আন্দোলনকারীদের মধ্যে ভাঙন? কেন্দ্রের 'সংশোধিত' কৃষি আইনকে সমর্থন হরিয়ানার কৃষকদের!
কৃষক এবং কেন্দ্রের মধ্যকার পঞ্চম দফার বৈঠক বসেছিল শনিবার। তবে তাতেও পূর্ণাঙ্গ সুরাহা বের হয়নি। কারণ কৃষক নেতারা এখনও অনড়, প্রত্যাহার করতে হবে তিনটি কৃষক আইন। তবে এরই মাঝে ভারত বনধ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই সোমবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় কৃষিন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরের সঙ্গে দেখা করেন হরিয়ানার ২০ জন কৃষকের একটি ডেলিগেশন।
কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হরিয়ানার প্রতিনিধিদের
হরিয়ানার কৃষকদের এই ভাবে কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘিরে কৌতুহল তৈরি হয়। সেই বৈঠকের পর কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, হরিয়ানার কৃষক নেতাদের কয়েক জন এসে কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইনে তাঁদের সমর্থন জানিয়ে গিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, কেন্দ্রে যে সংশোধনী আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতেই তাঁরা খুশি।
কৃষক নেতারা কেন্দ্রের ফাঁদে পা দেননি
এর আগে ১ ডিসেম্বর, তৃতীয় দফার আলোচনার সময়ে শুধুমাত্র পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষক নেতাদের ডেকেছিল কেন্দ্র। এভাবে কৃষক আন্দোলনে ভাঙন ধরানোর কৌশল নিয়েছিল কেন্দ্র। আলাদা কমিটি গঠনের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। কৃষক নেতারা কেন্দ্রের সেই ফাঁদে পা দেয়নি। তবে এদিন হরিয়ানার কৃষকদের একাংশ যে ভাবে কেন্দ্রের পক্ষ নিয়েছে, তাতে ভাঙনের ইঙ্গিত স্পষ্ট।
কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে 'প্রোগ্রেসিভ ফার্মার্স'
তবে প্রশ্ন উঠেছে, যেই কৃষকরা কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন, তাঁরা কারা? কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, আলোচনায় অংশ নেওয়া এই ডেলিগেশন টিমের নাম 'প্রোগ্রেসিভ ফার্মার্স'। এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত কমল সিং চওহান। তবে তাতেও প্রশ্ন থেকে যায়, এই কৃষকরা কি দিল্লি সীমানায় আন্দোলনকারী কৃষকদের মধ্য থেকে এসেছেন?
আন্দোলনকারীদের মধ্যে ভাঙন?
এদিন বৈঠকের চলাকালীন ২০ জন কৃষকের এই প্রতিনিধি দলটি কৃষিমন্ত্রীকে জানান, সরকারের আনা নতুন তিনটি কৃষি আইন বাতিল করার দরকার নেই। প্রস্তাবিত কয়েকটি সংশোধনী আনলেই চলবে। কেন্দ্রও দু'টি সংশোধনীর প্রস্তাব দিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মত, এই আলোচনাটি আন্দোলনকারীদের মধ্যে ভাঙন ধরাতে একটি চাল হতে পারে কেন্দ্রের তরফে।
সিংহভাগ আন্দোলনকারী কৃষক নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড়
যদিও এখনও সিংহভাগ আন্দোলনকারী কৃষক নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। তাঁরা এই আইন প্রত্যাহার করতে চাপ বাড়াচ্ছে কেন্দ্রের উপর। এই বিষয়ে আলোচনা করতে ফের বুধবার বৈঠকে বসবে কৃষক-কেন্দ্র, দুই পক্ষ। এর আগের পাঁচটি বৈঠকেই কোনও রফাসূত্র বেরোয়নি। শেষ দিনের বৈঠকে কেন্দ্রে দুটি সংশোধনীর প্রস্তাব দিলে, কৃষক নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এই পরিস্থিতিতে এদিন বনধ সংগঠিত হবে সকাল ১১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত।