
অযোধ্যা মামলার সুপ্রিম রায়ের বিরুদ্ধে এবার রিভিউ পিটিশন দাখিলের পথে হিন্দু মহাসভা
এবার অযোধ্যা মামলার প্রেক্ষিতে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল করতে চলেছে অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা। জানা গিয়েছে ৯ ডিসেম্বর এই আবেদন জমা দিতে চলেছে তারা। তাদের দাবি রায়ে মুসলিম পক্ষকে দেওয়া পাঁচ একর জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল। সেই রায়ের বিরুদ্ধেই আবেদন করতে চলেছে হিন্দু মহাসভা।

রায়ে খুশি নয় হিন্দু মহাসভা
হিন্দু মহাসভা জানিয়েছে, তারা রায়ের কপি খতিয়ে দেখেছে। এর বিরুদ্ধে তারা রিভিউ পিটিশন দাখিল করবে। অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার বর্তমান সভাপতি তথা আইনজীবী শিশির চতুর্বেদী বলেছেন, আদালতের এই ধরনের আদেশে তাদের তীব্র বিরোধিতার কথা জানিয়েছে। যদি প্রমাণিত হয় মন্দির সেখানে ছিল, তাহলে জমি কেন তাদের(সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড) দেওয়া হবে, প্রশ্ন তুলেছে হিন্দু মহাসভা।

এলাহাবাদেররায়ের বিরুদ্ধেও আবেদন জানিয়েছিল মহাসভা
২০১০ সালে অযোধ্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধেও আবেদন করেছিল তারা। ২০১১ সালে সেই আবেদন করেছিলেন তৎকালীন সভাপতি কমলেশ তিওয়ারি। ১৮ অক্টোবর লখনৌতে নিজের বাসভবনে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। হজরত মহম্মদের বিরুদ্ধে মন্তব্যের জন্যই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।

তিওয়ারিকে মহসভার প্রধানের পদ থেকে সরানো হয়
হিন্দু মহাসভার বর্তমান সভাপতি তথা আইনজীবী শিশির চতুর্বেদী জানিয়েছেন, একবছরের বেশি আগে তিওয়ারিকে হিন্দু মহাসভার পদ থেকে সরানো হয়েছিল। সেই জন্য তিনি কমলেশ তিওয়ারির পক্ষে এই মামলা নিয়ে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নির জন্য আবেদন করেছিলেন বলে জানিয়েছেন।

রিভিউ পিটিশন দাখিল মুসলিম পক্ষের
এদিকে অযোধ্যা মামলার রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আজ রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে চারটি পক্ষ। পাশাপাশি ২ ডিসেম্বর এই সংক্রান্ত প্রথম রিভিউ পিটিশনটি দাখিল করেছিল জমিয়ত উলেমায়ে হিন্দ। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক মৌলনা ওয়ালি রহমানি জানিয়েছেন, মুসলিমরা বিচার বিভাগকে বিশ্বাস করেন। কিন্তু সেই বিশ্বাস সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেই দুর্বল হয়ে গিয়েছে। তিনি আরও দাবি করেছেন, দেশের ৯৯ শতাংশ মুসলিম চান অযোধ্যার রায় নিয়ে রিভিউ পিটিশন দাখিল করা হোক।

কী রায় দিয়েছিল আদালত?
৯ নভেম্বর বহু প্রতিক্ষিত অযোধ্যা জমি বিতর্কের রায় ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিমকোর্টের এই ঐতিহাসিক রায়ে বিবাদের মূলে থাকা ২.৭৭ একর জমিটি হিন্দুদের দেওয়ার কথা বলা হয়। এবং তা তৈরির জন্য তিনমাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে ট্রাস্ট গঠন করতে হবে বলেও জানিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি শীর্ষ আদালত জানায়, ১৯৯২ সালে মসজিদ ভাঙা বেআইনি ছিল। এছাড়া মুসলিমপক্ষকে অযোধ্যাতেই পাঁচ একর জমি দিতে বলে শীর্ষ আদালত।

কিসের ভিত্তিতে রায়?
প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চের এই রায়তে বলা হয়, জমির উপর মালিকানার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিমদের দেওয়া প্রমাণের চেয়ে আরও ভালো প্রমাণ দিয়েছিল হিন্দু পক্ষ। জমির মালিকানা কখনও বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে দেওয়া যায় না। মালিকানা স্থির করতে দরকার প্রমাণ। তাই বিতর্কিত জমি মন্দিরের জন্য হস্তান্তর করা হচ্ছে।