙ্কে ছিল বোহেমিয়ান ঘরানা ছাপ। অনেকটাই ফুরফুরে!

দুই আলাদা ঘরানা
তাই পাইলটের রাজনৈতিক উড়ান জ্যোতিরাদিত্যর থেকে বহুগুণে আলাদা। ঘনিষ্ঠমহলের বার্তা দুদনেরই ক্ষোভের জায়গা গান্ধী নেতৃত্ব ছিল। কিন্তু রাজনীতির কেরিয়ারের গতি চিনে নেওয়ায় দুই নেতা দুই অন্য মেরুর বাসিন্দা হয়ে রইলেন।

বিজেপির ডাকা উত্তরবঙ্গ বনধে মিশ্র প্রভাব! মানুষই বন্ধ সফল করবে, বললেন দিলীপ ঘোষ