হিজাব অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন নয়, হাইকোর্টে স্পষ্ট জানাল কর্নাটক সরকার
কর্নাটক সরকার সোমবার হাইকোর্টকে জানিয়েছে যে হিজাব অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন নয় এবং তাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে রাখা উচিত। প্রসঙ্গত, কর্নাটক হাইকোর্টে হিজাব বিতর্ক নিয়ে শুনানি চলছে। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ ফের এই বিষয় নিয়ে শুনানি হবে।
এক অনলাইন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানা গিয়েছে যে অ্যাডভোকেট জেনারেল প্রভুলিঙ্গ নাভাডগি, যিনি বাসবরাজ বোম্মাই সরকারের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছিলেন, তিনি হাইকোর্টকে নিজের যুক্তি দেখিয়ে বলেন, 'এটি অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন কিনা তা নির্ধারণ করার জন্য তিনটি পরীক্ষা রয়েছে। এটা কি মূল বিশ্বাসের অংশ? এই অনুশীলন কি সেই ধর্মের মৌলিক? সেই প্রথা না মানলে ধর্ম কি শেষ হয়ে যাবে?’ কর্নাটক হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ঋতু রাজ অবস্তির সঙ্গে বিচারপতি কৃষ্ণা দীক্ষিত এবং জেএম খাজির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ অ্যাডভোকেট জেনারেলকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে প্রতিষ্ঠানগুলিতে হিজাবের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে কি না।
এই প্রশ্নের জবাবে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, 'সরকারি আদেশের এই পরিচালনাগত অংশটি প্রতিষ্ঠানের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, যারা এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’ তিনি আরও বলেন, 'সরকারী আদেশ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইউনিফর্ম নির্ধারণের জন্য সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দেয়। কর্নাটক শিক্ষা আইনের প্রস্তাবনা হল ধর্মনিরপেক্ষ পরিবেশ গড়ে তোলা।’ কর্নাটক সরকারের আইনজীবী এও জানিয়েছিলেন যে সরকার কোনওভাবেই ইউনিফর্মে ধর্মকে নিয়ে আসার পক্ষে নয়। হাইকোর্টে শুনানি চলাকালীন অ্যাডভোকেট জেনারেল ডক্টর ভীম রাও আম্বেদকরের বিবৃতিকে উদ্ধৃত করেন, যেখানে তিনি ধর্মীয় নির্দেশাবলী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। বিচারপতি দীক্ষিত জবাবে বলেন, 'কার্ল মার্কস যা বলেছেন তা আমাদের সংবিধান প্রণয়ন করেনি, ধর্ম হল জনসাধারণের কাছে আফিমের নেশার মতো।’
মূলতঃ এই হিজাব কাণ্ড কর্নাটক ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন কোণায় ছড়িয়ে পড়েছে। হিজাব কাণ্ডের জেরে বহু পড়ুয়া পরীক্ষায় বসতে পারেননি। স্কুল–কলেজে হিজাব পরা নিষিদ্ধ হওয়ায় অনেক পড়ুয়াকে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে কারণ তারা হিজাব খুলতে অস্বীকার করেছে। ইতিমধ্যেই এই হিজাব কাণ্ড সুপ্রিম কোর্টেও পৌঁছেছে কিন্তু শীর্ষ আদালত এখনই এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে নারাজ