কীভাবে সরানো হয়েছিল সাইরাস মিস্ত্রিকে, টাটাদের আক্রমণ করে বিস্তারিত বর্ণনা নির্মাল্য কুমারের
কীভাবে টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যানের পদ থেকে সাইরাস মিস্ত্রিকে সরানো হয়েছিল, নিজের ব্লগে তার বিস্তারিত বর্ণনা দিলেন সেই আমলের বোর্ড সদস্য নির্মাল্য কুমার।
'আই অ্যাম বিং স্যাকড'। ২০১৬ সালের ২৪শে অক্টোবর দুপুর ২টো নাগাদ টাটা সন্সের বোর্ড মিটিংয়ের কিছু আগে স্ত্রীকে টেক্সট করে এমনটাই জানিয়েছিলেন সাইরাস মিস্ত্রি। কীভাবে তাঁকে টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরানো হল শনিবারই নিজের ব্লগে তা বিস্তারিত জানিয়েছেন নির্মাল্য কুমার। সেসময় তিনি টাটাদের গ্রুপ এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল মেম্বার ছিলেন। ওই একইদিনে তাঁকেও টাটা গোষ্ঠী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। টাটারা সাইরাস মিস্ত্রিকে সরানোর বিষয়টি আরও নরমভাবে মেটাতেই পারত বলে ব্লগে লিখেছেন তিনি।
নিজের ব্লগে এর আগেও টাটাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। কিন্তু এবার তাঁর আক্রমণ একটু বেশিই কড়া। শেষদিন সাইরাস মিস্ত্রির সঙ্গে কেমন ব্য়বহার করা হয়েছিল তা বিস্তারিতভাবেই লিখেছেন তিনি। গত বছর ২৪শে অক্টোবর বম্বে হাউসে বোর্ড মিটিংয়ের জন্যই প্রস্তত হচ্ছিলেন সাইরাস মিস্ত্রি। সেসময়ই দরজায় টোকা মেরে তাঁর ঘরে প্রবেশ করলেন রতন টাটা ও টাটা সন্সের বোর্ড সদস্য নীতীন নোরিয়া। তাঁদের বসতে বলেন সাইরাস। এরপরই কোনও ভূমিকা না করে নীতীন নোরিয়া বলেন, 'সাইরাস, আপনি জানেন যে আপনার সঙ্গে রতন টাটার বনিবনা হচ্ছে না। সেকারণেই টাটা ট্রাস্ট বোর্ড মিটিংয়ে একটি প্রস্তাব পাশ করিয়ে আপনাকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন আপনার হাতে দুটি উপায়, হয় বোর্ড মিটিংয়ে যা হবে তার সম্মুখিন হওয়া, অথবা নিজেই পদত্যাগ করা'। পাশে বসে রতন টাটা শুধু দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন বিষয়টি এতদুর পর্যন্ত গড়িয়েছে বলে। শান্তভাবেই উত্তর দিয়েছিলেন সাইরাস মিস্ত্রি। তিনি বলেন, আপনারা বোর্ড মিটিংয়ে যা ইচ্ছে করতে পারেন, আমি সেটাই করব, যা আমার ঠিক মনে হবে। এরপরই স্ত্রীকে টেক্সট ম্যাসেজ পাঠিয়ে বোর্ড রুমের দিকে এগিয়ে যান সাইরাস মিস্ত্রি।
কী
হয়েছিল
বোর্ড
মিটিংয়ে
নির্মাল্য়
কুমার
লিখেছেন,
বোর্ড
রুমে
গিয়ে
চেয়ারম্যানের
আসনেই
বসেন
সাইরাস
মিস্ত্রি।
এই
চেয়ারটি
অন্যান্য
চেয়ারের
থেকে
সামান্য
উঁচু
ও
কিছুটা
চওড়া।
এরপরই
বোর্ড
রুমে
আসেন
রতন
টাটা।
উল্লেখ্য,
সাইরাস
মিস্ত্রি
চেয়ারম্যান
হওয়ার
পর
এই
প্রথম
বোর্ড
মিটিংয়ে
এসেছিলেন
রতন
টাটা।
তিনি
এবং
অন্য়ান্য়
বোর্ড
সদস্যরা
আসতেই
উঠে
দাঁড়ান
সাইরাস
মিস্ত্রি।
বলেন,
দিনের
সমস্ত
এজেন্ডা
নিয়ে
আলোচনার
আগে
রতন
টাটা
ও
নীতীন
নোরিয়ার
কিছু
বলার
আছে।
এরপরই
সাইরাস
মিস্ত্রির
বিরুদ্ধে
অনাস্থা
প্রস্তাব
এনে
তাঁকে
পদ
ছাড়তে
বলা
হয়।
ওইদিন
সকল
বোর্ড
সদস্য়রা
মিলে
কার্যত
তাঁকে
কোনঠাসা
করেছিলেন
বলে
ব্লগে
লিখেছেন
নির্মাল্য
কুমার।
বোর্ড মিটিং থেকে বিধ্বস্ত অবস্থায় ফিরে এসে নিজের জিনিসপত্র গোছানোর সময়ে পরেরদিন আসতে হবে কিনা তাও জানতে চান সাইরাস মিস্ত্রি। কিন্তু তার আর প্রয়োজন নেই বলে টাটাদের পক্ষে জানিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে ততক্ষণে সংবাদমাধ্যমেও খবর চলে গিয়েছে। বম্বে হাউসের বাইরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছে ওবি ভ্যান। সাংবাদিকরাও অধীর আগ্রহে সাইরাস মিস্ত্রির অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু সেদিন সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়েই বম্বে হাউস ছেড়েছিলেন সাইরাস মিস্ত্রি।