লকডাউন পরবর্তী অর্থনীতিকে সামাল দিতে কোমর কষছে কেন্দ্র
১৪ এপ্রিল পর্যন্ত মেয়াদ ছিল করোনা ভাইরাস রোখার লকডাউনের। তবে সেই লকডাউন বাড়তে চলেছে প্রায় নিশ্চিত ভাবে। এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতিতে ধস নামার আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। এই পরিস্থিতিতে সব কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সোমবার তাদের দফতরে গিয়ে রূপরেখা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়।
পেশ করা বাজেট এখন মূল্যহীন
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন যখন চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি বাজেট পেশ করেছিলেন, তখন দেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হয়নি। সেই অনুপাতেই বাজেট পেশ করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। তবে সেই বাজেট পেশের পর প্রায় দুই মাসে দেশে ক্রমেই বেড়েছে করোনার প্রকোপ। যার জেরে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। বন্ধ প্রায় সব ধরনের বাণিজ্য।
অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কী প্রয়োজন?
বাজেট পেশের আগে জানানো হয়েছিল যে ২০২০-২০২১ আর্থিকবর্ষে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হারের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল ৫.৬ শতাংশ। তবে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে এসবিআই জানিয়েছে যে দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার হবে মাত্র ২.৬ শতাংশ। পাশাপাশি জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের ত্রৈমাসিকে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার ২.৫ শতাংশ হবে বলে জানিয়েছে এসবিআই। মনে করা হচ্ছে এই পরিস্থিতি পরিকাঠআমোগত দিকে উন্নয়ন করে ভারে তৈরি করা হতে পারে শহরতলি। যার ফলে কর্মসংস্থানও বাড়বে। আর অর্থনীতিও এগিয়ে যাবে।
করোনার জেরে খাদের কিনারায় ঝুলে রয়েছে অর্থনীতি
করোনার জেরে খাদের কিনারায় ঝুলে রয়েছে অর্থনীতি। সৌজন্যে ভারতে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণের প্রকোপ। গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিনই নিয়ম করে শেয়ারবাজারে ধস নামছে বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কার জেরে। করোনা ভাইরাসের জেরে বিশ্বজুড়ে মন্দা লক্ষ্য করা যাচ্ছিল বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই। এর প্রভাব প্রথমে পরোক্ষ ভাবে পড়লেও পরে তা প্রত্যক্ষ ভাবেই পড়তে শুরু করে ভারতের উপর। আর জেরে দেশের বাণিজ্য ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন।
চাহিদায় ঘাটতি
বিশ্বজুড়ে করোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দিতেই ভারতের ৫৩ শতাংশ বাণিজ্য প্রভাবিত হয়েছিল। সেই পরিমাণ এখন ৭৩ শতাংশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এর জেরে দেশের ৫০ শতাংশ কোম্পানিতে অর্ডার পাওয়ার ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
নগদ প্রবাহে টান
এদিকে করোনার জেরে নগদ প্রবাহ কমে গিয়েছে। দেশের ৮০ শতাংশ সংস্থার নগদ প্রবাহে টান পড়েছে। কাচা মাল ও উৎপাদন নিয়ে চাপে পড়েছে কম বেশি সব সংস্থা। চাহিদার অভাবে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত পিছিয়ে যাচ্ছে উৎপাদনের মাত্রা। পরবর্তীতে এই উৎপাদন আরও পিছিয়ে যাবে বলেই ধরে নেওয়া যায়।
১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা
এর আগে কেন্দ্রের তরফে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। করোনা ভাইরাসে লকডাউনে সবচেয়ে সংকটে পড়েছেন গরিব মানুষ দিন মজুররা। রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাঁদের। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের অন্নের সংস্থানে এগিয়ে এসেছে সরকার। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন ফিনান্সিয়াল রেসপন্স টিম বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করে। তবে শুধু সেই প্যাকেজের উপর নির্ভর করে দেশের পরবর্তী অর্থনৈতিক গতিপথ নির্ধারণ করা সম্ভব হবে না।