হিমাচলের রাজনীতিতে পাঁচ বড় সমস্যা কোনগুলি? কী কী হতে পারে ফ্যাক্টর
হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে পাঁচটি সমস্যা ভোটের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে,
হিমাচল প্রদেশে ১২ নভেম্বর এক দফায় নির্বাচন হবে। হিমাচল প্রদেশের ঐতিহ্য অনুসারে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অন্য রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসে। বর্তমানে হিমাচল প্রদেশে বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে। চলতি বছর হিমাচল প্রদেশে বিজেপি ও কংগ্রেসের পাশাপাশি আপ ও কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া মার্ক্সবাদী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। একাধিক প্রতিশ্রুতি নির্বাচনের আগে প্রচারে রাজনৈতিক নেতারা তুলে ধরেছেন। তবে রাজ্যের বেশ কয়েকটা সমস্যা ভোটারদের প্রভাবিত করে।
বেকারত্ব
হিমাচল প্রদেশে সবচেয়ে বড় ইস্যু বেকারত্ব। হিমাচলে বেকারত্বের পরিসংখ্যান যথেষ্ঠ উদ্বেগজনক। হিমাচল প্রদেশে বেকারত্বের হার সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে যথাক্রমে ৯.২ শতাংশ ও ৮.৬ শতাংশ নেই। বেকারত্বের জাতীয় গড় ৭.৬ শতাংশ। দেশের গড় বেকারত্বের তুলনায় হিমাচল প্রদেশের বেকারত্বের হার অনেকটাই বেশি, যা উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। অন্য একটি রিপোর্ট অনুসারে হিমাচল প্রদেশে ১৫ লক্ষ মানুষ বেকার। তারমধ্যে ৮.৭৭ লক্ষ রাজ্যজুড়ে কর্মসংস্থান এক্সচেঞ্জে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রাজ্যজুড়ে বেকারত্ব বৃদ্ধির কারণ কর্মসংস্থানের অভাব, শূন্যপদ সৃষ্টির অভাব।
পুরাতন পেনশন স্কিম
পুরনো পেনশন স্কিম ২০০৩ বাতিল করে ২০২১ সালে রাজ্য সরকার নতুন পেনশন স্কিম নিয়ে আসে। তবে নতুন পেনশন স্কিম নিয়ে রাজ্যের মানুষের মনে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে হিমাচল প্রদেশে সরকারি কর্মচারিদের ইউনিয়ন বিক্ষোভ দেখান নতুন স্কিমের বিরোধিতা করে। সেখানে তাঁরা পুরনো পেনশন স্কিম ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান। সম্প্রতি হিমাচল প্রদেশের নির্বাচনে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা হিমাচলে এসেছিলেন। তিনি বলেন, কংগ্রেস যদি হিমাচলে ক্ষমতায় আসে, সেক্ষেত্রে পুরনো পেনশন স্কিম চালু করা হবে।
আপেল কৃষকদের দুর্দশা
হিমাচল প্রদেশে আপেল চাষ ধ্বংসের মুখে রয়েছে। আপেল চাষিরা তীব্র সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। আপেল চাষিরা ইতিমধ্যে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে। সার ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি, জ্বালানির খরচ বৃদ্ধির জেরে আপেল চাষিদের আয় কমতে শুর করেছে। আবহাোয়ার পরিবর্তন আপেল চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তারপরেই জিএসটি ১২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে। যার ফলে আপেল চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কর্পোরেট সংস্থাগুলো ভালো মানের আপেল কিনে নেয়। এরফলে হিমাচল প্রদেশের জন্য ভালো মানের আপেল থাকে না। যারফলে আপেল কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়ে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
হিমাচল প্রদেশের এমন এক একটি গ্রাম রয়েছে যা রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। দুর্গম রাস্তা। ওই গ্রামগুলোতে পৌঁছনোর সঠিক কোনও যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। হিমাচল প্রদেশের বেশিরভাগ জায়গা বনাঞ্চল। এখানে রাস্তা তৈরি করতে সুপ্রিম কোর্টের অনুমতির প্রয়োজন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৭৮৮২টিগ্রামের মধ্যে ১০,৮৯৯টি গ্রামের জন্য সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। ৩৯ শতাংশ গ্রামে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। পর্যটন এখানে অন্যতম শিল্প। সেখান থেকে বালো রাজস্ব সংগ্রহ করা হয়। তাই পর্যটন ব্যবস্থাকে উন্নত করতে ভালো সড়ক যোগাযোগের প্রয়োজন রয়েছে।
অগ্নিপথ প্রকল্প
হিমাচল প্রদেশের বেশিরভাগ যুবক সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে আগ্রহী। কিন্তু কেন্দ্র সরকার অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে চুক্তির ভিত্তিতে সেনা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্তের জেরে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক জনরোষের সৃষ্টি হয়েছিল। হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে এটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।