ভারতে প্রথম সার্ভিক্যাল ক্যানসারের ভ্যাকসিন, কারা পাবেন এই টিকা
ভারতে প্রথম সার্ভিক্যাল ক্যানসারের ভ্যাকসিন, কারা পাবেন এই টিকা
ভারতে প্রথম সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কোয়াড্রিভ্যালেন্ট হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস ভ্যাকসিন তৈরির জন্য সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়াকে অনুমোদন দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বুধবার সেন্ট্রাল ড্রাগ অথরিটির একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি এই সুপারিশ করেছে। সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিক প্রকাশ কুমার সিং কিউএইচপিভি-র ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তিন ভাগের দুই ভাগ সম্পন্ন হওয়ার পরেই বাজারের অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছিলেন।
৮ জুন সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া এই আবেদন করেছিল বলে জানা যায়। জানা গিয়েছে, ৯ থেকে ২৬ বছরের মধ্যে যাঁদের বয়স, তাঁদের এই টিকা দেওয়া যাবে। আবেদনে প্রকাশ কুমার সিং জানিয়েছেন, কিউএইচপিভি ভ্যাকসিন শক্তিশালী সিইআরভিএভিএসি অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এই অ্যান্টিবডি যে কোনও বয়সের রোগীদের ক্ষেত্রে প্রায় হাজারগুন বেশি কাজ করে।
এই বিষয়ে সিডিএসসিও-র কোভিড ১৯-এর বিশেষজ্ঞ কমিটি আলোচনায় বসে। তারপরেই কিউএইচপিভি ভ্যাকসিন তৈরির জন্য সিরাম ইনস্টিটিউটকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে আবেদনে সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিক প্রকাশ কুমার সিং বলেন, প্রতিবছর কয়েক লক্ষ মহিলা জুরায়ুর মুখে ক্যানসারের পাশাপাশি অন্যান্য ক্যানসারে আক্রান্ত হন।
মৃত্যুর অনুপাতও বেশি। ভারতে ১৪-৪৪ বছরের মহিলারা সব থেকে বেশি আক্রান্ত হয়। মহিলাদের সার্ভিক্যাল ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যার দিক থেকে ভারত বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।পরিসংখ্যান বলছে, বেশিরভাগ ক্যানসারের পিছনে ভূমিকা থাকে এইচপিভি-র। এই এইচপিভি কে আটকানো গেলে সার্ভিক্যাল ক্যানসারের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।
পরিসংখ্যান বলছে, ৯৫ শতাংশ ক্যানসারের নেপথ্যে এইপিভি-র ভূমিকা থাকে। এইচভিপি কোনওভাবে কমিয়ে ফেলা গেলে ক্যানসার আটকানো সম্ভব। এই বিষয়ে অনেকদিন ধরেই গবেষণা চলছে। টিকা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। বর্তমানে ভারত এইচপিভি ভ্যাকসিনের জন্য বিদেশি সংস্থাগুলোর ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। সেই নির্ভরশীলতা কমাতে সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া এই ভ্যাকসিন তৈরি করতে চান।
পাশাপাশি তিনি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তিনভাগের দুইভাগ সম্পন্ন হলেই বাজারে অনুমোদনের আবেদন করেছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসআইআই -এর সিইও আদর পুনওয়ালার প্রান নীতি উচ্চমানের ভ্যাকসিন তৈরি করা। যা দেশের পাশাপাশি বিশ্ব সুলভ মূল্যে উপলব্ধ করতে পারে। সেই কারণে সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া এই ভ্যাকসিন তৈরি করতে আগ্রহী।
১০৯ দিনে প্রথম দেশের দৈনিক করোনা সংক্রমণ ১০,০০০ পার করল
এই প্রসঙ্গে প্রকাশ কুমার সিং বলেন, অন্যান্য অনেক জীবনদায়ী ভ্যাকসিনের মতো এই কিউএইচপিভি ভ্যাকসিন অসংখ্য মানুষের জীবন রক্ষা করবে। দেশের অভ্যন্তরে এই ভ্যাকসিন সুলভে পাওয়া গেলে অনেক ভারতীয় তা উপলব্ধ করতে পারবেন। যার ফলে অনেক মৃত্যুকে ঠেকানো যাবে। সার্ভিক্যাল অনেক ক্যানসার ঠেকানো যাবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আত্মনির্ভর ভারত গঠন করতে সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মেকিং ইন্ডিয়া ফর ওয়ার্ল্ড, প্রধানমন্ত্রীর এউ আদর্শকে সামনে রেখেই সিরাম এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। এই ভ্যাকসিন নিশ্চিতরূপে রিকম্বিন্যান্ট দ্বারা সৃষ্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।