আম্বানি কাণ্ডে ধৃত সচিন বেজ মুম্বই পুলিশের বিতর্কিত চরিত্র, জড়িয়েছেন বহু হাই–প্রোফাইল কেসে
আম্বানি কাণ্ডে ধৃত সচিন বেজআম্বানি কাণ্ডে ধৃত সচিন বেজ মুম্বই পুলিশের বিতর্কিত চরিত্র, জড়িয়েছেন বহু হাই–প্রোফাইল কেসে
মুম্বই পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইনস্পেক্টর সচিন বেজকে এনআইএ আম্বানি বোমাতঙ্ক মামলায় গ্রেফতার করেছে। তবে সচিন বেজ এর আগেও বহু বিতর্কিত ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এর আগে বেজকে ২০০৪ সালে গ্রেফতার করা হয় খাজা ইউনুস নামে এক বন্দির পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর কারণে, যার শুনানি এখনও চলছে। মুম্বই পুলিশে যোগ দেওয়ার দশ মাসের মাথায় ফের আম্বানি কাণ্ডে এনআইএর হাতে গ্রেফতার হন সচিন বেজ।
সিনেমার কোনও বিতর্কিত পুলিশ অফিসারের জীবনের চেয়ে কম চমকপ্রদ নয় সচিন বেজের ব্যক্তিগত থেকে কর্মজীবন। উদ্ধব ঠাকরের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সচিন বেজ এবারে নিজেকে রাজনৈতিক অশান্তির মধ্যে নিজেকে পায়। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে সচিন বেজ সবসময়ই বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েছিলেন। মঙ্গলবারই ঠাকরে বেজের সমর্থনে জানান যে সচিন বেজ ওসামা বিন লাদেন নয়। তিনি সঠিক ব্যক্তি নন নিশানা করার। আম্বানি মামলার তদন্ত থেকেও বেজকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
অর্ণব গোস্বামী থেকে হৃত্ত্বিক রোশন
সচিন বেজের সময়কালে তিনি মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চের ক্রিমিনাল ইন্টালিজেন্স ইউনিটের প্রধান ছিলেন। তিনি হাই প্রোফাইল মামলাগুলি দেখতেন। যেমন টিআরপি কেলেঙ্কারি মামলায় তিনি পুনে থেকে প্রাক্তন বার্ক সিইও পার্থ দাশগুপ্ত সহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। এছাড়াও অনভয় নায়েক আত্মহত্যা মামলায় রিপাবলিক টিভির মালিক অর্ণব গোস্বামীকে গ্রেপ্তারের সময় আলিবাগ পুলিশের নেতৃত্বে ছিলেন বেজ।
বেজ আন্তঃরাজ্য গাড়ি কেলেঙ্কারিতে জনপ্রিয় স্পোর্টস কার ডিজাইনার দিলীপ ছাবারিয়াকে ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর গ্রেফতার করেন। এই ঘটনায় রুলিশ পুনেতে দিলীপ ছাবারিয়ার কারখানায় হানা দিয়ে ১৪টি গাড়ি ও ৪০টি ইঞ্জিন বাজেয়াপ্ত করে।
বেজের হাতে সম্প্রতি হৃত্ত্বিক রোশন ও কঙ্গনা রানাওয়াতের একটি ঘটনার তদন্ত এসেছিল। যেখানে হৃত্ত্বিক কঙ্গনার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, ২০১৬ সালে কঙ্গনা রানাওয়াতের সঙ্গে হৃত্ত্বিকের কিছু কথোপকথন হয় ইমেল মারফত, যা নিয়ে এই মামলা। এই মামলা সাইবার বিভাগ থেকে সিআইইউতে চলে আসে এবং বেজ হৃত্ত্বিককে সমন পাঠান এবং গত মাসেই বিবৃতি রেকর্ড করা হয় অভিনেতার।
সচিন বেজের পুলিশে যোগ
সাব-ইনস্পেক্টর
হিসাবে
১৯৯০
সালে
সচিন
বেজ
মহারাষ্ট্র
পুলিশে
যোগ
দেন।
১৯৯২
সালে
মাওবাদী
অধ্যুষিত
এলাকা
গাদচিরোলিতে
প্রথম
বদলি
হয়ে
যান
বেজ।
এরপর
তিনি
থানে
সিটি
পুলিশে
চলে
আসেন।
বেজ
এরপর
থানের
ক্রাইম
ব্রাঞ্চে
যোগ
দেন
এবং
থানে
এলাকায়
এনকাউন্টার
শুরু
করেন।
সচিন
বেজ
এনকাউন্টার
স্পেশালিস্ট
প্রদীপ
শর্মাকে
খুব
পছন্দ
করতেন
তবে
খুব
শীঘ্রই
তিনি
নিজেও
একজন
এনকাউন্টার
স্পেশালিস্ট
হয়ে
ওঠেন।
তিনি
এনকাউন্টার
দলের
সঙ্গে
ছিলেন
এবং
মুম্বই
ও
থানে
এলাকার
৬০
জন
অপরাধীকে
এনকাউন্টার
করেন।
২০০৪ সালে সাসপেন্ড
২০০৩ সাল পর্যন্ত সবকিছু ঠিকভাবেই এগোচ্ছিল। তাঁর ছবি সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে আসা একপ্রকার অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ২০০৪ সালে খাজা ইউনুসের মামলার জন্য তাঁকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়। এরপর ২০০৭ সালে তিনি মুম্বই পুলিশ থেকে পদত্যাগ করেন। যদিও তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়নি এবং তার ফলে তিনি পুনরায় বাহিনীতে যোগ দেন।
খাজা ইউসুফের ঘটনা
২০০২ সালের ২ ডিসেম্বর ঘাটকোপার বিস্ফোরণ কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেফতার হয় খাজা ইউনুস। কিন্তু ২০০৩ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে সে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যায়। পুলিশ জানায় যে তদন্তের জন্য তাকে ঔরঙ্গাবাদ নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ভ্যান থেকে পালিয়ে যায়। ইউনুসের পরিবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় এবং এই মামলাটি সিআইডি হাতে নেয়। সিআইডির তদন্তে উঠে আসে যে ইউনুসের গায়েব হয়ে যাওয়া আসলে পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যু হয়েছে এবং এই মামলায় সচিন বেজ সহ আরও তিনজনের নাম উঠে আসে।
২৬/১১ নিয়ে বেজের বই
খারাপ গুণের সঙ্গে সচিন বেজের মধ্যে কিছু অসাধারণ গুণও রয়েছে। তিনি প্রযুক্তিতে তুখর। ২০১০ সালে তিনি 'লাল ভাড়ি' বলে একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্ক চালু করেছিলেন। বেজ একটি সফটওয়্যারও তৈরি করেন। তিনি ২টি বইও লিখেছেন। একটি শিনা বোরা খুনের ঘটনা নিয়ে এবং লস্কর-ই-তৈবা অপারেটিভ ডেভিড হেডলি, যে ২৬/১১ জঙ্গি হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাকে নিয়ে বই লেখেন।
অসমে অমিত, ক্ষমতায় ফিরলেই চিরতরে অনুপ্রবেশ বন্ধের প্রতিশ্রুতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর