তোলাবাজির সঙ্গে যুক্ত মারাঠা মন্ত্রী! তদন্তের দাবিতে এবার শীর্ষ আদালতে মুম্বইয়ের পুলিশকর্তা
এবার অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হলেন মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিং। মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে পুলিশকে দিয়ে তোলাবাজির অভিযোগ আগেই এনেছিলেন মুম্বইয়ের পুলিশ প্রধান৷ এবং সেই তোলাবাজি করানো হত মুকেশ আম্বানির বাড়ির সামনে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি রাখার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া পুলিশ অফিসার সচিন ওয়াজে দিয়ে৷ মুখ্য়মন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে লেখা একটি চিঠিতে এমনই অভিযোগ করেছেন মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিং৷ তিনি অভিযোগ করেছেন ওয়াজেকে দিয়ে প্রতি মাসে শহরের বড় বড় শিল্পপতিদের থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকার তোলাবাজি করাতেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ৷
অস্বস্তিতে পড়েছে মহারাষ্ট্র সরকার
পরমবীর সিংয়ের লেখা ওই চিঠিতে সচিন ওয়াজ়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে৷ তিনি লিখেছেন, আম্বানিকাণ্ডে ধৃত পুলিশ অফিসার সচিন ওয়াজেকে তোলাবাজির কাজে ব্য়বহার করতেন অনিল দেশমুখ৷ এই চিঠি প্রকাশ্য়ে আসায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে মহারাষ্ট্র সরকার৷
অপসারিত হন পরম বীর
যদিও অনিল দেশমুখ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৷ তিনি পাল্টা পরম বীর সিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, নিজেকে পরবর্তী তদন্তের হাত থেকে বাঁচাতে প্রাক্তন পুলিশ কর্তা, তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনছেন৷ অনিল দেশমুখ টুইটে অভিযোগ করেন, পরম বীর সিং তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী তদন্তের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে এই মিথ্যা অভিযোগ করেছেন৷ প্রসঙ্গত, সচিন ওয়াজ়েকে গ্রেফতারের পরেই পুলিশ কমিশনার পরম বীর সিং-কে বদলি করা হয় হোমগার্ডের ডিজি পদে৷
উদ্ধবকে চিঠি পুলিশকর্তার
মুখ্য়মন্ত্রীকে লেখা ওই চিঠিতে পরমবীর জানিয়েছেন, প্রতিমাসে ১০০ কোটি টাকা করে তোলা তুলতে চেয়েছিলেন৷ গত কয়েকমাসে ওয়াজেকে ডেকে পুরো বিষয়টি বলেন এবং সাহায্য় চান৷ ১০০ কোটি তোলা তোলার জন্য় মুম্বইয়ের এক হাজার ৭৫০টি পানশালা, রেস্তরাঁ, অন্য় ব্য়বসায়িক প্রতিষ্ঠানকে নিশানা করা হয়েছিল৷ কিন্তু অত বেশি পরিমাণ টাকা সেখান থেকে তোলা সম্ভব নয় বলেও জানতেন তিনি৷ তাই ওয়াজেকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন অন্য় জায়গা থেকে বাকি টাকা তোলার৷
কী ঘটেছিল?
প্রসঙ্গত, মার্চ মাসের শুরুতে শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির বাড়ির সামনে একটি বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি উদ্ধার হয়৷ সেই ঘটনায় মুম্বই পুলিশের অফিসার সচিন ওয়াজ়ের যোগ পায় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ৷ ওই বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ির মালিক মনসুখ হিরেনের দেহ থানের কাছে একটি খাড়িতে উদ্ধার হওয়ার পর ওয়াজেকে গ্রেফতার করে এনআইএ৷ ১৩ মার্চ এনআইএ নিশ্চিত করে যে, ২৫ ফেব্রুয়ারি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রির চেয়ামম্যান মুকেশ আম্বানির বাড়ির সামনে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি থেকে যে ব্যক্তি বেরিয়েছিল, সে সচিন ওয়াজে৷ এরপরেই এনআইএ-র গোয়েন্দারা তাকে গ্রেফতার করে৷ ২৫ মার্চ পর্যন্ত সচিন ওয়াজেকে এনআইএ-র হেফাজতে পাঠানো হয়েছে৷