করোনা আবহে অক্সিজেনের তীব্র সঙ্কট, রোগী ভর্তি বন্ধ সুরাতের দুই সরকারি হাসপাতালে
রোগী ভর্তি বন্ধ সুরাতের দুই সরকারি হাসপাতালে
দেশে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ওয়েভের মহামারির তীব্রতা ভয়ঙ্করভাবে দেখা দিয়েছে। দেশের প্রায় সব রাজ্যই এই সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করছে। দিল্লি, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশের মতো গুজরাতের হালও বেশ খারাপ। রাজ্যের একাধিক হাসপাতালে বেড–অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে রাজ্যের দু’টি বড় কোভিড–১৯ হাসপাতাল, নিউ সিভিল (এনসিএইচ) ও সুরাত মিউনিসিপ্যাল ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এসএমআইএমইআর) বুধবার তাদের গেট নতুন রোগীদের জন্য বন্ধ করে দিল। অক্সিজেন সরবরাহের অভাব দেখা দেওয়ার কারণেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে।
আগের রোগীদের জীবন সঙ্কটে পড়বে
এই দুই হাসপাতালে বেড ও প্রয়োজনীয় উপাদান থাকা সত্ত্বেও গুরুতর অসুস্থ রোগীদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এই দুই হাসপাতাল, যাতে হাসপাতালে ইতিমধ্যে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে যাতে কোনও সঙ্কটজনক পরিস্থিতি তৈরি না হয়। সোমবার পর্যন্ত অনেক অ্যাম্বুলেন্সই রোগীদের সারাদিন ধরে নিয়ে এসেছে। কিন্তু অক্সিজেনের ঘাটতির সঙ্কট তীব্রভাবে মোড় নেওয়ার ফলে, সরকারি হাসপাতালগুলিতেও পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছিল, অধিকাংশ রোগীরই তৎক্ষণাত অক্সিজেন সাপোর্টের প্রয়োজন ছিল।
আগের সরবরাহের চেয়ে ২০ শতাংশ কম অক্সিজেন
এর আগে সুরাতের আইএমএ শহরের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের জন্য ২৩০ এমটি অক্সিজেনের সরবরাহ চেয়েছিল, তারা অভিযোগ করেছে যে আগের সরবরাহের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ কম অক্সিজেন শহরে বিতরণ করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও বেডের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে বা বেড খালি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন রোগী সেখানে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে।
সমস্যায় রোগীরা
চালথানের কাপড়ের মিলে চাকরিরত এক পরিযায়ী শ্রমিক ৫৬ বছরের সন্তোষ পাণ্ডা বলেন, 'আমি জানি না এখন কি করব। আমি ক্রমাগত কাশছি এবং অক্সিজেন সাপোর্ট ছাড়া শ্বাস নেওয়া প্রায় অসম্ভব। আমার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন কিন্তু তারা আমায় ঢুকতে দিচ্ছে না।' ওড়িশার বাসিন্দা পাণ্ডাকে ১০৮-এ ফোন করে অ্যাম্বুলেন্সে করে এনসিএইচে আনা হয়, কিন্তু সেখানে ভর্তি না নেওয়ার পর হাসপাতালের জরুরি মেডিক্যাল প্রযুক্তিবিদ জানান যে তারা তাঁকে আইসোলেশন কেন্দ্রে নিয়ে যাবে যদি সেখানে জায়গা পাওয়া যায় তবেই। ১০৮ অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার এক আধিকারিক বলেন, 'এনসিএইচ ও এসএমআইএমইআর রোগী ভর্তি নিচ্ছে না, তাই আমরা রোগীদের আইসোলেশন কেন্দ্রে নিয়ে যাব। একমাত্র যাঁদের ভেন্টিলেটর সাপোর্ট প্রয়োজন তাঁরা বেসরকারি হাসপাতালে যেতে পারেন যদি তারা বেড দিতে পারে।'
অক্সিজেনের অভাব হাসপাতালে
এনসিএইচের নোডাল অফিসার যোগেশ চৌধুরি বলেন, 'অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে আমরা নতুন রোগী ভর্তি নিতে অসক্ষম। আমরা আশা করছি পরিস্থিতি শীঘ্রই উন্নত হবে।' এসএমআইএমইআরের নোডাল অফিসার পুনিত নায়ার বলেন, 'প্রতিদিনের চাহিদার চেয়ে আমাদের কাছে কম অক্সিজেন রয়েছে তাই আমরা নতুন রোগী ভর্তি করছি না। যদি আরও রোগী ভর্তি নিই তবে যাঁরা ভর্তি রয়েছেন তাঁদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।'