রজনীকান্তের প্রভাব কি উস্কাতে চলেছে দক্ষিণের রাজনৈতিক অঙ্ক! কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
তামিলনাড়ুর দুই দাপুটে রাজনৈতিক দল ডিএমকে ও এআইডিএমকের রাজনৈতিক আঙিনায় ঠিক কতটা শক্ত জমি তৈরি করতে পারবেন রজনীকান্ত?
গোটা দক্ষিণভারতে তো বটেই , এমনকি গোটা দেশে তাঁর নামই যথেষ্ট তাঁর ছবির বক্স অফিসের বাজার মাত করতে। তিনি ভক্তদের 'রজনীকান্ত', তিনি শিবাজী রাও গায়েকোয়াড়। তামিল চলচ্চিত্রজগত যাঁকে 'থালাইভা'( তামিল ভাষায় গুরুদেব) জ্ঞানে সম্মান করে। ভক্তদের কাছে তিনি প্রায় দেবতার সামিল। এই জনপ্রিয়তা যাঁর কাছে রয়েছে, সেই রজনীকান্ত প্রবেশ করতে চলেছেন তামিল রাজনীতিতে। যে রাজনীতির অন্যতম মুখ্য চরিত্র ছিলেন এআইএ ডিএমকে-র প্রয়াত নেত্রী তথা তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা, অন্যদিকে রয়েছেন ডিএমকে- র প্রধান এম করুণানিধি।
[আরও পড়ুন:মোদীর দল রজনীকান্তের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও, কটাক্ষ দলীয় সাংসদদের, আর কী বললেন স্বামী]
তামিলনাড়ুর দুই দাপুটে রাজনৈতিক দল ডিএমকে ও এআইডিএমকের রাজনৈতিক আঙিনায় ঠিক কতটা শক্ত জমি তৈরি করতে পারবেন রজনীকান্ত?দেশ জুড়ে বিজেপি-র বিজয় রথের সামনে টিকে থাকার লড়াইও থাকছে রজনীকান্তের হাতে গড়ে উঠতে চলা নতুন দলের সামনে। এরকম এক পরিস্থিতে রজনীকান্তের প্রভাব ও তামিল রাজনীতির আঙ্কটা ঠিকে কেমন দেখে নেওয়া যাক টাইমলাইনে।
[আরও পড়ুন:বছর শেষে রজনী ধমাকা ! রাজনীতিতে প্রবেশ নিয়ে বড় ঘোষণা 'থালাইভা'-র ]
নিজের দলের ঘোষণা, কৌশলী বার্তা
রজনীকান্ত, চেন্নাইয়ে আয়োজিত তাঁর ভক্তকুলের সভায় দাবি করেন, তাঁর রাজনৈতিক দলের জন্য় কোনও ক্যাডার চাই না। বরং নজরদারির জন্য কর্মী চাই। যে কর্মীদের ওপর নজর রাখবেন খোদ থালাইভা। দক্ষিণী রাজনীতি তথা তামিল রাজনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই বক্তব্য বেশ প্রাসঙ্গিক বলে দাবি অনেকেরই।
বিজেপি চেয়েছিল তাঁকে
এর আগে, মে মাস নাগাদ তামিল বিজেপি-র তরফে জানানো হয়, রজনীকান্ত তাঁদের দলে আসতে চাইলে তিনি স্বাগত। এছাড়া বিজেপি প্রেসিডেন্ট অমিত শাহও রজনীকান্তেতে তামিল বিজেপি-তে যোগাদানের আহ্বান করেছিলেন। প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ুর আঞ্চলিক দল ডিএমকে ও এআইএডিএমকে-র দাপটের কাছে, সেরাজ্যে সেভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না বিজেপি। এরকম এক পরিস্থিতিতে রজনীকান্তকে তারা দলে চেয়েছিল। তবে রবিবার রজনীকান্তের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত জানাবার পর , তাঁকে অভিনন্দন জানায় তামিলনাড়ুর রাজ্য বিজেপি।
জয়ললিতার মৃত্যু ও এআইডিএমকে
তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা এআইডিএমকে-র নেত্রী জয়ললিতার মৃত্যুর পর থেকে এই আঞ্চলিক দলের মধ্য়ে বিবাদ-ভাঙন লেগেই রয়েছে। পরে, জয়ললিতার কেন্দ্র আর কে নগর উপনির্বাচনে নির্দল প্রার্থী দিনাকরণের জয়, কিছুটা ব্যাকফুটে রেখেছে এই দলকে। এরকম এক অবস্থায় , আজ রজনীকান্ত জানিয়েছেন , তামিলনাড়ুতে গণতন্ত্রের অভাব রয়েছে। তাই রজনীর এই বার্তার সামনে এআইএডিএমকে রাজনীতি কতটা সমস্যায় পড়বে একন সেটাই দেখার।
১৯৯৬ সাল ও রজনীর একটি উবাচ
১৯৯৬ সালে তামিলনাড়ুর বিধানসভা নির্বাচনে এম করণানিধির দল ডিএমকে রজনীকান্তের কাছে তাদের সমর্থন করার জন্য় অনুরোধ করে। সেই অনুরোধে সায় দিয়ে রজনী বলেন, 'জয়ললিতা মসনদে আসলে ভগবানও তামিলনাড়ুকে বাঁচাতে পারবেন না।' এরপর বিপুল ভোটেজি লাভ করে ডিএমকে। যদিও সেই বক্তব্যকে পরে নিজের 'ভুল' বলে মন্তব্য করেন দক্ষিণের থালাইভা।
রবিবারের বক্তব্য থেকে বিশেষজ্ঞদের ধারণা
রজনীকান্তের রবিবারের বক্তব্যে কেন্দেরের বিজেপি সরকারের প্রতি কোনও বিষোদ্গার ছিল না। তবে বিজেপি-র থেকে খানিকটা দূরত্বই তিনি বজায় রাখছেন। কারণ 'তামিল' অনুপ্রবেশ ইস্যুটিও তাঁর সামনে রয়েছে। তামিলনাড়ুর ২৩৪ টি নির্বাচনী কেন্দ্রে বিধানসভা নির্বাচনের দিকে আপাতত তাকিয়ে রজনীকান্ত ও তাঁর ভক্তকূল।