লকডাউনে বেহাল অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ফের প্যাকেজ? প্রধানমন্ত্রী-অর্থমন্ত্রী বৈঠকে জল্পনা
করোনা ভাইরাসের জেরে বিশ্বজুড়ে মন্দা চলছে। থমকে রয়েছে অর্থনীতি। প্রায় একই অবস্থা ভারতেও। এর প্রভাব প্রথমে পরোক্ষ ভাবে পড়লেও পরে তা প্রত্যক্ষ ভাবেই পড়তে শুরু করে ভারতের উপর। আর জেরে দেশের বাণিজ্য ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন।
বাণিজ্য প্রভাবিত, টান পড়েছে নগদ প্রবেহতেও
বিশ্বজুড়ে করোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দিতেই ভারতের ৫৩ শতাংশ বাণিজ্য প্রভাবিত হয়েছিল। সেই পরিমাণ এখন ৭৩ শতাংশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এর জেরে দেশের ৫০ শতাংশ কোম্পানিতে অর্ডার পাওয়ার ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এদিকে করোনার জেরে নগদ প্রবাহ কমে গিয়েছে বলেও জানাচ্ছে প্রভাবিত সংস্থাগুলি। ৮০ শতাংশ সংস্থার নগদ প্রবাহে টান পড়েছে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অবস্থা খারাপ
এদিকে লকডাউনের জেরে বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের থেকেও বেশি প্রভাবিত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের আওতায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলি। পুঁজি কম এবং সঞ্চয় সীমিত হওয়ায় উদ্যোক্তাদের ঝুঁকি মোকাবেলার ক্ষমতাও কম । তাই করোনা বিপর্যয়ে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ায় মারাত্মক হুমকিতে পড়তে যাচ্ছে কর্মসংস্থানে বড় ভূমিকা রাখা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলো।
কেন্দ্রের ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ
এই বিষয়গুলি মাথায় রেখেই এর আগে কেন্দ্রের তরফে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। করোনা ভাইরাসে লকডাউনে সবচেয়ে সংকটে পড়েছেন গরিব মানুষ দিন মজুররা। রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাঁদের। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের অন্নের সংস্থানে এগিয়ে আসে সরকার।
এই প্যাকেজে ফিরবে না অর্থনীতির হাল
তবে শুধু সেই প্যাকেজের উপর নির্ভর করে দেশের পরবর্তী অর্থনৈতিক গতিপথ নির্ধারণ করা সম্ভব হবে না। আর তাই এই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় খুঁজতে এবার প্রধানমন্ত্রীর মোদীর সঙ্গে বৈঠক করলেন উদ্বিগ্ন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আগামী ৩ মাস বিনামূল্যে খাদ্যশস্য এবং রান্নার গ্যাস দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়।
বর্ধিত লকডাউনে কোন পথে অর্থনীতি?
এর আগে গত ২৫ মার্চ টানা ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু তারপরেও দেশে করোনা সংক্রমণের হার না কমায় একরকম বাধ্য হয়েই ১৪ এপ্রিল লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়ানোর ঘোষণা করেন তিনি। আপাতত দেশে ৩ মে পর্যন্ত চলবে এই অবস্থা। কিন্তু নাগাড়ে লকডাউন থাকায় বন্ধ দেশের বড় বড় সমস্ত শিল্প। ফলে দেশের কোনও উপার্জন হচ্ছে না, প্রায় মুখ থুবড়ে পড়েছে বহু সেক্টর। এই পরিস্থিতি থেকে দেশকে উদ্ধারের উপায় বের করতেই এদিনের এই বৈঠক বলে মনে করা হচ্ছে।