দেশজুড়ে যোগাযোগের ভাষা হোক হিন্দি, এক জাতি এক ভাষার পক্ষে সওয়াল অমিত শাহের
হিন্দি ভাষার উপর ফের জোর দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দেশবাসীর উদ্দেশ্যে পরামর্শ দিয়েছেন, বিভিন্ন রাজ্যের মানুষের একে অপরের সঙ্গে হিন্দিতে কথা বলা উচিত। দেশের বেশিরভাগ জায়গাতেই ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়। সেই কারণে ইংরেজিতে নয়, হিন্দি ভাষার উপর জোর দিতে চাইছে মোদী সরকার।
ভাষা কমিটির বৈঠক
সংসদীয় সরকারি ভাষা কমিটির ৩৭ তম বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দেওয়া উদ্ধৃতি উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, সরকার পরিচালনার সমস্ত কাজ যাতে হিন্দি ভাষার মাধ্যমে হয়। এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই হিন্দি ভাষার গুরুত্ব আরও অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে বলে মত ভাষাবিদদের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, হিন্দি হবে ইংরেজির বিকল্প ভাষা। আঞ্চলিক ভাষার ক্ষেত্রে তিনি তা বলতে চাননি। আঞ্চলিক ভাষার থেকেই শব্দ নিয়ে হিন্দি আরও নমনীয় আর ও গ্রহণযোগ্য করে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
হিন্দিকে মর্যাদা
অমিত শাহ সরকারি ভাষা কমিটির চেয়ারপার্সন এবং বিজেডির বি মেহতাব ভাইস চেয়ারপার্সন। পাশাপাশি অমিত শাহ আরও বলেছেন, 'এখন সময় এসেছে গোটা দেশ এক ভাষা প্রচলন করা।' হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা করতে আগেই সোচ্চার ছিল বিজেপি। শাহ মনে করেন, হিন্দির ক্ষমতা আছে দেশকে এক সূত্রে ঐক্যবদ্ধ করার। সেই কারণে ফের এক দেশ, এক ভাষার পক্ষে সওয়াল করেন তিনি। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দেশের মধ্যে ভিন্ন ভাষা-ভাষীর মানুষ রয়েছেন। তাঁরা যখন নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন যোগাযোগ স্থাপন করেন, সেই যোগাযোগ স্থাপনের ভাষা হওয়া উচিত হিন্দি।
হিন্দি শিক্ষায় মনোযোগ
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিন্দি ভাষাকে আরও জোরদার করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, স্কুলে নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়াদের হিন্দির প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি হিন্দি শিক্ষার পরীক্ষায় আরও মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভার ৭০ শতাংশ কাজ এখন হিন্দিতে করা হচ্ছে। বেশিরভাগ কাজে হিন্দির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। হিন্দি ভাষাকে শক্তিশালী করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। উত্তর-পূর্বের আটটি রাজ্যে ২২ হাজার হিন্দি শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। এই রাজ্যগুলোর উপজাতি সম্প্রদায় গুলো নিজের ভাষাকে দেবনাগরীতে রূপান্তরিত করেছে। সরকারি কাজের ক্ষেত্রে হিন্দি ভাষার ব্যবহারে জোরদার করতে পরামর্শ দিচ্ছেন শাহ।
এক জাতি এক ভাষা
২০১৯ সালে এক জাতি এক ভাষার ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল। তিনি সেইসময় বলেছিলেন, একাধিক ভাষার সমন্বিত দেশ ভারত। প্রতিটি ভাষার আলাদা আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু গোটা বিশ্বের কাছে দেশের ও জাতির পরিচয় হিসেবে হিন্দি ভাষাকে জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা করার কথা বলা হয়। তার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছিল, হিন্দি এমন একটি ভাষা, যা গোটা দেশকে এক সুতোয় বেঁধে রাখতে পারে। গোটা দেশে সবথেকে বেশি হিন্দি ভাষায় কথা বলেন মানুষ। এরপরই শাহ সুর নরম করে জানিয়েছেন, হিন্দি কারোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামছে না। শুধু পরিপূরক হয়ে থাকতে চায়।