মোদীর ডাকে ৯ মিনিটের ব্ল্যাকআউট, কেমন আছে দেশের বৈদ্যুতিক গ্রিডগুলি?
জনতা কার্ফুর পর ফের একবার দেশবাসীর কাছে সময় চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। করোনার লড়াইয়ে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য রবিবার রাতে ৯ মিনিট সময় চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে আগের বারের মতো বিকালের বদলে এবার তিনি সময় চাইলেন রাতের বেলা। তবে এবারের আবেদনের জেরে ঝুঁকির মধ্যে পড়ার মুখে ছিল দেশএর বিদ্যুৎ গ্রিডগুলি।
কী হয় গতরাতে?
রাত ৯টা বাজার আগে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১১৭ গিগাওয়াট। চার-পাঁচ মিনিটের মধ্যে তা ৮৫.৩ গিগাওয়াটে নেমে যায়। বিদ্যুৎ সরবরাহের এই ওঠা নামায় ভেঙে পড়বে না তো গ্রিডগুলি? তবে রাত ৯টা ৯ মিনিট বাজতেই বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়ে পৌঁছে যায় ১১০ গিগাওয়াটে। তবে ভালো খবর যে বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনও ব্যঘাত ঘটেনি।
নজর রাখছিলেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী আর কে সিংহ
এই পুরো সময় বিদ্যুৎ সরবরাহের চাহিদার উপর নজর রাখছিলেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী আর কে সিংহ। সঙ্গে ছিলেন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ও বণ্টন সংস্থার উচ্চপদস্থ ইঞ্জিনিয়াররা।
প্রধানমন্ত্রীর আবেদন
গত সপ্তাহের শুক্রবার এক টুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, '৫ এপ্রিল রবিবার রাত ৯ টায় সকলের ৯ মিনিট চাইছি। ৫ এপ্রিল রাত ৯টায় ঘরের সমস্ত লাইট জ্বালিয়ে ঘরের বাইরে , বারান্দায় দাঁড়িয়ে ঘরের লাইট বন্ধ রাখুন। মোমবাতি, বা মোবাইলের লাইট জ্বালান। এই আলোর উজ্জ্বলতায় করোনার অন্ধকার দূর হবে। এই আলোর আয়োজনের সময় , রাস্তায় বা পাড়ায় যেন কেউ না বের হন। নিজের ঘরের ব্যালকনি থেকেই এই আলো জ্বালানোর উদ্যোগ নিতে হবে।'
পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য উচ্চপর্যায়ের বৈঠক
প্রধানমন্ত্রীর ব্ল্যাকআউটের এই ঘোষণার পরেই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করে বিদ্যুত মন্ত্রক। বিদ্যুতমন্ত্রী আরকে সিং ও পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের উচ্চপদস্থ কর্তারা এই বৈঠকে যোগ দেন। এই বৈঠকেই মন্ত্রী ও কর্তারা আলোচনা করেন যে প্রধানমন্ত্রীর এই আবেদনের জেরে কী প্রভাব পড়বে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে।
কী আশঙ্কা করা হয়?
মনে করা হয়, যে নটার সময় সবাই যদি আলোর সঙ্গে সব বৈদ্যুতিক যন্ত্র নিভিয়ে দেয়ওয়া হয় এবং তারপর নটা দশ নাগাদ আবার চালু করা হয়; তাহলে অল্প সময়ের মধ্য ১০-১৫ গিগাওয়াট লোড কমে গিয়ে আবার ফিরে আসবে। আর এর জেরে বসে যেতে পারে দেশের পাওয়ার গ্রিডগুলি।
পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক রাখতে পদক্ষেপ
এই পরিস্থিতিতে সব স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনে হাইড্রো ও গ্যাস পাওয়ারের ব্যাকআপের কথা বলা হয়। মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছিল এই সব ব্যবস্থাই রাখা হবে। তবে এত সমস্যা তৈরি হতে পারে বুঝেই শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর আবেদনের বিষয়টি স্পষ্ট করে দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর আববেদনের স্পষ্টীকরণ
প্রধানমন্ত্রীর এই আবেদনের মধ্যে আলো ছাড়া অন্য কোনও বৈদ্যুতিক যন্ত্র বন্ধের কথা নেই বলে স্পষ্ট করা হয় কেন্দ্রের তরফে। ৯ মিনিটের জন্য মোমবাতি, প্রদীপের আলো জ্বালানোর সময় কম্পিউটার, ফ্যান, এসি বন্ধ করার দরকার নেই বলে স্পষ্ট করে সরকার। এই পদক্ষেপের ফলে শেষ পর্যন্ত বেঁচে যায় গ্রিডগুলি।