কী কারণে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের কাট-অফ বছর ২০১৪?, খোলসা করলেন অসমের হিমন্ত বিশ্ব শর্মা
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের কাট-অফ বছর ২০১৪ কেন? খোলসা করলেন অসমের মন্ত্রী তথা বিজেপি মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তার কথায়, এত বছর ধরে করে আসা জাতীয় কংগ্রেসের ভুল শুধরাতেই নাগরিকত্ব আইনে কাট-অফ বছর ২০১৪ রাখা হয়েছে। কংগ্রেসের সেই ভুলের বোঝা বইতে হচ্ছে বিজেপিকে, এরকমই অভিযোগ করলেন অসমের এই বিজেপি নেতা।
গুয়াহাটিতে রাহুলের সমাবেশের আগে বিজেপির শক্তি প্রদর্শন
শুক্রবার গুয়াহাটির জাগি রোডে নাগরিকত্ব সংশধী আইনের সমর্থনে করা এক বিশাল ব়্যালিতে এই কথাগুলি বলেন বিজেপি নেতা হিমন্ত শর্মা। প্রসঙ্গত, শনিবার নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশে সামিল হতে গুওয়াহাটি যাচ্ছেন কংগ্রেস নেতা রাগুল গান্ধী। এরই আগে শুক্রবার রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনই ছিল হিমন্তের এই ব়্যালির মূল উদ্দেশ্য। সিএএ পরবর্তী হিংসার পরে এটি ছিল গুয়াহাটিতে সব থেকে বড় রাজনৈতিক সমাবেশ। এই সমাবেশে উপস্থিত ছইলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল ও অসম বিজেপির সভাপতি রঞ্জিত কুমার দাসও।
হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বক্তব্য
সমাবেশে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, 'নাগরিকত্ব আইনে কাট-অফ বছর ২০১৪ রাখা হয়েছে কারণ বিজেপিকে কংগ্রেসের এত বছরের ভুলের বোঝা বয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে। ১৯৭২ সাল থেকে কংগ্রেস এই ভুল করে এসেছে। অসমে ১৯৭২ সাল থেকে অনুপ্রবেশকারী ও শরণার্থীরা ভিড় করছেন। তবে ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে একটি পিপড়েও এই রাজ্যে আসতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও বলেন যাতে সে দেশের হিন্দুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হয়।'
'নতুন কোনও শরণার্থীকে অসমে জায়গা দেওয়া হবে না'
গত ৭ দশকের শিংহভাগই অসমে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। এদিকে হিমন্ত অসমবাসীকে ফের একবার আস্বস্ত করেন যে নতুন কোনও শরণার্থীকে এই রাজ্যে আর জায়গা দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, 'নতুন এই আইনের ভিত্তিতে যেই ৩ থেকে ৪ লক্ষ মানুষ আবেদন করতে পারবেন তারা ইতিমধ্যেই এই রাজ্যে আছেন। তারা নিজেদের ক্ষমতায় বাড়িও তৈরি করে নিয়েছেন। তাদের কয়েকজন বিধায়ক পর্যন্ত হয়েছেন।'
কংগ্রেসকে তোপ হিমন্তের
বিজেপি নেতা এরপর কংগ্রেসকে তোপ দেগে বলেন, 'কংগ্রেস এই রাজ্যে মুসলিমদের থাকতে দেওয়ার পক্ষে। এর আগে যখন রাজীব গান্ধী বা পিভি নরসিমহা রাওয়ের আমলে এই আইন সংশোধিত হয়েছিল তখন রাজ্যে কোনও প্রকার আন্দোলন বা বিক্ষোভ ছিল না কারণ সেই আইনে চাচা ও মামাদেরও অন্ত্রভুক্তির কথা ছিল।'
অসমে অশান্তি
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সিএবি গৃহীত হওয়ার পর থেকেই অসম জুড়ে এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। বিক্ষোভ চরম আকার নেয় রাজ্যসভায় বিলটি পাশ হওয়ার পরে। সেই বিক্ষোভ হিংসার চেহারা নিলে ৫ জন প্রাণ হারান সে রাজ্যে। এরপরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অসমের প্রায় সব জেলাতেই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয় বেশ কয়েকদিন। কার্ফুও জারি থাকে গুয়াহাটি, তেজপুর, ডিব্রুগড়ের মতো জায়গিগুলিতে। তবে ধীরে ধীরে সেখানে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে দাবি।