বিরামহীন উদ্ধার কাজ - ছবি ও ভিডিওয় দেখুন কিভাবে চলছে 'অপারেশন মদত'
শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ, মহিলা - বন্যাগ্রস্ত কেরলে সবার কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। 'অপারেশন মদত'-এর ফটো এবং ভিডিও দেখুন।
কেরলের বন্যায় ইতিমধ্যেই প্রায় ৫৭ হাজারের মতো মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও কয়েক লক্ষ মানুষ এখনও আশ্রয়হীন। তাঁদের উদ্ধারে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে সেনা, উপকূলরক্ষী, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। হেলিকপ্টারে করে, রবারের ডিঙিতে করে উপদ্রুত এলাকায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করে তাঁদের নিয়ে আসছেন আশ্রয় শিবিরে।
সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা অসুস্থরা। নিজেদের জীবন বিপন্ন করেও যে করেই হোক তাঁদের উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। আজকে সমাজকে যখন একেবারেই আত্মকেন্দ্রীক, স্বার্থান্বেষী বলে সমালোচনা করা হয়, তখন বিপদ তুচ্ছ করে 'মানুষ হয়ে মানুষের পাশে' দাঁড়ানোর এই উজ্জ্বল ছবি এক ঝাপটা তাজা হাওয়ার মতো।
(আরও পড়ুন - 'হে করুণাময় রক্ষা কর', বন্যা বিধ্বস্ত কেরলে ত্রাহি রব, প্রার্থনা, দেখুন ভিডিও)
|
বৃদ্ধাকে উদ্ধার নৌসেনার
বানভাসী এর্নাকুলামে আটকে পড়েছিলেন এক বৃদ্ধা। খাওয়ার নেই, নেই পানীয় জল। ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন তিনি। বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। ছাদে দড়ি ঝুলিয়ে তাঁকে হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করে বায়ু সেনার কর্মীরা। পরে তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় নৌসেনার হাসপাতালে।
|
শিশুকে উদ্ধারে 'গড়ুর' বাহিনীর উইং কমান্ডার প্রশান্ত-র
আলাপ্পুঝা শহরে একই ভাবে বাড়ির ছাদে আটকে ছিল এক পরিবার। পরিবারের বাকিদের দড়িতে বেঁধে হেলিকপ্টারে তোলা গেলেও কোলের শিশুটি উদ্ধার করতে এগিয়ে যান বায়ুসেনার বিশেষ বাহিনী 'গড়ুর'-এর উইং কমান্ডার প্রশান্ত। শিশুটি কোলে করেই হেলিকপ্টারে পৌঁছে দেন তিনি।
|
ডিঙি না যেতে পারলে পৌঁছে যাচ্ছে হেলিকপ্টার
এর্নাকুলামম কোচি এবং আলুভার বিভিন্ন জায়গায় বন্য়ায় অবস্থা এতটাই খারাপ যে রবারের ডিঙি নিয়ে পৌঁছনো সম্ভব হচ্ছে না সেসব জায়গায়। কাজেই উদ্ধার ও ত্রাণের কাজ চলছে হেলিকপ্টারেই। ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা আরও এক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করছেন।
|
উদ্ধারে ক্য়াপ্টেন পি রাজকুমার শৌর্যচক্র
আলওয়ের উত্তরে একটি বাড়ি থেকে এক প্রবীন নাগরিককে উদ্ধার করছেন নৌসেনার শৌর্যচক্র প্রাপ্ত ক্য়াপ্টেন পি রাজকুমার।
|
উদ্ধার ১০ দিনের শিশু
বন্যার মধ্য়েই পীর্ব কাদাঙ্গালোরে মাত্র ১০ দিন আগে জন্ম নিয়েছে একটি শিশু। তাঁর যথাযথ চিকিৎসার দরকার। কিন্তু চারপাশে জল জমে প্রায় দ্বীপের আকার নিয়েছে এই এলাকার বাড়িগুলি। উপকূল রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের দক্ষতায় ওই শিশু, তার মা এবং আরও এক সন্তান সম্ভবা মহিলা-সহ মোট ১২৭ জন মানুষকে উদ্ধার করা গিয়েছে।
|
মানব সিঁড়ি
বানভাসী এলাকায় রবারের ডিঙি নিয়ে পৌঁছলেও অনেক সময়ই মহিলাদর অসুস্থদের উঁচু ডিঙিতে উঠতে সমস্যা হচ্ছে। উদ্ধারকারীদের অনেকসময়ই দেখা যাচ্ছে নিজেরা মানব সিঁড়ি হয়ে তাঁদের ডিঙিতে উঠতে সাহায্য করছেন। তাঁদের এই কর্মযজ্ঞকে সেলাম জানিয়েছে সাধারণ মানুষও।
|
নিজেরা জলে, কুছ পরোয়া নেহি
থিরুভেল্লা থেকে ২ কিলোমিটার দূরে বন্যার জলে বিচ্ছিন্ন একটি বাড়িতে আটকে পড়েছিলেন একটি পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের মধ্যে শিশু মহিলা ও বয়স্ক মানুষরাও ছিলেন। উপকূল রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা নিজেরা জলে নেমে তাঁদের সবাইকে রবারের ডিঙিতে চাপিয়ে উদ্ধার করেছে।
|
একদিনে উদ্ধার ৫৩৬ জন
কোলের শিশু থেকে জড়াগ্রস্ত বৃদ্ধা - সবার কাছেই প্রায় ভগবানের দূত হয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। নায়েব সুবেদার মানবীর সিং-এর নেতৃত্বে ১৩ গারওয়াল রাইফেলের জওয়ানরা ৮ থেকে ১০ ফুট গভীর জলে সারা দিন অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫৩৬ জনকে উদ্ধার করেন।
|
টানা ১৫ ঘন্টার উদ্ধার অভিযান
কেরালায় বন্যায় যে এলাকাগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তার অন্যতম থিরুভিল্লা। এখানে উদ্ধারের কাজ পরিচালনা করছেন সুদর্শন চক্র বাহিনীর মেজর উপ্রেতি। তার নেতৃত্বে বাহিনী প্রবল বৃষ্টির মধ্যে টানা ১৫ ঘন্টা ধরে কাজ করে ২৫০ জন মানুষকে উদ্ধার করে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অনেক অসুস্থ ও গৃহহীন মানুষও ছিলেন।
|
উদ্ধারের আগে ডাক্তারি মূল্য়ায়ন
প্রসববেদনা ওঠা এক গর্ভবতী মহিলাকেও উদ্ধার করেছে নৌসেনা বাহিনীর জওয়ানরা। প্রথমে হেলিকপ্টারে করে এক ডাক্তারকে ওই মহিলার বাড়িতে নামান হয়। তিনি গর্ভবতী মহিলার শারীরিক মূল্যায়ন করে জানান, তাঁকে স্থানান্তরিত করার ক্ষেত্রে অসুবিধা নেই। এরপরই তাঁকে সেকান থেকে সঞ্জিবনীতে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
(আরও পড়ুন - বন্যা বিপর্যস্ত কেরলে সেনার দুঃসাহসিক উদ্ধার কাজ অব্যাহত, দেখুন ভিডিও)
(আরও পড়ুন - কেরলের বন্যা নিয়ে অসম্মানজনক মন্তব্য! বিদেশে চাকরি খোয়ালেন রাজ্যের যুবক )