হাথরস কাণ্ডের প্রতিবাদে আজও ফুঁসছে ভারত! ২০২০ সাল জুড়েই প্রশ্নের মুখে যোগী রাজ্যের নারী নিরাপত্তা
খুন হোক বা ধর্ষণ, নারী নির্যাতন হোক বা সাংবাদিক হত্যা ২০২০ সালেই ক্রমেই যেন অপরাধীদের স্বর্গ রাজ্য হয়ে উঠেছে উত্তরপ্রদেশ। এদিকে ২০১২ সালের দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডের পর আবারও এক পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী থাকে গোটা দেশ। অকুস্থল সেই যোগী রাজ্য। উচ্চবর্ণের চার ব্যক্তির দ্বারা নির্মম ভাবে ধর্ষিত হন উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ২০ বছর বয়সী এক দলিত তরুণী। যাতে আবারও শিহরিত হয়ে ওঠে গোটা দেশই।

হাথরস কাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা দেশ
গত ১৪ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশের হাথরসে তরুণী গণধর্ষণের শিকার হন ওই দলিত তরুণী। ঘটনার সময় ওই তরুণী মাঠে মায়ের সঙ্গে ঘাস কাটছিলেন বলে জানা যায়। সেই সময় উচ্চবর্ণের চার যুবক তার উপর পাশবিক অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ। পরবর্তীতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেই জীবনযুদ্ধে হার মানেন ওই তরুণী।

ওঠে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ
এদিকে এই ঘটনার রেশ ধরেই বড়সড় প্রশ্ন উঠে যায় উত্তরপ্রদেশের নারী নিরাপত্তা নিয়ে। সূত্রের খবর, এই অমানুষিক নির্যাতনের পর তরুণীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। উল্টে নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদেরই শাসানো হয় বলে অভিযোগ। এমনকী কোনও অজ্ঞাত কারণে রাতের অন্ধকারেই নির্যাতিতার দেহ ‘গোপনে' পুড়িয়ে ফেলারও ব্যবস্থা করে পুলিশ। যা নিয়েও তোলপাড় হয় রাজ্য-রাজনীতি।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের উল্লেখ নেই, দানা বাঁধে বিতর্ক
পরবর্তীতে ময়না তদন্তের রিপোর্ট সামনে এলেও সেখানে ধর্ষণের কোনও উল্লেখ নেই বলেই জানায় পুলিশ। নির্যাতিতার শরীরের একাধিক জায়গায় চোটের চিহ্ন থাকলেও ধর্ষণের কোনো প্রমাণ মেলেনি বলে জানান উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এডিজি ল অ্যন্ড অর্ডার প্রশান্ত কুমার। উল্টে অকারনেই ধর্ষণের প্রসঙ্গ তুলে যারা পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ করে তোলার চেষ্টা করেছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়ে রাখে পুলিশ। যা নিয়েও ফের দাঁনা বাঁধে বিতর্ক।

চাপের মুখে পড়ে সিট গঠন যোগী সরকারের
এদিকে হাথরস গণধর্ষণের প্রতিবাদে যখন ফুঁসছে গোটা দেশ তখন মৃতার পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে দেখা এমনকী এলাকায় সংবাদমাধ্যমের প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে স্থানীয় প্রশাসন। বিরোধীদের অভিযোগ, জাতপাতের কার্ড খেলে ভোট গোছাতেই উচ্চবর্ণের অপরাধীদের ধরতে গড়িমসি করছিল যোগী সরকার। যদিও পরবর্তীতে এই ঘটনায় যোগী সরকারের তরফে সিট গঠন করা হলেও সেই বিশেষ তদন্তকারী দলের তদন্ত এখন কার্যত থমকেই রয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেটিজেনরা
এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেটিজেনরা। হাথরস যাওয়ার পথে আটকানো হয় কংগ্রেস রাহুল গান্ধীকেও। কংগ্রেসের কর্মীদের সাথে কার্যত ধস্তাধস্তি হয় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের। যা নিয়েও তুমুল শোরগোল শুরু হয় রাজ্য-রাজনীতিতে। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়ে ফের বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়ে যায় যোগী সরকার। যদিও পরবর্তীতে ঘটনায় চার অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলেও জানা যায়।

ভেন্টিলেশন না সরলেও বু্দ্ধদেব ভট্টাচার্যের অবস্থার উদ্বেগ কিছুটা কেটেছে, কী জানাল হেলথ বুলেটিন