
হস্তক্ষেপের অভিযোগ প্রমাণ করলে পদত্যাগ করব, বিজয়নকে চ্যালেঞ্জ কেরলের রাজ্যপালের
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে এবার সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানালেন রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। তিনি পিনারাই বিজয়নকে প্রভাব খাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচর্য নিয়োগের একটি উদাহরণ দেখানোর চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। ২৩ অক্টোবর কেরলের রাজভবনের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্যের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপর থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত হয়।

কী বললেন কেরলের রাজ্যপাল
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন অভিযোগ করেছেন, রাজ্যে উপাচার্য নিয়োগে রাজ্যপাল প্রভাব খাটিয়েছেন। এই অভিযোগের উত্তর দিতে গিয়ে কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচর্য নিয়োগে আমি কখনই হস্তক্ষেপ করিনি। কিন্তু এখনও দেখছি রাজ্যের সমস্ত চোরাচালানে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সমর্থন রয়েছে। রাজ্য সরকার, মুখ্যমন্ত্রীর দফতর ও মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠরা চোরাচালান কার্যের সঙ্গে যুক্ত থাকলে অবশ্যই আমার হস্তক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে।

প্রভাব খাটানোর প্রমাণ দিলে পদত্যাগ করব
বুধবার তিরুবনন্তপুরমের একটি সম্মলেনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, রাজ্যপাল আরএসএসের এজেন্ডাকে বাস্তবায়ন করতে চাইছে। তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে আরএসএস ও গেরুয়া শিবিরের এজেন্ডা প্রবেশ করাতে চাইছেন। এর জবাবে কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান বলেন, তারা (বাম সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী) অভিযোগ করেছেন, আমি আরএসএস আনার চেষ্টা করছি উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে। শুধু আরএসএস নয়, কোনও ব্যক্তিকে উপাচার্য হিসেবে আমি মনোনীত করিনি। মুখ্যমন্ত্রী যদি নিজের অভিযোগের প্রমাণ দিতে পারেন, তাহলে আমি পদত্যাগ করব। পাল্টা তিনি অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের আধিকারিকেরা কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিজেদের আত্মীয়কে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি একদম অযোগ্য ছিলেন।

কেরলের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে বিতর্ক
বিতর্কের সূত্রপাত যখন, সুপ্রিম কোর্টের তরফে এপিজে আবদুল কালাম টেকনোলজিকাল ইউনিভার্সিটি উপাচর্যের নিয়োগ অবৈধ বলে ঘোষণার করে। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পরেই কেরলের রাজ্যপাল রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের ২৪ অক্টোবরের মধ্যে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। কেরলের রাজভবনের তরফে এই নির্দেশিকা জারি হওয়ার পরেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান কেরলের নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচর্যরা। কেরলের রাজ্যপাল আরিফ এম খানের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

কেরলের প্রশাসনের সমালোচনা
রাজ্যপালের এই নির্দেশের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় কেরল প্রশাসন। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, রাজ্যপাল আচার্য পদের অপব্যবহার করছেন। এই নির্দেশ অগতান্ত্রিক। উপাচর্যদের ক্ষমতার ওপর হস্তক্ষেপ। পাশাপাশি তিনি বলেন, রাজ্যপালের কাজ সরকারের বিরোধিতা করা নয়। রাজ্যপালের কাজ হল সংবিধান অক্ষুন্ন রাখতে সরকারকে সাহায্য করা। তিনি আরএসএসের হয়ে কাজ করছেন। এর আগে কেরলের আর এক মন্ত্রী রাজ্যপালের নির্দেশের তীব্র নিন্দা করেন। তিনি দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নয়জন উপাচর্যকে রাজ্যপাল নিয়োগ করেছেন। যদি নিয়োগ অবৈধ হয়, সেক্ষেত্রে দায় রাজ্যপাল এড়াতে পারেন না।