অর্থই সব, তাই মমতার কাছে কদর নরেন্দ্র মোদীর
গতকাল তৃণমূল কংগ্রেস সরকার তাদের চতুর্থ বাজেট পেশ করেছে রাজ্য বিধানসভায়। এই উপলক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, "নতুন গভর্নমেন্ট আসুক, রিস্ট্রাকচারিং হোক... যদি কথা বলে রিস্ট্রাকচারিং করে দেয়, টাকা যদি না কেটে নিয়ে যায়, দেখিয়ে দেব। সোনার বাংলা গড়ে উঠবে। আমি আত্মবিশ্বাসী।"
লক্ষণীয়, কলকাতায় কিছুদিন আগে একটি জনসভায় বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিং বলেছিলেন, কেন্দ্র ঋণের সুদ বাবদ বিপুল টাকা কেটে নিচ্ছে বাংলার থেকে। বাংলার বিকাশ ঘটাতে গেলে কেন্দ্রকে সুদ দেওয়া বন্ধ করতে হবে। অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবিকে তিনি সমর্থন করেছেন। ওই জনসভায় নরেন্দ্র মোদীও হাজির ছিলেন।
নরেন্দ্র
মোদী
নিজেও
মমতার
সমর্থনে
কথা
বলেছেন।
বলেছেন,
মমতা
যদি
রাজ্যে
থাকেন
ও
তিনি
নিজে
কেন্দ্রে
থাকেন,
তা
হলে
বাংলার
মানুষের
অনেক
সুবিধা
হবে।
ইঙ্গিতটা
পরিষ্কার।
তা
হলে,
আমেরকিার
মতো
মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ও
কি
নরেন্দ্র
মোদীর
পাশে
দাঁড়াচ্ছেন?
শুধু সাম্প্রদায়িক-ধর্মনিরপেক্ষ লাইনে যারা তৃণমূল কংগ্রেসের বিজেপি-র দিকে ঝুঁকে পড়ার বিষয়ে সন্দিগ্ধ ছিলেন, তাঁরা এখন ভুল প্রমাণিত হতে চলেছেন। বিজেপি ভেবে দেখেছে, এখন পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক অবস্থা খারাপ। যতদিন কংগ্রেস-নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার থাকবে, ততদিন রাজ্যের দুর্দশা ঘুচবে না। সংশ্লিষ্ট প্রসঙ্গে মনমোহন সিং সরকারের সঙ্গে অসংখ্যবার বৈঠক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও লাভ হয়নি। এমনকী চিদম্বরমের গতকালের বাজেটেও বাংলাকে আলাদা প্যাকেজ দেওয়া হয়নি। অথচ বিহার, উত্তরপ্রদেশকে ইতিমধ্যে আর্থিক প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে। তাই মমতার পক্ষে বিকল্প উপায় খোঁজাই স্বাভাবিক। আর এই মুহূর্তে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ ছাড়া কে-ই বা বিকল্প উপায় হতে পারে?
এই নিবন্ধে আমি এটাই বলতে চাইছি যে, ভারতের আঞ্চলিক দলগুলির নেতা-নেত্রীরা জাতীয় রাজনীতিতে এখন দাপট দেখালেও আর্থিকভাবে কেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল। তৃণমূল কংগ্রেস মুখে বলছে, তারা কংগ্রেস ও বিজেপি-র বিকল্প। যদিও এটা আদৌ সত্য নয়। বরং দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে গেলে তৃণমূল কংগ্রেসের দরকার কেন্দ্রের অর্থ সহায়তা। কোন দল কেন্দ্রে রইল, সেটা বড় কথা নয়। কংগ্রেস যেহেতু এই মুহূর্তে অস্তমিত, তাই বিজেপি-ই হল স্বাভাবিক বিকল্প।
পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী খুব সতর্কতার সঙ্গে ইঞ্চি মেপে এগোচ্ছেন। এই মুহূর্তে বিজেপি-র সঙ্গে হাত মেলালে সংখ্যালঘু ভোট কমে যাবে। এর ফলে লোকসভায় কমে যেতে পারে আসন। কিন্তু ভোটের শেষে যখন আরও শক্তি নিয়ে আত্মপ্রকাশ করবেন মমতা, তখন এনডিএ-কে সমর্থন নিয়ে সমস্যা হবে না। তখন সরকার গঠনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা গুরুত্ব পাবে এবং তিনি কেন্দ্রের থেকে আর্থিক সহায়তা পাবেন।