ডেঙ্গুর চিকিৎসায় ১৫ লক্ষ টাকার বিল ধরাল হাসপাতাল
সাত বছরের মেয়ের ডেঙ্গুর চিকিৎসা করাতে নামী হাসপাতালে গিয়ে ১৫ লক্ষ টাকার বিল হাতে এল পরিবারের। আবার মেয়েকেও বাঁচাতে পারেনি হাসপাতাল।
ডেঙ্গুর চিকিৎসায় যেখানে সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে বেসরকারি হাসপাতালগুলির জালিয়াতির ঘটনা ফের একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেল স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অরাজকতার নিষ্ঠুর দিকটিকে। সাত বছরের মেয়ের ডেঙ্গুর চিকিৎসা করাতে নামী হাসপাতালে গিয়ে ১৫ লক্ষ টাকার বিল হাতে এল পরিবারের। আবার মেয়েকেও বাঁচাতে পারেনি হাসপাতাল।
ঘটনাটি ঘটেছে গুরুগ্রামে। গত ৩১ অগাস্ট আদ্যিয়া সিং নামে এক সাত বছরের মেয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ফর্টিস মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি হয়। জয়ন্ত সিংয়ের মেয়েকে ১৫ দিন হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করে হাসপাতাল। শেষ পাঁচদিন ভেন্টিলেটরেও রাখতে হয়। তবে শেষপর্যন্ত মেয়েকে বাঁচানো যায়নি।
পরিবারের এক নিকটবন্ধু গোটা ঘটনা টুইটারে জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি জানান, হাসপাতালের বিলে ১৮ লক্ষ টাকার কথা বলা হয়েছে। একরত্তি মেয়েটিকে ৬৬০টি ইঞ্জেকশন দেওয়ার দাবি করেছে হাসপাতাল। অর্থাৎ দিনে ৪০ টির বেশি। যা এককথায় অসম্ভব। সঙ্গে ২৭০০টি গ্লোভসের কথা বিলে লেখা হয়েছে।
দ্বারকায় একটি হাসপাতাল থেক ফর্টিস হাসপাতালে ভালো চিকিৎসার জন্য মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন জয়ন্ত। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এত নিষ্ঠুরতা দেখাবে তা তিনি ভাবতে পারেননি। পরিবারের অভিযোগ, প্রথমে মেরোপেনেম নামে একটি ওষুধ দেওয়া হয় যার দাম ৫০০ টাকা। পরে আরও দামী ৩১০০ টাকার ওষুধ দেওয়া হয়।
সপ্তাহের ছুটির দিনে হাসপাতালে কোনও চিকিৎসক থাকত না। মেয়েটিকে দেখার কেউ ছিল না। প্রতিদিন হাসপাতালে কত খরচ হচ্ছে সেই ব্রেক আপ টুকুও দেওয়া হয়নি। তারপরে ১৪ সেপ্টেম্বর জানানো হয়, মেয়েটির ৮০ শতাংশ ব্রেন ড্যামেজ হয়ে গিয়েছে। প্লাজমা ট্রিটমেন্টের জন্য ১৫ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। সেই শুনে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে গিয়ে মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ, মেয়ে হয়ত আগেই মরে গিয়েছিল। টাকা খাওয়ার জন্য ফর্টিস হাসপাতাল এতদিন তাঁদের মেয়েকে চিকিৎসার নামে আটকে রেখেছিল। যদিও হাসপাতাল গোটা ঘটনা অস্বীকার করেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডা গোটা ঘটনায় রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।