
ঝাড়খণ্ডে ৫০ টি দলিত পরিবারকে জোর করে উচ্ছেদ, অভিযোগ দায়ের ১৫০ জনের বিরুদ্ধে
উৎসবের আবহে গৃহছাড়া হলেন ৫০ জন দলিত পরিবার। মঙ্গলবার পুলিশ জানিয়েছে যে ঝাড়খণ্ডের মুরুমাতু গ্রাম থেকে প্রায় ৫০টি দলিত পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, রাজ্যের পালামু জেলার এক নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের সদস্যদের দ্বারা গত চার দশক ধরে এই গ্রামে বসবাসকারী পরিবারগুলিকে উচ্ছেদ করা হয়।

এই খবর জানার পরই মেদিনীনগরের এসডিও রাজেশ কুমার সাহ ও এসডিপিও বিশরামপুরের সুর্জিত কুমার টঙ্গরি পাহাড়ি এলাকায় তৎক্ষণাত পৌঁছান, যা মুরুমাতু গ্রাম থেকে ১ কিমি দূরে। পুলিশ জানিয়েছে যে এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ আধিকারিকরা রয়েছেন। পুলিশ এও জানিয়েছে যে অভিযুক্ত ১২ জনের বিরুদ্ধে এবং অন্য ১৫০ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঝাড়খণ্ডের গর্ভনর রমেশ বাইস।
রাজভবন থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজ্যপাল দুই দিনের মধ্যে পালামুর ডেপুটি কমিশনার এ ডোডের কাছ থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছেন। ডোড জানিয়েছেন, পুলিশকে দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিসি একই গ্রামে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৫০টি পরিবারকে পুনঃবাসন দেবেন বলে আশ্বাসও দিয়েছেন। ডোড এও জানিয়েছেন যে ত্রাণ সংস্থাগুলিকে এই লক্ষ্যে সক্রিয় করা হয়েছে। জানা গিয়েছে যে, আক্রান্ত গ্রামবাসীরা প্রত্যেকেই 'মুশার' সম্প্রদায়ের এবং এই গ্রামে গত চারদশক ধরে বসবাস করছেন।
দলিত পরিবারদের মধ্যে একজন জিতেন্দ্র মুশার বলেন, 'আমরা এই গ্রামে একসঙ্গে কয়েক বছর ধরে বসবাস করছি কিন্তু সোমবার মারুমাতু গ্রামের সব বাসিন্দাদের জোর করে হটিয়ে দেয় কিছু মানুষ। তারা আমাদের সব জিনিসপত্র গাড়িতে তুলে দিয়ে কাছাকাছি জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসে।' এ ব্যাপারে তাদের পুলিশের কাছে যেতে দিতে বাধা দেওয়া হয় এবং হেনস্থা করা হয়। এসডিপিও জানিয়েছেন যে অভিযুক্তদের দলিতদের বসবাসকারী জায়গার জমির নথি দেখাতে বলা হয়েছে, যে এটা কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমি কিনা। কুমার জানিয়েছেন যে একই জায়গায় গ্রামবাসীদের পুর্নবাসন দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে এবং তাদের খোঁজে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এসডিও জানান যে দলিত পরিবারদের বাড়িগুলি ভেঙে দেওয়া হয়েছে তবে একই জায়গায় তাঁদের পুর্নবাসন দেওয়া হবে সুরক্ষা সহকারে। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আশ্বস্ত করেন যে দোষীদের রেহাই দেওয়া হবে না এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।