বাদুড় ছড়াচ্ছে না নিপা! তাহলে কে, এখনও মিলছে না কোনও উত্তর
ভোপালের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হাই সিকিউরিটি অ্যানিমাল ডিসিজির মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্ট জজানিয়েছে নিপার উৎস সম্ভবত বলা হয় ফলভোজী বাদুড় নয়।
এতদিন বলা হচ্ছিল বাদুড় থেকেই ছড়াচ্ছে নিপা ভাইরাস। কিন্তু মেডিকেল টেস্ট রিপোর্ট বলছে, কেরলে যে মারাত্মক আকার ধারণ করছে 'নিপা', তার উৎস সম্ভবত বাদুড় নয়। ভোপালের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হাই সিকিউরিটি অ্যানিমাল ডিজিজে ২১টি বাদুড়ের রক্ত ও সিরাম-এর নমুনা পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাতে ভাইরাসটির সন্ধান মেলেনি।
একেবারে প্রথমে কেরালার কোঝিকোড়ে একই পরিবারের চারজন সদস্য বিরল নিপাা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অনুসন্ধানে তাদের বাড়িতে একটি বাদুর কলোনির সন্ধান পাওয়া গেছিল। বাড়ির কূয়োতে অনেক বাদুড় মরেও পড়ে তাকতে দেখা যায়। কাজেই স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ধরেই নিয়েছিলেন কেরলে বাদুড়ের থেকেই নিপা ভাইরাস ছড়াচ্ছে। কিন্তু ভোপাল থেকে রিপোর্ট আসার পর তাদের সেই তত্ত্ব আর খাটছে না।
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এখনই বাদুড় তত্ত্ব উড়িয়ে দিতে নারাজ। কারণ এর আগে পৃথিবীর বিভইন্ন প্রান্তেই ফলভোজী বাদুড়েপ মাধ্যমেই নিপা ছড়ানোর প্রমাণ মিলেছে। তাঁরা মনে করছেন এটা শুধুমাত্র একটা প্রাথমিক ফলাফল হতে পারে। এর আরও তদন্তের প্রয়োজন। কর্তৃপক্ষ এখন ভাইরাসটির উৎস সনাক্ত করতে আরো পরীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে তেলঙ্গানাতেও দুই রোগীর ক্ষেত্রে নিপা আক্রান্তদের মতো উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তাদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে তাদের রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এই দুজনই সম্প্রতি কেরালায় গিয়েছিলেন। এর আগে, কর্নাটকের ম্যাঙ্গালোরেও দুজন রোগাীর ক্ষেত্রে নিপা সন্দেহ করা হয়েছিল। কিন্তু তাদের রক্তের নমুনার রিপোর্ট নেতিবাচক এসেছে।
তবে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, ভাইরাসটি কেরাল থেকে বাইরে ছড়াতে পাড়েনি। তারা বলেছে, 'নিপা ভাইরাস সংক্রমণটিকে আউটব্রেক বা মহামারী বলা যাবে না। সংকরমণ একটি স্থানেই সীমাবদ্ধ আছে।' তবে একটি বিশেষজ্ঞ দল পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে পরপর আকস্মিক মৃত্যুর জেরে, নিপা আক্রান্ত কোঝিকোড় এবং মলপ্পুরম জেলায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকায় বাড়িঘর ও প্রাণিসম্পদ ছেড়ে অন্যত্র পারি দেওযার ধূম পড়ে গিয়েছে। কেরল সরকার নিপা ভাইরাসে মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে।
শারীরের বিভিন্ন তরলের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্তদের মৃত্যুর হার অত্যন্ত বেশি। প্রায় ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগী নিহত হয়েছেন। আসনে এখনও এই ভাইরাসের কোনও প্রতিষেধক নেই। ওয়ার্ল্ড বেল্থ অর্বগানাইজেশন বা হু-এর গাইডলাইন বলে, সংক্রমিত ব্যক্তিদের একমাত্র চিকিৎসা, 'নিবিড় যত্ন'। ইবোলা ও জিকার পাশাপাশি হু, নিপা ভাইরাসকেও আটটি প্রধান আগ্রাসী রোগের তালিকায় রেখেছে, যার থেকে বিশ্বব্যাপী মহামারী ছড়াতে পারে।