Shaurya Chakra-সম্মানে সম্মানিত হন বরুণ সিং! সাহসিকতার নজির জানলে স্যালুট জানাতে বাধ্য হবেন
হল না শেষ রক্ষা। সাতদিনের জীবনযুদ্ধে হার মানতেই হল গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিংকে। ব্যাঙ্গালুরুর সেনা হাসপাতালে আজ বুধবার সকালে প্রয়াত হন তিনি। বরুণ সিংয়ের প্রয়াণের খবর সামনে আসার পরেই শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। সিডিএস জেনারেল বিপিন রাওয়াতের কপ্টারেই ছিলেন বরুণ। ঘটনায় সস্ত্রীক বিপিন রাওয়াত সহ ১৩ জনের মৃত্যু হলেও বেঁচে যান বরুণ। এরপর থেকে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। কিন্তু আজ আরও চিকিৎসায় সাড়া দিলেন না বরুণ।

শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে
গ্রুপ ক্যাপ্টেনের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। কপ্টার দুর্ঘটনায় বেঁচে গেলেও বরুণ সিংয়ের শরীর ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। কার্যত হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে প্রত্যেকদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিলেন তিনি। কিন্তু সররকম ভাবে তাঁকে বাঁচানোর জন্যে চেষ্টা করা হচ্ছিল। কিন্তু প্রথম থেকেই পরিস্থিতি সঙ্কটজনক ছিল। কিন্তু সম্প্রতি চিকিৎসাতে সাড়াও দিচ্ছিলেন। কিন্তু গত ২৪ ঘন্টায় হঠাত করেই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। আর আজ বুধবার জীবন যুদ্ধে হার মানলেন ভারতীয় বায়ুসেনার জাবাজ এই অফিসার।

'সৌর্জ চক্র' সম্মানে সম্মানিতও করা হয়
গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিং সেনা পরিবারের মধ্যে থেকেই বড় হয়েছেন। বাবা ভারতীয় সেনার কর্নেল ছিলেন। যদিও এখন অবসর নিয়ে ভোপালে থাকেন। কিন্তু জীবনের একটা বড় সময়ে সেনবাহিনীতে থেকে দেশের জন্যে সেবা করে গিয়েছেন। বাবাকে দেখেই বরুণের সেনাতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন। আর তা বাস্তবায়িতও হয়। দীর্ঘদিন ধরে বায়ুসেনাতে কর্মরত ছিলেন তিনি। আর তা থাকাকালীন একাধিকবার তাঁর অবদানের জন্যে সম্মানিতও করা হয়েছে বরুণ সিংকে। এই বছর স্বাধীনতা দিবসে গ্রুপ ক্যাপ্টেনকে 'সৌর্জ চক্র' (Shaurya Chakra) সম্মানে সম্মানিতও করা হয়। তাঁকে এই সম্মান ২০২০ সালের একটি ঘটনার অবদানের জন্যে দেওয়া হয়েছে।

কি সেই ঘটনা?
Light Combat Aircrft (LCA)-এর স্কোয়াড্রনের উইং কমান্ডার ছিলেন বরুণ সিং। সিস্টেম চেক করার সময়ে যখন তিনি বিমান ওড়াচ্ছিলেন সেই সময়ে মাঝ আকাশে একটি ত্রুটি ধরা পড়ে। আর সেই জান্ত্রিক ত্রুটির কারনে দুর্ঘটনা ঘটে। বড়সড় বিপদের আশঙ্কা ছিল। অক্টোবর ১২ ২০২০ সালে এই ঘটনা ঘটে। মাঝ আকাশেই এই যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়লে তা সহজেই ধরে ফেলেন বরুণ সিং। আর খুব সাবধানে তা মাটিতে নামিয়ে আনেন। কিন্তু যখন বিমানটি ল্যান্ড কর ছিলেন তখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনের বাইরে ছিল। কিন্তু দক্ষতার সঙ্গে কারোর কোনও ক্ষতি না হয়ে বিমানটি সাবধানে মাটি ছোয়ে। আর এই কারনের জন্যে তাঁকে 'সৌর্জ চক্র' (Shaurya Chakra) সম্মানে সম্মানিতও করা হয়।

পরিবার দেশের সেবায় নিযুক্ত
গ্রুও ক্যাপ্টেন বরুণ সিং উত্তরপ্রদেশের দিবরিয়া জেলার রুদ্রপুর তহসিলের Kanholi গ্রামের বাসিন্দা ছিল। এই সময়ে ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদে কর্মরত ছিলেন। তামিলনাড়ুর ওয়েলিংটনের ডিফেন্স সার্ভিস স্টাফ কলেজ (DSSC)-এর একটু গুরুত্বপূর্ণ পদেও ছিলেন বরুণ সিং। গ্রুপ ক্যাপ্টেনের বাবা কর্নেল কে পি সিংও ভারতীয় সেনাতে ছিলেন। কর্নেল হিসাবে কাজ করেছেন সেনাবাহিনীতে। বর্তমানে গোটা পরিবার মধ্যপ্রদেশের ভোপালে থাকে। তবে বিরুন সিংয়ের পোস্টিং ছিল তামিলনাড়ুর ওয়েলিংটনে। পরিবার নিয়েই থাকতেন। বরুণ সিংয়ের সঙ্গেই থাকতেন তাঁর স্ত্রী এবং এক পুত্র এবং এক কন্যা। বরুণ সিংয়ের ভাইও ভারতীয় নৌসেনাতে কর্মরত। বরুণের প্রয়াণে শোকের ছায়া।
