
তিন দিক ঘিরে গুলিবর্ষণ, ছত্তিশগড়ের মাওবাদী হামলায় কীভাবে শহিদ ২২ জওয়ান?
শনিবার ছত্তিসগড়ের মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছিল প্রায় ২০০০ নিরাপত্তারক্ষী৷ আচমকা মাওবাদীরা গুলি চালাতে শুরু করে৷ মাওবাদীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে শনিবারই প্রাণ হারান পাঁচ জওয়ান৷ এরপর গতকাল মৃত জওয়ানের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২২৷ আরও ২৩ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ তবে কী ঘটেছিল ছত্তিশগড়ে?

মাওবাদীদের ধরতে অভিযান ২০০০ জওয়ানের
রবিবার ছত্তিশগড় পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল পুরো ঘটনা জানিয়েছেন৷ পুলিশের ডিজি জানান, শনিবার প্রায় ২০০০ নিরাপত্তারক্ষী মাওবাদীদের ধরতে অভিযান চালান৷ ওই অভিযান চলে সুকমা ও বিজাপুর জেলায়৷ এরপর শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ আচমকা মাওবাদীরা গুলি চালাতে শুরু করে৷ দীর্ঘক্ষণ দুই পক্ষের মধ্য়ে গুলি বিনিময় চলে৷ এই ঘটনায় কোনও মাওবাদী মারা গিয়েছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি৷

তিন দিক থেকে ঘিরে গুলিবর্ষণ
রবিবার সাম্প্রতিককালের নজিরবিহীন মাও হামলায় শহিদ হয়েছেন ২২ জওয়ান৷ সিআরপিএফ-এর তদন্ত প্রক্রিয়া চলার সঙ্গে সঙ্গে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ জানা গিয়েছে, জওয়ানদের তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে হামলা চালায় মাওবাদীরা৷ সিআরপিএফ প্রধানের মতে, তাঁর জাওয়ানরা আচমকা আক্রমণ মুখে পড়ে৷ যা কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে৷ সম্ভবত উপায়হীন পরিস্থিতি তৈরি করেছিল মাওবাদীরা৷ জানা গিয়েছে, নিজেদের জখম সঙ্গীদের যখন অন্য জওয়ানরা সেখান থেকে সরানোর চেষ্টা করছিলেন, তখনও থামেনি গুলিবর্ষণ।

একযোগে হামলা চালায় ৪০০ মাওবাদী
সিআরপিএফ আধিকারিকদের দাবি, একযোগে হামলা চালায় ৪০০ মাওবাদী৷ তারা জঙ্গলের তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেছিল জওয়ানদের৷ এরপর শুরু হয় গুলিবর্ষণ ৷ যেখানে হামলা হয়, ছত্তিশগঢ়ের বীজাপুরের জঙ্গলের সেই জায়গাটি তুলনামূলক গাছপালাবিহীন ফাঁকা৷ ফলে আড়াল থেকে লড়ে জবাব দেওয়ার সুবিধা পাননি জাওয়ানরা৷

কয়েক ঘণ্টা মেশিনগান থেকে গুলি চালায় মাওবাদীরা
সূত্রের খবর, একটানা কয়েক ঘণ্টা মেশিনগান থেকে গুলি চালায় মাওবাদীরা৷ এইসঙ্গে একের পর এক আইইডি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। যার ফলশ্রুতি ২২ জওয়ানের মৃত্যু৷ এর মধ্যে ১৭ জওয়ানকে জখম অবস্থায় জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়৷ পরে হাসপাতালে তাঁদের মৃত্যু হয়৷ জানা গিয়েছে, শহিদ ২২ জওয়ানের মধ্যে ৮ জন ছিলেন কোবরা কমান্ডো৷ একজন বাস্তারিয়া ব্যাটেলিয়নের সদস্য৷ ৮ জন ডিআরজি, বাকি ৫ জন স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের সদস্য ছিলেন৷

ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন অমিত শাহ
ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর নির্দেশে ঘটনাস্থানে পৌঁছেছেন সিআরপিএফের ডিরেক্টর জেনারেল কুলদীপ সিং৷ সিআরপিএফ প্রধানের মতে, তাঁর জওয়ানরা আচমকা আক্রমণ মুখে পড়ে৷ যা কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে৷ সম্ভবত উপায়হীন পরিস্থিতি তৈরি করেছিল মাওবাদীরা৷ এদিকে, আজই বীজাপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা করবেন সিআরপিএফ প্রধানের সঙ্গে৷ বীজাপুরে হাসপাতাল গিয়ে আহত জওয়ানদের সঙ্গেও দেখা করবেন৷