কর বা অর্থ ব্যবস্থা নয়, সমাজ ব্য়বস্থারও সংস্কার হবে জিএসটি দিয়ে, বললেন মোদী
জিএসটির নতুন নামকরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, জিএসটি দ্বারা উপকৃত হবেন গরীব ও ছোট ব্যবসায়ীরা, বললেন মোদী, ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ বলে মন্তব্য রাষ্ট্রপতির
অনেকেই অনেক আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু সেই সমস্ত আশঙ্কাই স্ট্রেট ব্যাটে বাউন্ডারির ওপারে পাঠিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জিএসটি চালু হলে প্রথম দু-একদিন সমস্যা হবে সেকথা মেনে নিলেও আখেরে যে দেশ নতুন ভবিষ্যতের দিকে এগোবে জিএসটির উদ্বোধনী ভাষণে সেকথাই জোর দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে কংগ্রেস যে কারণে এই অনুষ্ঠান বয়কট করে সেই কৃতিত্বের বিষয়টিও একা না নিয়ে ভাগ করে নিলেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১০ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরেই জিএসটি সংশোধনী বিল আনা হয়েছিল বলে এদিন ঐতিহাসিক জিএসটি নিয়ে গর্ববোধ করলেন আজকের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।
জিএসটি চালু হলে জিনিসের দাম বাড়বে, মার খাবে ছোট ব্যবসায়ীরা। এমনই আরও অনেক জল্পনা বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছিল দেশজুড়ে। কিন্তু ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুঝিয়ে দিলেন সব জল্পনাই অমূলক। বাস্তবে যেটা হতে চলেছে তা একেবারেই বিপরিত। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন জিএসটিতে গরীবদের কথা ভাবা হয়েছে, গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ছোট ব্যবসায়ীদের স্বার্থকেও। এমনকি জিএসটির দ্বারা পশ্চিমবঙ্গ সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিও উপকৃত হবে বলে সেন্ট্রাল হলে দাঁড়িয়ে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। জিএসটি চালু হলে সাময়িক দু-একদিন অসুবিধে যে হবে তাও মেনে নিয়েছেন তিনি। একটি ছোট্ট উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, পুরনো পাওয়ার দিয়েই নতুন চশমা করলেও দু-একদিন অসুবিধে হয়। তবে জিএসটি নিয়ে সবরকম অপপ্রচার বন্ধ করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। এমনকি জিএসটির নতুন সংজ্ঞা দেন তিনি, গুড অ্যান্ড সিম্পল ট্যাক্স।
It is remarkable that 18 meetings held so far, all decisions have been taken by consensus in the council: President Pranab Mukherjee. #GST pic.twitter.com/GvyNVNwiYy
— ANI (@ANI_news) June 30, 2017
এদিন সেন্ট্রাল হলের অনুষ্ঠানকে বয়কট করেছে কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, যে জিএসটি ইউপিএ আমলে কংগ্রেসের চিন্তাভাবনা, তা চুরি করে প্রধানমন্ত্রী সমস্ত কৃতিত্ব নিতে চাইছেন। তবে কংগ্রেসের সেই অভিযোগেরও এদিন গান্ধীগিরি স্টাইলে জবাব দিয়েছেন মোদী। নিজের ভাষণে তিনি বারবার করে বলেন, এই জিএসটি কোনও এক ব্যক্তি বা কোনও এক সরকারের কৃতিত্ব নয়। এই জিএসটি সমস্ত রাজ্য, রাজনৈতিক দল ও পূর্বতন সরকারের মিলিত প্রচেষ্টার ফল।
প্রধানমন্ত্রীর পরেই ভাষণ দিতে ওঠেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। একসময়ে এই জিএসটি সংশোধনী বিল তাঁর হাত দিয়েই পেশ হয়েছিল বলে আজকের জিএসটি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর কাছেও ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি। জিএসটি চালু হওয়ায় আগামী দিনে সমস্ত রকম কর অব্য়বস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে বলেও আশাপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি। এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত গত ১৪ বছরের ধৈর্যের ফল বলে নিজের বক্তব্য শেষ করেছেন তিনি। ভাষণ শেষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথভাবে বোতাম টিপে অ্যাপের মাধ্য়মে ঐতিহাসিক জিএসটির আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন তিনি।