তীব্র সমালোচনার পর কোভিশিল্ডের দু’টি ডোজের মধ্যে শীঘ্রই ব্যবধান কমাবে সরকার
কোভিশিল্ডের দু’টি ডোজের মধ্যে শীঘ্রই ব্যবধান কমাবে সরকার
করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন কোভিশিল্ডের দু’টি ডোজের মধ্যে ব্যবধান কমানোর সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। তবে তা সবার ক্ষেত্রে নয়, ৪৫ বছর বা তার বেশি বয়সের নাগরিকদের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জানা গিয়েছে, ভ্যাকসিনের প্রাপ্যতা বৃদ্ধির জন্য ও ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজের মধ্যে ব্যবধান বৈজ্ঞানিক কোনও ভিত্তি ছাড়াই শুধুমাত্র সরবরাহের বৈষম্য দূর করতে সরকার তা নির্ধারণ করেছিল এই তীব্র সমালোচনার পর ৪৫ বছর বা তার বেশি বয়সের নাগরিকদের জন্য কোভিশিল্ডের দু’টি ডোজের মধ্যে ব্যবধান কমানো হবে।
১২–১৬ সপ্তাহের ব্যবধান রয়েছে বর্তমানে
বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে কোভিশিল্ডের ২টি ডোজের মধ্যে ১২-১৬ সপ্তাহের ব্যবধান রয়েছে। ভারতের টিকাকরণ সংক্রান্ত জাতীয় প্রযুক্তি উপদেষ্টা গ্রুপ (এনটিএজিআই), যারা এই বিষয় নিয়ে আগামী সপ্তাহে বৈঠক করবেন, তাঁরা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ডোজের মধ্যে ব্যবধানের ব্যাপারটি এ মাসের আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নির্ধারণ করা হবে। তার আগে এটা নিয়ে বৈ্ঞানিক তথ্য জোগাড় করে তার ওপর পর্যালোচনা করা হবে। প্রসঙ্গত এর আগে, এন কে আরোরা জানিয়েছিলেন, কোভিশিল্ডের দুটি ডোজের মধ্যে সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বিজ্ঞান সম্মত ও স্বচ্ছ পদ্ধতিতে নেওয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এনটিএজিআই-এর সদস্যদের মধ্যে কোনো মতবিরোধ ছিল না। বিভিন্ন বিজ্ঞান সম্মত পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়ে খোঁজ খবর রাখার জন্য ভারতের যথাযথ ব্যবস্থাপনা রয়েছে।
কিছুদিনের মধ্যেই হ্রাস পাবে ব্যবধান
এনটিএজিআই-এর চেয়ারপার্সন ডাঃ এন কে অরোরা এ প্রসঙ্গে বলেন, 'আমরা বিভিন্ন বয়সের এবং বিভিন্ন অঞ্চলের ভ্যাকসিনের প্রভাব এবং তাদের ডোজ ব্যবধানের তথ্য সংগ্রহ করেছি।' তিনি আরও বলেন, '২ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে আমরা সম্ভবত কোভিশিল্ডের দু'টি ডোজের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে আনব। চূড়ান্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে এটি, বিশেষ করে ৪৫ বা তার ঊর্ধ্বদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।' তিনি এর সঙ্গে এও যোগ করে জানিয়েছেন যে এমনকী কোভিশিল্ডের একক ডোজও বেশ দৃঢ় রোগ প্রতিরোধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বৈজ্ঞানিক গবেষণায়।
ব্রিটেন ও ভারতে এই ভ্যাকসিনের ব্যবহার
এনটিএজিআই আগে সুপারিশ করেছিল যে কোভিশিল্ড ও অন্যান্য ভ্যাকসিনের বিভিন্ন ডোজের ব্যবধান নিয়ে যথেচ্ছভাবে ট্রায়াল চালানো হোক এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রস্তুতকারক সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া ভ্যাকসিন ডোজের ব্যবধানের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করুক। এই ভ্যাকসিন ব্যাপকভাবে ব্যবহার করছে ব্রিটেন ও ভারত। ব্রিটেন ব্যবধান কমিয়ে সর্বোচ্চ ২ মাস করেছে। ভারত প্রথমে দু'টি ডোজের মধ্যে চার-সপ্তাহের ব্যবধান রাখলেও পরে তা বাড়িয়ে ৪-৮ সপ্তাহের ব্যবধান নির্ধারণ করে। এটা আবার পরে ১২-১৪ সপ্তাহের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
ডোজের ব্যবধান বাড়ানো–কমানো
অরোরা জানিয়েছেন যে ট্রায়াল তথ্যের ওপর নির্ভর করে প্রথমে ব্যবধান চার সপ্তাহের করা হয়েছিল। এরপর উচ্চ কার্যকারিতার প্রমাণ মেলে গবেষণায় তারপর ব্যবধানের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। তবে দু'টি ডোজের ব্যবধান বাড়ানোর ঘোষণার পর সরকারকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। অনেকেই জানিয়েছেন যে ভ্যাকসিন অপর্যাপ্ত হওয়ার কারণে এই ব্যবধান বাড়ানো হয়েছে এবং সিদ্ধান্তটি আরও ডোজ সংগ্রহের জন্য সময় অর্জনের পদক্ষেপ হিসাবে দেখা হয়েছিল।