নেই ট্রেনের টিকিট, মুম্বইয়ের স্টেশনেই অপেক্ষারত অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের
নেই ট্রেনের টিকিট, মুম্বইয়ের স্টেশনেই অপেক্ষারত অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের
মহারাষ্ট্রে নতুন কোভিড নিষেধাজ্ঞার আওতায় অপ্রয়োজনীয় ব্যবসাগুলি বন্ধ রাখা হবে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। পরিযায়ী শ্রমিকরা তাই এবার বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য টিকিট কাটার লাইনে ভিড় জমিয়েছেন মুম্বইয়ের লোকমান্য তিলক টার্মিনাস (এলটিটি) ও ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাসে (সিএসএমটি)। এলটিটির এক রেল কর্মী বলেন, 'উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের ট্রেন ধরতে চান এমন শ্রমিকদের বহু প্রশ্ন রয়েছে। আমি তাঁদের বলেছি সংরক্ষিত টিকিট কাটতে।’
টিকিট কাউন্টারে ভিড়
মঙ্গলবার দুপুরে এলটিটির টিকিটের লাইনে অপেক্ষারত লখনউয়ের ৩০ বছরের নিয়াজ আহমেদ বলেন, 'মহম্মদ আলি রোডে আমি লেবুর জল বিক্রি করি। আমি মুম্বইতে ১৫ বছর ধরে রয়েছি। আমি আমার স্ত্রী ও এক সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। আমার কাছে এখন বাড়ি নেই এবং রাস্তায় থাকতে হচ্ছে। আয়েরও কোনও উৎস নেই। বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর আমার কাছে চাকরি না থাকলেও আমি প্রতিদিন দু'বেলা খেতে তো পারব। এখানে আমি ক্ষিধেতে মরে যাব। রেল বলছে কোনো টিকিট নেই। আমি টিকিট ছাড়াই যাব এবং চেকার ধরনে আমি জরিমানা দিতেও রাজি রয়েছি।
নেই আশ্রয়, খাদ্য
আহমেদের মতো ২২ বছরের সূরয যাদব ও ৩৩ বছরের কৃষ্ণ কুমার নামদেব, উভয়ই মধ্যপ্রদেশের সাতনার বাসিন্দা। তড়িঘড়ি করে টিকিট বুক করার জন্য রিজার্ভেশন কাউন্টারে গিয়েও টিকিট পাননি। তাঁরা ঠিক করেছেন টিকিট না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা প্ল্যাটফর্মে ঘুমাবেন। যাদব বলেন, 'নেরুলের ছোট হোটেলে আমরা কাজ করি, মালিক বলেছে তিনি আমাদের টাকা দিতে পারবেন না তবে খাবারের ব্যবস্থা করে দেবেন। আমরা কি করব স্যার? আমরা আর অপেক্ষা করতে পারব না, আমাদের ফিরে যেতেই হবে। আমি জানি না গ্রামে আদৌও কোনও কাজ পাব কিনা কিন্তু কৃষি কাজের মতো কোনও কাজ করতেই হবে আমাদের।'
কাজ নেই অনেকের
সিএসএমটিতে মঙ্গলবার রাতে বিহারের একদল ক্যাটারার্স টিকিট কাউন্টার বন্ধ দেখে খুবই হতাশ ও ঘাবড়ে যান। পরের দিন টিকিট কাউন্টার না খোলা পর্যন্ত তাঁরা স্টেশনেই রাত কাটান। তাঁদের মধ্যে একজন ৩৬ বছরের রাজেশ কুমার দাস বলেন, 'আমরা হোটেলে কাজ করি এবং সিএসএমটিতে ক্যাটারিং পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত। আমাদের মালিক আমার মতো ৬০ জনকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। এখন আমরা কি করব? আমরা এখানে থাকার খরচ চালাতে পারব না। আমি জেনারেল কমপার্টমেন্টে যাওয়ার চেষ্টা করছি।'
উত্তরপ্রদেশ–বিহারের ট্রেন আসন ভর্তি
মধ্য রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শিবাজি সুতার বলেন, 'কোভিড-১৯-এর বৃদ্ধির জেরে, আমরা শুধুমাত্র কনফার্ম টিকিট কাটা রয়েছে এমন যাত্রীদের সফরে অনুমতি দিচ্ছি। যদি কোনও জায়গায় অতিরিক্ত ট্রেনের ঘোষণা থাকে তবেই ট্রেনের পরিষেবা পুনরুদ্ধার করা যাবে। অযথা জল্পনা ও আতঙ্কিত হয়ে টিকিট বুকিং না করার পরামর্শ দিচ্ছি সকলকে।' মধ্য রেলের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানিয়েছেন যে উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারের ট্রেনগুলি পরের কয়েক দিনের জন্য পুরোপুরি বুকিং করা হয়ে গিয়েছে।
দেশের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসে কীভাবে প্রতিদিনের কাজ সমালান মোদী, খোলসা করলেন 'পরীক্ষা পে চর্চায়'