বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের হারের জন্য একা গান্ধীরা দায়ী নন, মত পি চিদম্বরমের
বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের হারের জন্য একা গান্ধীরা দায়ী নন, মত পি চিদম্বরমের
সম্প্রতি হওয়া পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পরাজয় রীতিমতো দলকে ব্যাকফুটে নিয়ে গিয়েছে। যদিও দেশের সবচেয়ে পুরনো দল এতে নিরাশ না হয়ে দ্বিগুণ শক্তিতে ফের জনসংযোগ বাড়াতে শুরু করে দিয়েছে। দলের বরিষ্ঠ নেতা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম জানিয়েছেন যে দলের সাম্প্রতিক পরাজয়ের জন্য শুধু গান্ধীদের দায়ী করলে চলবে না। কংগ্রেসের 'জি–২৩’ বা বিদ্রোহী নেতাদের বৈঠকের আগে এক সর্বভারতীয় সাংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে চিদাম্বরম দলকে বিভক্ত না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যান্য কংগ্রেস নেতার মতো চিদাম্বরমও নিশ্চিত করেছেন যে রবিবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির (সিডব্লিউসি) নির্বাচনের হার নিয়ে ময়নাতদন্তের সময় সোনিয়া গান্ধী ও তাঁর সন্তান রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী নিজেদের ওপর এই হারের দায় নিয়ে পদত্যাগ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। চিদাম্বরম বলেন, 'গোটা গান্ধী পরিবার পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সিডব্লিউসি সেটা গ্রহণ করেনি। এখন আমাদের বিকল্প কি? কংগ্রেসের নতুন সভাপতি নিরবাচনের জন্য আমাদের প্রক্রিয়াটি দ্রুত করতে হবে। তার জন্য সবচেয়ে আগে অগাস্টেই করা হতে পারে। কিন্তু এখন অগাস্ট পর্যন্ত আমরা কি করব? ততদিন পর্যন্ত আমি সহ আমরা সোনিয়া গান্ধীর দায়িত্বের নেতৃত্বের ওপর বিশ্বাস করতে পারি।’
চিদাম্বরম জানিয়েছেন যে সোনিয়া গান্ধী এই নির্বাচন এগিয়ে নিয়ে আসার পরামর্শ দিলেও অধিকাংশ নেতা সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। প্রসঙ্গত, কপিল সিব্বলের মতো 'জি–২৩’ নেতারা খোলাখুলিভাবে গান্ধীদের প্রতি নির্বাচন-বিধ্বস্ত দলটিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য নতুন নেতৃত্বের পথ তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন। চিদাম্বরম যদিও জানান যে সাম্প্রতিক নির্বাচনে পরাজয়ের জন্য গান্ধীদেরকে শুধু দায়ী করা ভুল বলা হবে। তিনি বলেন, 'গান্ধীরা দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন, যেমন আমি গোয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেছি এবং অন্যরা অন্যান্য রাজ্যের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।’ চিদাম্বরম জানান, কেউ দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন না। কিন্তু নেতৃত্বের অবস্থানে থাকা প্রত্যেকেরই দায়িত্ব, তা ব্লক, জেলা, রাজ্য এবং এআইসিসি (অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি) স্তরেই হোক। এআইসিসি যে দায়ী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রসঙ্গত, সিডব্লিউসি কোনও কঠোর পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি ছাড়াই সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখে একটি পরিচিত বিবৃতি দিয়েছে।
লক্ষ্য ২০২৪, খারাপ 'পারফর্ম' করা মন্ত্রীদের আর জায়গা হবে না যোগী ২.০ মন্ত্রিসভায়
কংগ্রেস দলকে পুনরুজ্জীবিত করার পদক্ষেপ নিয়ে চিদাম্বরম বলেন, 'কংগ্রেসের নির্বাচন অগাস্টে রয়েছে। আপনি কি পরামর্শ দিচ্ছেন যে আমরা তিন মাসের জন্য অন্তর্বর্তী সভাপতি (সোনিয়া গান্ধী) প্রতিস্থাপনের জন্য একজন অন্তর্বর্তী সভাপতি বাছাই করব।’ তিনি এও জানিয়েছেন যে অগাস্টে দল পূর্ণ–সময়ের সভাপতি পেয়ে যাবেন। চিদাম্বরম বরং বলেন, 'এখন থেকে অগাস্টের মধ্যে আমরা যা করতে পারি তা হল দলীয় সংগঠনে প্রয়োজনীয় ও ব্যাপক সংস্কার করা। আমি বিশ্বাস করি সোনিয়া গান্ধী সেটাই করছেন।’ কংগ্রেসের বিদ্রোহী নেতারা সর্বশেষ নির্বাচনের পরাজয়ের জন্য একটি বড় প্রতিক্রিয়া দাবি করেছে এবং তা করা না হলে 'কঠোর পদক্ষেপ’ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। চিদাম্বরম বলেন, 'আশা করি বিভক্ত হবে না। তাঁদের কাছে আমার আবেদন, দল ভাঙবেন না। আমি আর্জি জানাচ্ছি, নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ফিরে গিয়ে দল গড়ে তুলুন। সবাইকে ফিরে যেতে হবে এবং দলীয় সংগঠন পুনর্গঠন করতে হবে।’ কংগ্রেসের বরিষ্ঠ নেতা জানান যে তাঁর দল ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি সারছে। বিজেপিকে পরাস্ত করার জন্য এটিকে সামঞ্জস্য করতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।