এ যেন সিনেমার দৃশ্য, রেল লাইনে ঝাঁপিয়ে আত্মহত্যা রুখল রেল পুলিশ
এ যেন সিনেমার দৃশ্য, রেল লাইনে ঝাঁপিয়ে আত্মহত্যা রুখল রেল পুলিশ
একটি সরকারি রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) কর্মীরা একটি ১৮ বছর বয়সী ছেলেকে বাঁচিয়ে দিল। ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের থানে জেলার ভিট্টলওয়াদি রেলওয়ে স্টেশনে। জানা গিয়েছে একটি ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিল ওই যুবক। সতর্ক ছিলেন ওই রেল পুলিশ। তার দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং একটি সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আত্মহত্যা করা রুখে যায় ওই যুবকের। ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মাধ্যমে। যা এখন ইন্টারনেটে প্রশংসা পাচ্ছে।
বুধবার (২৩ মার্চ, ২০২২) বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। মাদুরাই এক্সপ্রেস যখন প্ল্যাটফর্মে টেনে নিয়ে যায়, তখন যুবক রেললাইনে ঝাঁপ দেয়, আত্মহত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে। কনস্টেবল হৃষীক্ষ মানে, যিনি ওই ১৮ বছর বয়সী যুবককে রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে লুটিয়ে পড়তে দেখে সন্দেহজনক হয়ে ওঠেন, তিনি তাঁকে উদ্ধার করতে ছুটে যান।
বীরত্বপূর্ণ ঘটনাটি একটি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এবং ওয়েস্টেন রেলওয়ে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছে। ঘটনার পর অফিসাররা ছেলেটিকে কল্যাণ রেলওয়ে থানায় নিয়ে যান এবং তার বাবা-মাকে ডেকে পাঠান। একজন অফিসারক বলেছেন যে কনস্টেবল মানে তার জীবনের পরোয়া করেননি, পরিবর্তে, তিনি ট্র্যাকের উপর ঝাঁপ দেন এবং ছেলেটিকে অন্য ট্র্যাকে ঠেলে দেন যেখানে কোনও ট্রেন আসার কথা ছিল না।
উন্নত দেশগুলিতে ১৫ বছর থেকে ২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি। যাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছে বা কারও যদি স্বামী বা স্ত্রী মারা গিয়ে থাকেন তাঁদের মধ্যে আত্মহত্যার ঘটনা অনেক বেশি।সারা পৃথিবীতে যতগুলো আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে তার মধ্যে প্রায় ৫৪ শতাংশ ঘটনা ঘটে ভারত এবং চিনে। আমাদের দেশে যত মানুষ আত্মহত্যা করেন তাঁদের ৬০ থেকে ৯০ শকাংশই কোনও না কোনও ভাবে মানসিক ব্যাধির শিকার।
যখন কোনও কারণবশত একজন ব্যক্তির দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায় এবং সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসারা তাঁর আর কোনও উপায় থাকে না বলে তিনি মনে করেন তখন তাঁর মধ্যে এই প্রবণতা দেখা যায়। কারণ তিনি মনে করেন যে তাঁর আর বেঁচে থাকার কোনও উপায় নেই। কেউ যদি কোনও মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পারেন তখন তাঁর মধ্যে এই প্রবণতা দেখা যায়, শারীরিক যন্ত্রণা অসহনীয় হলেও তাই। মুক্তির জন্য তিনি আত্মহননের পথ বেছে নেন। আত্মহত্যা মূলত দু'ধরণের হয়।
নিহতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা, বাড়ি সারাতে ২ লক্ষ টাকা আর ১ জনকে চাকরির প্রতিশ্রুতি মমতার
অনেক সময় কেউ পরিকল্পনা করে আত্মহত্যা করেন আবার কখনও দেখা যায় হঠাৎই কোনও ঝোঁকের বশে কেউ আত্মহত্যা করলেন। কোনও কারণে কেউ যদি অবসাদে ভোগেন বা অত্যাচারিত হন, তা হলেও তিনি আত্মঘাতী হতে পারেন। মানসিক অসুস্থতার আত্মহত্যার হার অন্য কারণের চেয়ে বেশি: যেমন বিষণ্ণতা, বাইপোলার মুড ডিজঅর্ডার, স্কিৎজোফ্রেনিয়া, ম্যানিয়া, পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার, মাদকাসক্তি এবং উদ্বেগ।
বহু ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল না হলে বা পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে না পারলে আত্মহননের পথ বেছে নেয়। কারও যদি প্রণয়ের সম্পর্ক ভেঙে যায় তা হলেও তিনি আত্মহত্যাপ্রবণ হতে পারেন। এছাড়াও বাড়িতে কোনও অশান্তির ফলে অপ্রীতিকর বা আকস্মিক কোনও ধাক্কার কারণেও কেউ আত্মহত্যা করতে পারেন। সম্প্রতি তরুণ-তরুণীরা অনলাইন গেম খেলেও আত্মঘাতী হচ্ছে, সেই খবর সংবাদমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে।
আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যক্তির ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। এই ব্যক্তি যদি বলে যে সে আর বেঁচে থাকতে চান না বা তাঁর কিছু ভালো লাগছে না তাহলে তাঁর কোনও কথা খুব একটা হালকা ভাবে নেওয়া উচিৎ নয়। সেই ব্যক্তির সঙ্গে সবসময় ইতিবাচক কথাবার্তা বলা উচিৎ। তাঁর কথায় গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ।