গোগি বনাম টিল্লুর কলেজের দোস্তি যেভাবে গ্যাং-ওয়ারে পরিণত হয়েছিল, চমকপ্রদ সে ঘটনা
গোগি বনাম টিল্লুর কলেজের দোস্তি যেভাবে গ্যাং-ওয়ারে পরিণত
গ্যাংস্টার জিতেন্দ্র ওরফে গোগিকে আদালতের ভিতরে ঢুকে গুলি করে হামলাকারীরা। এই হামলাকারীরা টিল্লু তাজপুরিয়া গ্যাংয়ের বলে মনে করছে পুলিশ। আদালতের ভেতরে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছে এবং একজন আইনজীবী গুরুতর আহত হয়েছেন। পুলিশ মনে করছে এটা একটা গ্যাং-ওয়ার। কিন্তু কলেজের প্রতিদ্বন্দ্বী দুই 'বন্ধু' কী করে গ্যাংস্টার হয়ে উঠল, সে কাহিনি চমকপ্রদ।
গ্যাং-ওয়ারের বীজ বোনা শুরু সেদিন থেকে
শহরের দুই গ্যাং-স্টারের মধ্যে লড়াই এদিন প্রত্যক্ষ করল রাজধানী শহর। জিতেন্দ্র গোগি বনাম টিল্লু তাজপুরিয়ার কলেজের দিনগুলি থেকেই এই গ্যাং-ওয়ারের বীজ বোনা শুরু হয়েছিল। গ্যাংস্টার গোগি এবং টিলু তাজপুরিয়ার মধ্যে বিরোধের শুরু কলেজ জীবনেই। তারা একসময় বন্ধু ছিল। ২০১০ সালে দিল্লিতে একটি কলেজ ছাত্র ইউনিয়ন নির্বাচনের মধ্য দিয়েই তাঁদের লড়াই শুরু হয়েছিল। পরবর্তীকালে তাঁরা নিজের নিজের গ্যাং তৈরি করে গ্যাং-স্টারে পরিণত হয়। যার পরিণতিতেই এদিনের গ্যা-ওয়ার।
আগেও গ্যাং-ওয়ার মুখোমুখি কলেজের দুই দোস্ত
২০১৮ সালে বুরারিতে গোগি বনাম টিল্লু গ্যাংয়ের সদস্যদের মধ্যে একটি গ্যাং-ওয়ার হয়েছিল। সেই গ্যাং-ওয়ারেও তিনজন নিহত হন এবং পাঁচজন আহত হয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত দুই দলের মধ্যে লড়াইয়ে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে। এতদিনে তাঁদের গ্যাংওয়ারে এক গ্যাংস্টার নিহত হলেন।
গ্যাংস্টার জিতেন্দ্র ছিল মোস্ট ওয়ান্টেড
শুক্রবার নিহত গ্যাংস্টার জিতেন্দ্র মন ওরফে গোগি হল দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তের আলিপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি দিল্লি পুলিশের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় শীর্ষে ছিলেন এবং তিহার জেল থেকে দুবাইয়ের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা দাবি করার অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। জিতেন্দ্র ওরফে গোগি কারাগারের ভিতরে থেকে তোলাবাজি, অপহরণ এবং খুনসহ তার গ্যাংয়ের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ। জিতেন্দ্র গোগি তিনবার পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়েছিলেন। ২০১৬ সালের ৩০ জুলাই সকালে তিনি বাহাদুরগড়ে দিল্লি পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়ে যান।
টিল্লু তাজপুরিয়ার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা
তিহার জেলে থাকা টিল্লু তাজপুরিয়াও কারাগারের ভিতরে থেকে তার গ্যাং পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ। দুটি গ্যাংয়ের মধ্যে যুদ্ধ ২০১০ সালে শুরু হলেও ২০১৩ সালে এটি আরও তীব্র হয়। পুলিশের হাতে আরেক গ্যাংস্টার নিহত হওয়ার পর থেকেই তারা সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হয়। একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে।
দুই গ্যাংস্টারের লড়াই, একজন নিহত একজন জেলে
২০১৩ সালে কুখ্যাত গ্যাংস্টার নিতু দাবোদিয়া পুলিশ এনকাউন্টারে মারা যায়। তারপর নিজেকে দিল্লির ডন বলে পরিচয় দেওয়া নীরজ বাওয়ানিয়াকে জেলে যেতে হয়। তারপরই জিতেন্দ্র গোগি এবং টিল্লু তাজপুরিয়ার মধ্যে আধিপত্যের লড়াই তীব্রতর হয়।
দুই দলের মধ্যে গত দশ বছর ধরে যুদ্ধ চলছে
শুক্রবার হামলাকারীরা আইনজীবীদের পোশাক পরে হানা দিয়েছিল আদালতে। আইনজীবীর পোশাকে আদালতে ঢুকে জিতেন্দ্র মন ওরফে গোগিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। দিল্লির রোহিণী আদালতের ২০৬ নম্বরে জিতেন্দ্রকে বিচারকের সামনে হাজির করা হয়েছিল। তখনই ঘটে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা। সেইসঙ্গে ১০ বছরের লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটে।